• ‘গলায় রুদ্রাক্ষের মালা, অপরাধ করলে ছিঁড়ে যেত!’ দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পরই যুক্তি সঞ্জয়ের
    প্রতিদিন | ১৮ জানুয়ারি ২০২৫
  • অর্ণব আইচ: “গলায় রুদ্রাক্ষের মালা আছে। এই মালা পরে অপরাধ করব?” শিয়ালদহ আদালতে দোষী সাব্যস্ত হতেই এমনই ‘আজব’ দাবি আর জি কর কাণ্ডের একমাত্র দোষী সঞ্জয় রায়ের। সঙ্গে তার যুক্তি, “আমি যদি এই অপরাধ করতাম তাহলে রুদ্রাক্ষের মালা ছিঁড়ে পড়ে যেত।” কিন্তু ঘটনাস্থল থেকে সঞ্জয়ের স্রেফ ছেঁড়া ব্লুটুথ ইয়ার ফোন উদ্ধার হয়েছিল।

    শনিবার শিয়ালদহ আদালতের ২১১ নম্বর ঘরে বিচারক অনির্বাণ দাসের ভরা এজলাসে দোষী সাব্যস্ত হয় সঞ্জয়। এজলাসে তাকে দাঁড় করিয়ে অভিযোগের খতিয়ান পড়ে শোনান বিচারক। বলেন, “আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগ, আপনি ন তারিখ ভোরের দিকে এক মহিলা চিকিৎসার উপর আক্রমণ করেন। তাঁর গলা চেপে ধরেন। মুখ চেপে ধরেন। তিনি মারা যান। আপনি যৌন নির্যাতন করেছেন।” এরপর সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে প্রয়োগ করা ধারাগুলিও পড়ে শোনান বিচারক। জানান, “বিএনএসের ৬৪, ৬৬, ১০৩- ১-এ ধারায় আপনার বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “গৃহীত সাক্ষ্য এবং সিবিআই আইনজীবীরা যা তথ্য প্রমাণ নিয়ে এসেছেন, তাতে আপনার অপরাধ প্রমাণিত। আপনাকে দোষী সাব্যস্ত করা হল। ধর্ষণের অপরাধে সর্বোচ্চ ১০ বছরের জেল  বা তার বেশিদিনের সাজাও হতে পারে। আপনার আক্রমণে তাঁর মৃত্যু হয়। ৬৬ ধারায অনুযায়ী ২৫ বছর বা তার বেশি অর্থাৎ যাবজ্জীবন পর্যন্ত সাজা হতে পারে। মনে রাখতে হবে, যাবজ্জীবন মানে কিন্তু মৃত্যু পর্যন্ত আপনাকে জেলে থাকতে হবে। যেভাবে আপনি গলা চেপে ধরে খুন করেছেন তাতে মৃত্যুদণ্ড অথবা যাবজ্জীবন কারাদন্ডেও আপনি দণ্ডিত হতে পারেন।”

    এরপরই কাঠগড়ায় চিৎকার করে ওঠে সঞ্জয়। বলে, “আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে। আমার গলায় রুদ্রাক্ষের মালা আছে। রুদ্রাক্ষের মালা নিয়ে এই অপরাধ করব!” তার আরও যুক্তি, “আমি যদি এই অপরাধ করতাম তাহলে রুদ্রাক্ষের মালা ছিড়ে পড়ে যেত। স্যার আপনি বুঝতে পারছেন নিশ্চয়ই যে আমাকে পুরো ফাঁসানো হচ্ছে।” যদিও তার এই যুক্তিকে গুরুত্ব দিয়ে নারাজ সিবিআইয়ের আইনজীবী পার্থসারথী দত্ত। বলেন “সঞ্জয়ের কথার কোনও ভিত্তি নেই। তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে।” এদিকে শিয়ালদহ আদালতের বিচারকও জানিয়েছেন সোমবার সঞ্জয়ের কথা শুনবেন। ওইদিনই আর জি কর কাণ্ডের সাজা ঘোষণা।
  • Link to this news (প্রতিদিন)