জোয়ারের জলেই ধুয়ে গিয়েছে পায়ের ছাপ, বাঘের অবস্থান জানতে কালঘাম
বর্তমান | ১৮ জানুয়ারি ২০২৫
সংবাদদাতা, বারুইপুর: জোয়ারের জলে ধুয়ে মুছে গিয়েছে বাঘের পায়ের ছাপ। ফলে সে কোথায় কোথায় ঘুরে বেড়াচ্ছে তা আর জানা যাচ্ছে না। ভাটা আসার পর জল সরেছে। বাঘ কোথায়? এ জঙ্গলে সে আদৌ আছে কি? নাকি অন্যত্র চলে গিয়েছে? বনকর্মীরা এসব কিছুতেই বুঝে উঠতে পারছেন না। ফলে আতঙ্ক ক্রমে বাড়ছে মৈপীঠের বৈকুণ্ঠপুর নগেনাবাদ পাইকপাড়া হাটামারা অঞ্চলে। এর সঙ্গে দোসর হয়েছে লোডশেডিং। সন্ধ্যা নামলেই অন্ধকারে ডুবে যাচ্ছে এলাকা। তখন আরও ভয় বাড়ছে। গ্রামবাসীরা আতঙ্কিত, ক্ষুব্ধ।
গ্রামবাসীদের বক্তব্য, বাঘের পায়ের ছাপ যখন মিলেছে তখন বাঘ কাছেই আছে। তাকে অবিলম্বে খাঁচাবন্দি করার ব্যবস্থা করুক বনদপ্তর। বিদ্যুৎ যাতে ঠিকঠাক থাকে সেটাও নিশ্চিত করুক প্রশাসন। বনদপ্তরের এক আধিকারিক বলেন, ‘৩০০ মিটার লোকালয় সংলগ্ন জঙ্গল স্টিলের জাল দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে। আমরা বাঘের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত নই। নজরদারি চলছে। রাত পাহারার ব্যবস্থাও হয়েছে। জঙ্গল সংলগ্ন রাস্তায় আলোর ব্যবস্থাও হবে।’ বৈকুণ্ঠপুর পঞ্চায়েতের উপপ্রধান শঙ্কর দাস বলেন, ‘জামতলা বিদ্যুৎ অফিসকে বারবার বলা হয়েছে, বিদ্যুৎ সরবরাহ যেন ঠিকঠাক থাকে। অন্ধকারে ভয় আরও বাড়ছে।’
প্রসঙ্গত শুক্রবার দুপুরের পর ভাটার জল সরতেই টাইগার কুইক রেসপন্স টিম তল্লাশি শুরু করে। কিন্তু বাঘের পায়ের ছাপ দেখা যায়নি। এই এলাকায় গত বুধবার সকালেও গ্রামবাসীরা বাঘের উপস্থিতি টের পেয়েছিলেন। বনদপ্তর সূত্রেও জানা গিয়েছিল, বাঘের পায়ের ছাপ পাওয়া গিয়েছে। তারপর স্টিলের জাল দিয়ে ৩০০ মিটার জঙ্গল ও নদীর ধারের একদিক ঘিরে দেওয়া হয়। নদীর ধারের একদিকে শুধু জাল দেওয়া হয় যাতে বাঘ বেরিয়ে অন্য জায়গায় উঠতে পারে। এ নিয়ে দু’সপ্তাহের মধ্যে ছ’বার বাঘ মৈপীঠে হানা দিল। ৯ জানুয়ারি নগেনাবাদেই বাঘের আগমন হয়েছিল।
অন্যদিকে টানা দু’দিন বাঘের আতঙ্কে কাঁপছে গোটা গ্রাম। সন্ধ্যা নামতেই সবাই ঘরবন্দি। গৃহপালিত পশু ঘরের মধ্যে বেঁধে রেখেছে গৃহস্থ। কেউ রাস্তায় বেরচ্ছে না। মিতালি দাস নামে এক গৃহবধূ বলেন, ‘খুব আতঙ্কের মধ্যে থাকতে হচ্ছে। বাঘ মাগরি নদী পার হয়ে আজমলমারি ১১ নম্বর জঙ্গলে চলে গিয়েছে কি না বনদপ্তর বলতে পারছে না। এর মধ্যে বিকেলের পর টানা কয়েকঘণ্টা লোডশেডিং চলছে। খুবই ভয়ে আছি।’ মিনতি পাইক নামে এক গৃহবধূ বলেন, ‘দ্রুত খাঁচাবন্দি করা হোক। ভয়ে দরজা এঁটে থাকতে হচ্ছে। বিদ্যুৎ নিয়ে প্রশাসন অবিলম্বে ব্যবস্থা নিক।’