আরজি করে ধর্ষণ-খুনের মামলায় সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে শনিবার দোষী সাব্যস্ত করল শিয়ালদহ আদালত। বিচারক অনির্বাণ দাস জানিয়েছেন, সাক্ষ্যগ্রহণ এবং সিবিআই আদালতে যে নথি-তথ্য দিয়েছে, তার ভিত্তিতে প্রমাণিত, সঞ্জয় অপরাধী। তাই তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করা হল। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা আদালতে চার্জশিট দিয়ে জানিয়েছিল, সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে তারা মোট ১১টি প্রমাণ পেয়েছে। সংগৃহীত বয়ান, ভিডিয়ো এবং ফরেন্সিক বা সায়েন্টিফিক রিপোর্টের ভিত্তিতে সেই সব প্রমাণ মিলেছে।
সিবিআই চার্জশিটে যে ১১টি প্রমাণ দিয়েছিল, তা হল—
যদিও শনিবার সঞ্জয় আদালতে দাবি করেছেন, তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে। বিচারককে তিনি জানান, তিনি নির্দোষ। তবে বিচারক তাঁর কথা শোনেননি। তিনি বলেন, ‘‘সব সাক্ষীকে জেরা করে এবং সিবিআইয়ের তথ্যের ভিত্তিতে যা মনে হচ্ছে, তাতে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। শাস্তি আপনাকে পেতে হবে।’’
গত ৯ অগস্ট আরজি করের সেমিনার হল থেকে চিকিৎসকের দেহ উদ্ধারের পরের দিনই সঞ্জয়কে গ্রেফতার করেছিল কলকাতা পুলিশ। কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে তদন্তের ভার পায় সিবিআই। সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে চার্জশিট তাঁর একমাত্র অভিযুক্ত হিসাবেই বর্ণনা করেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। দু’মাসের বেশি সময় ধরে বিচারপ্রক্রিয়ায় চলার পর শনিবার রায় ঘোষণা করতে গিয়ে বিচারক সঞ্জয়ের উদ্দেশে বলেন, ‘‘আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগ, আপনি ৯ অগস্ট ভোরের দিকে আরজি কর হাসপাতালে ঢুকেছিলেন। সেখানে এ দিক-ও দিক ঘোরাঘুরি করার পর এক মহিলা চিকিৎসককে আক্রমণ করেন। তাঁর মুখ চেপে ধরেন। গলা চেপে ধরেন। তাতে উনি মারা যান। আপনি যৌন হেনস্থাও করেন। যে ভাবে আপনি গলা চেপে ধরে হত্যা করেছেন, তাতে যাবজ্জীবন বা মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত হতে পারে।’’
বিচারক রায় দেওয়ার পরেই আদালতে হাতজোড় করে ‘স্যর’ ‘স্যর’ বলে চিৎকার করতে থাকেন সঞ্জয়। বলেন, ‘‘আপনি তো দোষী সাব্যস্ত করে দিলেন। আমি গরিব। আমি এই কাজ করিনি। যারা করেছে, তাদের কেন ছাড়া হচ্ছে?’’ তার পর আদালত থেকে একপ্রকার জোর করেই বার করে নিয়ে যাওয়া হয় সঞ্জয়কে। সোমবার আরজি করে ধর্ষণ-খুনের মামলায় সাজা ঘোষণা করবেন বিচারক।