তিন লোকসভাই তৃণমূলের, মুর্শিদাবাদ সফরে এসে কী বার্তা দেবেন মুখ্যমন্ত্রী? চর্চায় নেতৃত্ব
প্রতিদিন | ১৮ জানুয়ারি ২০২৫
সাবিরুজ্জামান, লালবাগ: ঝটিকা সফরে সপ্তাহের প্রথম দিন সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) আসছেন মুর্শিদাবাদে। ওদিন তিনি ঐতিহাসিক মুর্শিদাবাদ শহরের নবাব বাহাদুর ইন্সটিটিউট ময়দানে সভা করবেন বলে খবর। মুখ্যমন্ত্রীর এই জেলা সফরকে ঘিরে প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক মহলে প্রস্তুতি তুঙ্গে। লোকসভা নির্বাচনে জেলার তিনটি আসনের তিনটিতেই শাসক দল তৃণমূল জয়লাভ করে। লোকসভা নির্বাচনের প্রচার বাদ দিলে জেলায় বিরোধী শূন্য করার পর মুখ্যমন্ত্রীর এই সফরকে ঘিরে জেলা নেতৃত্ব বেশ উৎফুল্ল। জেলা নেতাদের দাবি, মুখ্যমন্ত্রী সভামঞ্চ থেকে জেলার মানুষকে বেশ কিছু প্রকল্পে সহায়তা প্রদান করবেন।
শীতের মধ্যে গ্রাম বাংলার প্রত্যন্ত এলাকা থেকে সাধারণ মানুষ যাতে মুখ্যমন্ত্রীর সভায় উপস্থিত হতে পারেন, সে কথা ভেবে সময় দেওয়া হয়েছে বেলা ১টা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মুখ্যমন্ত্রীর এই সফরসূচি ঘোষণা হতেই জেলাজুড়ে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক তৎপরতা শুরু হয়। ওদিন সন্ধ্যায় মাঠ পরিদর্শনে যান জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্র-সহ জেলার একাধিক প্রশাসনিক কর্তা।
বহরমপুর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল সভাপতি অপূর্ব সরকার এবং চেয়ারম্যান রবিউল আলম চৌধুরি তড়িঘড়ি একটি চিঠি দিয়েছেন। ওই দিন জেলার সব স্তরের শাখা সংগঠনের নেতা-কর্মীকে উপস্থিত থাকতে হবে। সাধারণ মানুষজনও যাতে অধিক সংখ্যায় সঙ্গে হাজির হন, জেলা এবং ব্লক নেতৃত্বকে চিঠিতে এই বার্তা দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার নবাব বাহাদুর ইনস্টিটিউট ময়দানে দফায় দফায় জেলা প্রশাসনের পাশাপাশি পুলিশ প্রশাসনকে মাঠ পরিদর্শন করতে দেখা গিয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্ছিদ্র করতে এক পর্যায়ে মুর্শিদাবাদ পুরসভার চেয়ারম্যান ইন্দ্রজিৎ ধর, অপূর্ব সরকার সহ শাসকদলের জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করতে দেখা গিয়েছে মুর্শিদাবাদ পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার সূর্যপ্রতাপ যাদবকে। এই বিষয়ে জেলা তৃণমূল সভাপতি অপূর্ব সরকার বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর এই সফরে আমরা অত্যন্ত গর্বিত। তিনি জনকল্যাণ এবং মানুষের উন্নয়নে যেমন বেশ কিছু প্রকল্পের কথা ঘোষণা করবেন, তেমনই মানুষকে সহায়তা প্রদান করবেন।”
মুখ্যমন্ত্রীর সফরকে ঘিরে জেলা নেতৃত্ব যেমন উৎফুল্ল, তার পাশাপাশি উৎকন্ঠার মধ্যেও আছেন। কেন না সম্প্রতি নওদা, খড়গ্রাম ব্লকে বিধায়ক এবং ব্লক সভাপতির কোন্দল প্রকাশ্যে আসায় দলের মুখ পুড়েছে জেলাজুড়ে। আবার শাসক দলের নেতৃত্বের হাতে কান্দি ব্লক প্রশাসনের আহত হওয়ার ঘটনা জেলা নেতৃত্বকে ভাবিয়ে তুলেছে। সালার, সুতি, জঙ্গিপুর এবং ফারাক্কার গোষ্ঠী কোন্দলে জেরবার দল।
এই প্রসঙ্গে নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এক জেলা নেতৃত্বের মন্তব্য, “সামনে জেলা নেতৃত্বের একটা অংশ উপরে খোশমেজাজ দেখালেও ভিতরে ভিতরে ঘামছেন অনেকেই। মানুষকে সহায়তা প্রদানের মাঝেই কোন নেতাকে নেত্রী ধমক দেন, এখন সেটাই দেখার।” এদিকে তিনটি লোকসভা দলনেত্রীকে উপহার দেওয়ায় জেলার মানুষ আশায় বুক বেঁধেছেন। ফলে এই সফরে নেত্রী জেলার জন্য বড়সড় ঘোষণা করবেন বলে অনেকে মন্তব্য করেছেন।