মনোরঞ্জন মিশ্র: রেডিও কলারহীন বাঘকে খাঁচাবন্দি করতে নাজেহাল অবস্থা বন দফতরের। পুরুলিয়ার বান্দোয়ানের রাইকা পাহাড় সংলগ্ন ভাঁড়ারি পাহাড়ের জঙ্গলকে ঘিরে ফেলা হল সুন্দরবনের ধাঁচে জাল দিয়ে। নতুন করে ভাঁড়ারি পাহাড়ের জঙ্গলে লাগানো হল আরও ১০ ট্র্যাপ ক্যামেরা। ছাগল, শুকোর দিয়ে পাতা হয়েছে ফাঁদ। রাইকা পাহাড়ের বিভিন্ন প্রান্তে বসানো হয়েছে ৩০ টিরও বেশি ট্রাপ ক্যামেরা, সেখানেও ফাঁদ পাতা হয়েছে। নজরদারি চালানো হচ্ছে নাইট ভিশন ড্রোন ক্যামেরার মাধ্যমে। ঘটনাস্থলে মোতায়েন রয়েছে ট্রাঙ্কুলাইজার টিম। জঙ্গল ছেড়ে ওই বাঘ বাইরে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করলে ব্যবহার করা হতে পারে ঘুম পাড়ানিগুলি। জঙ্গল লাগোয়া গ্রামগুলিতে মোতায়েন রয়েছে বনকর্মীদের একাধিক টিম। গ্রামবাসীদের সতর্ক করতে চলছে মাইকিং প্রচার।
গত পাঁচদিন ধরে কখনও বান্দোয়ানের রাইকা, কেশরা, যমুনাগোড়া, ভাঁড়ারি পাহাড়ের জঙ্গলে আবার কখনও মানবাজার ২ নম্বর নেকড়ে, বড়গোড়া-সহ বিভিন্ন এলাকায় ঘোরাফেরা করছে বাঘটি। শুধু মিলছে একটার পর একটা জঙ্গলে বাঘের পায়ের ছাপ। প্রতিদিনই নিজের অবস্থান পরিবর্তন করছে বাঘটি। বাঘের গতিবিধি জানতে হিমশিম খাচ্ছে ঝাড়খন্ড ও বাংলা দুই প্রান্তের বন দফতর। পুরুলিয়া ও ঝাড়গ্রামের বন দফতরের টিম, সুন্দরবন থেকে আসা বাঘ বিশেষজ্ঞরা, ঝাড়খণ্ডের বন দফতরের টিম একত্রিত হয়ে বাঘকে বাগে আনতে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে। একএক করে ঝাড়খন্ডে ১৩ দিন এবং পুরুলিয়ার বান্দোয়ান ও বোরোর একাধিক জঙ্গলে ৫ দিন পার করে ফেলল বাঘটি। এলাকায় তৈরি হয়েছে আতঙ্কের পরিবেশ। গত ২২ ডিসেম্বর বান্দোয়ানের এই রাইকা জঙ্গলেই আশ্রয় নিয়েছিল জিনাত। জিনাতের আতঙ্ক কাটতে না কাটতেই ফের বাঘের আতঙ্কে স্তব্ধ হয়ে পড়েছে স্বাভাবিক জনজীবন।
পুরুলিয়ার বন দফতর, সুন্দরবন টাইগার রিজার্ভের টিম, ঝাড়গ্রামের বন দপ্তর, ঝাড়খণ্ডের বন দপ্তর একত্রিত হয়ে বাঘকে বাগে আনার চেষ্টা চালালেও সমস্ত প্রচেষ্টা বিফলে যাচ্ছে। জঙ্গল লাগোয়া গ্রামগুলিতে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে।