কংগ্রেসকে সমর্থন নিয়ে দ্বিমত, সিপিএম কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকের প্রথম দিনই দ্বৈরথে কেরল-বাংলা লবি
প্রতিদিন | ১৮ জানুয়ারি ২০২৫
রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: কংগ্রেস নিয়ে অবস্থান কী হবে? এই প্রশ্নে দ্বিধাবিভক্ত সিপিএম। নিউটাউনে শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির তিনদিনের বৈঠকের প্রথম দিনেই কংগ্রেস সম্পর্কে কড়া মনোভাব কেরল লবির। অন্যদিকে, কংগ্রেস সম্পর্কে কোনও কথা না বলে কার্যত নরম মনোভাব দেখাল বঙ্গ সিপিএম। শুক্রবার বাংলায় সিপিএমের তরফে শ্রীদীপ ভট্টাচার্য বলেছেন, বিজেপি বিরোধিতা তীব্র রাখার কথাই হবে পার্টি কংগ্রেসের রাজনৈতিক লাইন। ফলে কংগ্রেস সম্পর্কে কড়া অবস্থান একসময়ে নিয়েছিলেন পার্টির প্রাক্তন সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাট। তাঁর লাইন ছিল বিজেপি ও কংগ্রেসের থেকে সমদূরত্ব। পরে সীতারাম ইয়েচুরির জমানায় কংগ্রেস সম্পর্কে নরম মনোভাব নেয় পার্টি। কংগ্রেসের সঙ্গে জোট গঠন হয় সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে। বর্তমানে ইয়েচুরি জীবিত নেই। সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির কো-অর্ডিনেটর এখন প্রকাশ কারাট। কেরলের নেতৃত্ব এদিন কংগ্রেস সম্পর্কে বিরোধিতার মনোভাব প্রকাশ করেছে।
কেরলে সিপিএমের বিরুদ্ধে লড়াই কংগ্রেসের। সেই প্রেক্ষিতে কংগ্রেসের প্রশ্নে এদিন বাংলা ও কেরল সিপিএমের মধ্যে দ্বিমত দেখা দিয়েছে বলে সূত্রের খবর। কেরলের নেতাদের কথায়, কংগ্রেস জোট ধর্ম বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভঙ্গ করে। তাছাড়া কংগ্রেস নরম হিন্দুত্বপন্থী বলেও মনে করছে কেরল সিপিএম। সীতারাম ছিলেন কংগ্রেসের প্রতি নরম। আর কারাট বরাবর কট্টরপন্থী। ফলে সীতারামের প্রয়াণের পর কংগ্রেস সম্পর্কে কড়া মনোভাব নিয়ে সিপিএম কারাট লাইনে ফিরবে কিনা, তা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে।
যদিও পার্টির একাংশের বক্তব্য, বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে কারাট হয়ত পুরনো অবস্থানে থাকবেন না। কেরলের নেতারা বলছেন, কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে বাম ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলি ও বামপন্থী শক্তিকে একজোট করা হোক। কারাট এবার মধ্যবর্তী কোনও অবস্থান নিয়ে পার্টি কংগ্রেসের রাজনৈতিক খসড়া চূড়ান্ত করবেন বলে খবর। এদিকে, এই প্রথম নির্বাচনী কৌশলের পর্যালোচনা রিপোর্ট প্রকাশ্যে আনছে সিপিএম। নিউটাউনে চলা সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে পার্টি কংগ্রেসের প্রাক্কালে রাজনৈতিক রণকৌশল লাইন সংক্রান্ত খসড়া চূড়ান্ত হবে। পাশাপাশি, গত পার্টি কংগ্রেস থেকে এই পর্যন্ত যে যে নির্বাচনী কৌশল নেওয়া হয়েছিল, তা নিয়ে পর্যালোচনা ও সংগঠনিক অবস্থা কী রয়েছে, তারও পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট প্রকাশ্যে আনা হবে।
সিপিএমের পরবর্তী পার্টি কংগ্রেস হবে এপ্রিলে তামিলনাড়ুর মাদুরাইয়ে। কলকাতার তিনদিনের বৈঠক থেকেই রাজনৈতিক খসড়া গৃহীত হবে। তারপর ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহের আগেই সর্বসমক্ষে আনবে সিপিএম। যেখানে দলীয় সদস্য থেকে সাধারণ মানুষ সংশোধনী পাঠাতে পারেন। শেষ পর্যন্ত তা গৃহীত হবে পার্টি কংগ্রেসে। পরবর্তী পার্টি কংগ্রেস থেকে পরের তিন বছরের ‘লাইন’ ঠিক করবে সিপিএম। কিন্তু খসড়া গৃহীত হবে এই বৈঠকেই। পেশ করার পর আলোচনা শুরু হয়েছে।