২০১৯ সালে মাত্র ১৯ বছর বয়সে একের পর এক অপরাধে জড়িয়েছিল পুলিশের গুলিতে খতম হওয়া দুষ্কৃতী সাজ্জাক আলম। শনিবার পুলিশের এনকাউন্টারে তার মৃত্যুর পর স্বস্তিতে উত্তর দিনাজপুর জেলার করণদিঘির ছোট সোহার গ্রাম। ওই গ্রামেরই বাসিন্দা ছিল সাজ্জাক।
স্থানীয়দের দাবি, সাজ্জাকের বাবা আব্দুল মাজিদ কোনও কাজ করতেন না। মা মেহের বানু গৃহবধূ ছিলেন। করণদীঘির খিকরিটোলার বাসিন্দা সুবেশ দাসের পোলট্রি ফার্মে কাজ করত সাজ্জাক। এলাকাবাসীর কথায়, খুনের অভিযোগ ওঠার আগেও একাধিক কুকর্মের সঙ্গে যুক্ত ছিল সে। ২০১৯ সালে গোয়ালপোখর এলাকাতে ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠেছিল সাজ্জাকের বিরুদ্ধে। সেই সময়ে তার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগও দায়ের হয়। তখন সাজ্জাকের বয়স ১৯। সেই সময় থেকেই অপরাধের অলিগলি দিয়ে যাতায়াত শুরু করেছিল সাজ্জাক।
২০১৯ সালে দুর্গাপুজোর সময়ে নবমীর দিনে করণদীঘি বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকায় দোকানের মধ্যেই সুবেশ দাসকে গুলি করে খুন করা হয়। অভিযোগ ওঠে সাজ্জাকের বিরুদ্ধে। গ্রেপ্তার করা হয় তাকে। গত বুধবার ইসলামপুর মহকুমা আদালত থেকে প্রিজন ভ্যানে জেলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল সাজ্জাককে। কিন্তু সে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় এবং পালিয়ে যায়। তার ছোড়া গুলিতে জখম হন রায়গঞ্জ থানার অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব ইন্সপেক্টর নীলকান্ত সরকার ও কনস্টেবল দেবেন বৈশ্য। বিচারাধীন বন্দি সাজ্জাকের কাছে কোথা থেকে বন্দুক এল? তা নিয়ে ওঠে প্রশ্ন। এ দিকে তাকে ধরার জন্য ২ লক্ষের পুরস্কারও ঘোষণা করে পুলিশ।
শনিবার সকাল ৭টা নাগাদ সাজ্জাককে দেখতে পায় পুলিশ। তাকে ধরতে গেলে সে প্রথমে পুলিশকে লক্ষ্য করে ৩-৪ রাউন্ড গুলি ছোড়ে। এরপরেই পাল্টা গুলি ছোড়ে পুলিশ। ঘটনায় সে গুলিবিদ্ধ হয়। সাজ্জাককে জখম অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, বাংলাদেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিল সাজ্জাক।
এনকাউন্টারে সাজ্জাকের মৃত্যুর পরে স্বস্তিতে তার গ্রাম ছোট সোহার। গ্রামের বাসিন্দা মহম্মদ আখতার আবির বলেন, ‘আগে ওদের একবার গ্রাম থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ফের কিছু এলাকাবাসীর মদতে ওরা এসে এখানে বসবাস শুরু করে।’ তবে সাজ্জাকের পলাতক হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গ্রাম ছেড়েছিলেন তার পরিবারের সদস্যরাও। শনিবারও তাঁদের হদিশ মেলেনি। ছোট সোহার গ্রামের বাসিন্দাদের কথায়, ‘সাজ্জাকের লেখাপড়া কতদূর, তা কারও জানা নেই। তবে তার জন্য যে গ্রামের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছিল, সেই দাবি করেছেন এলাকাবাসী। মোটের উপর তার এনকাউন্টারের খবরে স্বস্তি ফেলছেন ছোট সোহার বাসিন্দারা।