সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আর কিছুক্ষণের প্রতীক্ষা। তারপরই শিয়ালদহের এডিজে (১) আদালতের বিচারক অনির্বাণ দাস আর জি কর ধর্ষণ ও খুন কাণ্ডে রায় ঘোষণা করবেন। ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়ের ভাগ্য নির্ধারণ। কী রায় দেন বিচারক, সেদিকে তাকিয়ে গোটা দেশ। সময় যত এগোচ্ছে, তত এই রায়দান ঘিরে বাড়ছে উত্তেজনা। এই মামলাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও সংবেদনশীল। শনিবার দুপুরে রায়দানের আগে কিংবা পরে যাতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে তাই বাড়ল আদালত চত্বরের নিরাপত্তা। গার্ডরেলে মুড়ে ফেলা হয়েছে গোটা আদালত চত্বর। ২০০ কনস্টেবল, ৩ জন ডিসি পদমর্যাদার আধিকারিক মোতায়েন করা হয়েছে। সঞ্জয়কে যে পথে প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগার থেকে আদালতে আনা হবে, ওই রাস্তায় নিরাপত্তাতেও বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে।
রায়দান রুদ্ধদ্বার কক্ষে হবে না। কিন্তু অযাচিত কোনও ব্যক্তি যাতে আদালত কক্ষে প্রবেশ না করতে পারে, তার জন্য পুলিশ কড়া ব্যবস্থা নিচ্ছে। এদিকে, এদিনই শিয়ালদহ আদালতে বিক্ষোভ দেখানোর কথা জুনিয়র ডক্টর ফ্রন্টের। শুক্রবার জুনিয়র ডক্টর ফ্রন্টের তরফ থেকে দেবাশিস হালদার জানিয়েছেন, শনিবার অভয়া কাণ্ডে শাস্তি ঘোষণা হতে পারে। সেটা মাথায় রেখেই দুপুর দুটো থেকে শিয়ালদহ কোর্টে একটা প্রতিবাদী জমায়েত করা হবে। একদিকে আর জি কর কাণ্ডে শাস্তির দাবি, অন্যদিকে শাস্তি ঘোষণার দিন প্রতিবাদী জমায়েত! জুনিয়র ডক্টর ফ্রন্টের আন্দোলনের রূপরেখা নিয়ে ধন্দে নাগরিক সমাজ। যাঁরা একসময় পথে নেমেছিলেন ফ্রন্টের জুনিয়র ডক্টরদের সঙ্গে। তবে কি আর জি কর কাণ্ডে শাস্তি চাইছে না জুনিয়র ডক্টর ফ্রন্ট? দেবাশিস হালদার জানিয়েছেন, “আমাদের প্রতিবাদী জমায়েত শাস্তির বিরুদ্ধে নয়। যার বিরুদ্ধে প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে অবশ্যই তার শাস্তি হোক। তবে আমরা জানতে চাই আর কারা কারা এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত, সেই প্রশ্ন তুলেই আমাদের প্রতিবাদী জমায়েত। শুধুমাত্র সঞ্জয় রায় সর্বোচ্চ শাস্তি পেলে আমাদের দাবি মিটবে না।”
উল্লেখ্য, গত বছরের ৯ আগস্ট আর জি করের চারতলায় সেমিনার রুম থেকে উদ্ধার হয় নির্যাতিতা তরুণী চিকিৎসকের দেহ। তাঁকে ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগে পরের দিন, ১০ আগস্ট কলকাতা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয় অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়। হাই কোর্টের নির্দেশে সিবিআই তদন্তভার গ্রহণ করে। ৬০ দিনের মধ্যেই গত ৯ জানুয়ারি শেষ হয় একমাত্র অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়ের বিরুদ্ধে বিচারপর্ব। সেদিনই শিয়ালদহে এডিজে (১) আদালতের বিচারক অনির্বাণ দাস ঘোষণা করেন, ১৮ জানুয়ারি মামলার রায়দান করবেন। আইনজীবীদের মতে, যেহেতু এই মামলাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও সংবেদনশীল, তাই শনিবার বিচারক ঘোষণা করতে পারেন, অভিযুক্ত সঞ্জয় রাই দোষী, নাকি নির্দোষ। শনিবার সঞ্জয়কে আদালতে হাজির করা হবে। বিচারক তাঁর রায় অভিযুক্তকে শোনাতে পারেন। অভিযুক্ত একমাত্র দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পরই বিচারক অন্য একটি দিন সাজা ঘোষণার জন্য নির্ধারিত করতে পারেন। সেই ক্ষেত্রে পরের সপ্তাহে অভিযুক্তকে তার সাজা শোনাতে পারেন বিচারক। তার আগে তিনি অভিযুক্তকে স্বপক্ষে কিছু বলার সুযোগও দিতে পারেন বলে জানিয়েছে আইনজীবী মহল।