• খোদ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যানের সই করা চিঠি ভুলে ভরা! চাঞ্চল্য বর্ধমানে
    প্রতিদিন | ১৮ জানুয়ারি ২০২৫
  • সৌরভ মাজি, বর্ধমান: ভুলে ভরা চিঠি। খোদ প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর করা চিঠিতে বানান থেকে ইংরেজি বাক্য গঠনে ভুল রয়েছে। এমনকী প্রাপকদের ঠিকানাতেও বানান ভুল। এমন কয়েকটি চিঠি প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল পড়েছে শিক্ষামহলে। পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের কর্মীদের দায়বদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নিয়েও অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন। ত্রুটি স্বীকার করে, সেসব সংশোধন করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান মধুসূদন ভট্টাচার্য।

    সম্প্রতি বর্ধমান জেলার বেশ কয়েকজন প্রাথমিক শিক্ষক উচ্চ প্রাথমিকে চাকরির সুযোগ পেয়েছেন। ফলে তাঁদের প্রাথমিক স্কুলের চাকরি থেকে পদত্যাগ করতে হচ্ছে। ইতিমধ্যেই সেই পদত্যাগপত্র জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদে জমা দিচ্ছেন তাঁরা। প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান সেই পদত্যাগপত্র গৃহীত হয়েছে। সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের চিঠি দিয়ে জানানো হচ্ছে। সেই চিঠি নিয়ে মধ্যশিক্ষা পর্ষদে জমা দিতে হবে সংশ্লিষ্ট শিক্ষককে। তবেই নতুন কাজে যোগ দিতে পারবেন তাঁরা। আর সেই চিঠিই ভুলে ভরা। যা নিয়ে চিন্তিত ওই শিক্ষকরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শিক্ষক বলেন, “বানান ভুল তো রয়েইছে। সেটা না হয় বাদই দিলাম। কিন্তু চিঠির মূল বয়ানটাই ভুল। আমি পদত্যাগের আবেদন করেছিলাম তা গৃহীত হয়েছে জানিয়ে মূল বয়ানে লেখা থাকবে। কিন্তু ইংরেজিতে যেটা লেখা হয়েছে, তার অর্থ কী হচ্ছে তাঁরাই জানেন।”

    ইংরেজিতে ওই চিঠির মূল‌ বয়ানে লেখা হয়েছে, “হি/শি ইজ হিয়ারবাই দ্যাট হিজ/হার প্রেয়ার ফর রেজিগনেশন…।” আবার চিঠির বয়ানে বাই (বিওয়াই)-কে লেখা হয়েছে বিটি। এমনকী চেয়ারম্যানের সই করা চিঠিতে ইংরেজিতে চেয়ারম্যান বানানটাও ভুল লেখা হয়েছে। ইতিমধ্যে এই চিঠির বিষয় জানাজানি হতেই শিক্ষা মহলে শোরগোল পড়েছে। শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চে’র পূর্ব বর্ধমান জেলা সম্পাদক সৌমেন্দ্র মোহন পাঁজা বলেন, “এমন ত্রুটি অনভিপ্রেত। এই চিঠিটি একজন শিক্ষকের কর্মজীবনের একটি বিশেষ রেকর্ড হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ। এহেন ত্রুটি নজরে আসার পর শিক্ষা দফতরের কর্তাব্যক্তিদের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে। পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের প্রদত্ত এমন চিঠিগুলি অনতিবিলম্বে সংশোধন করে দেওয়া উচিত।”

    চিঠিতে প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান সই থাকলেও তিনি সাধারণত বয়ান টাইপ করেন না। কর্মীরা বয়ান টাইপ করে প্রিন্ট করে দেন। তিনি হয়তো পুরোটা না পড়েই সরল বিশ্বাসে সইও করে দেন। ফলে ভুলটা তাঁর চোখেও পড়েনি। প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান তথা মেমারির বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য ভুলের কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “তাড়াহুড়োয় অনেক চিঠি সই করতে হয়। সব চিঠি পুরোটা পড়ে দেখাও হয়নি। আমাদের আরও সতর্ক থাকা উচিত ছিল। দ্রুত সংশোধনের ব্যবস্থা করা হবে।” পাশাপাশি, যে কর্মীরা টাইপ করেছেন তাঁরাই বা কীভাবে এমন ভুলে ভরা চিঠিতে তাঁকে দিয়ে সই করিয়েছেন, তা নিয়েও উদ্বিগ্ন চেয়ারম্যান। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে বলে তিনি জানান।
  • Link to this news (প্রতিদিন)