• কোনও রুদ্রাক্ষ উদ্ধার হয়নি সঞ্জয়ের কাছ থেকে, জানিয়ে দিল সিবিআই
    প্রতিদিন | ১৯ জানুয়ারি ২০২৫
  • স্টাফ রিপোর্টার: রুদ্রাক্ষের মালা-কে অস্ত্র করে আদালতে নিজেকে নির্দোষ বলে দেখানোর চেষ্টা ভেস্তে দিল সিবিআই। এমন কোনও মালা-র কথা উড়িয়ে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আইনজীবী পার্থসারথি দত্ত।

    শনিবার আর জি কর হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় তখন সবে সঞ্জয়কে দোষী সাব‌্যস্ত করেছে শিয়ালদহ এডিজে আদালত। কিন্তু নিজেকে ‘দোষী’ বলে মানতে নারাজ সঞ্জয় শেষ মুহূর্তে ‘রুদ্রাক্ষ জড়িয়ে’ বাঁচার চেষ্টা করে। কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে এদিনও নিজের স্বপক্ষে বিচারককে বলতে শুরু করে সে। কথা বলতে বলতে একবার কেঁদেও ফেলে। এমনকী, কাঠগড়া ছেড়ে বেরতেও রাজি হয়নি সে। তাকে অনেকটা জোর করেই আদালত কক্ষের বাইরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন পুলিশকর্মীরা। তখন সঞ্জয়ের সঙ্গে পুলিশকর্মীদের রীতিমতো ধ্বস্তাধস্তিও হয়।

    শনিবার দুপুর সোয়া একটা নাগাদ প্রেসিডেন্সি জেল থেকে সঞ্জয়কে শিয়ালদহ আদালতে নিয়ে আসা হয়। দুপুর আড়াইটে নাগাদ লক আপ থেকে সরাসরি কাঠগড়ায় তোলা হয়। বিচারক তাকে বলেন, ‘‘সোমবার আপনার ও আপনার উকিলবাবুর কথা শুনব।’’ তখনই চিৎকার করে সঞ্জয় বলে, ‘‘আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে। আমার গলায় রুদ্রাক্ষের মালা আছে। এই মালা নিয়ে এই অপরাধ করব? এ ছাড়াও আমি ওখানে কিছু করলে রুদ্রাক্ষের মালা ছিঁড়ে পড়ে যেত। আমাকে পুরো ফাঁসানো হচ্ছে। স‌্যার, আপনি বুঝতে পারছেন যে, আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে।’’ কিন্তু পরে রুদ্রাক্ষের প্রসঙ্গে সিবিআইয়ের আইনজীবী পার্থসারথি দত্ত বলেন, ‘‘সঞ্জয়ের কাছ থেকে কোনও রুদ্রাক্ষ উদ্ধার হয়নি।’’ নির্যাতিতার আইনজীবী অমর্ত‌্য দে, রাজদীপ হালদার ও শৌভিক ঘোষ জানান, আদালতে নিজের বক্তব‌্য পেশ করার সময় সঞ্জয় এই দাবি করেছিল। কিন্তু তথ‌্য ও প্রমাণের অভাবে তা গৃহীত হয়নি।

    এদিন বিচারক সঞ্জয়কে বলেন, ‘‘সব সাক্ষীদের জেরা করে ও সিবিআইয়ের তথ্যের ভিত্তিতে যা মনে হয়েছে, তাতেই আপনাকে দোষী সাব‌্যস্ত করা হয়েছে।’’ বিচারক আরও বলেন, ‘‘শাস্তি আপনাকে পেতে হবে। কী শাস্তি হবে, তা সোমবার জানানো হবে। সোমবার আপনার কথাও শুনব।’’ সঞ্জয় ‘‘স‌্যার, স‌্যার’’ বলে কিছু বলার চেষ্টা করলে বিচারক বলেন, ‘‘সোমবার শুনব।’’ সঞ্জয় কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে বিচারককে বলেন, ‘‘আপনি আমায় দোষী সাব‌্যস্ত করে দিলেন।’’ এর পর হাতজোড় করে সঞ্জয় বলে, ‘‘আমি গরীব। আমি এই কাজ করিনি। যারা করেছে, তাদের কেন ছাড়া হচ্ছে? এত বড় আইপিএস, তিনিও এই কথা বলেছেন।’’

    এরপরই পুলিশ ‘দোষী’ সঞ্জয়কে কাঠগড়া থেকে নামাতে যায়। তখনই বাধা দেয় সঞ্জয়। সে কাঠগড়া আঁকড়ে থাকে। কিছুতেই নামতে চায় না কাঠগড়া থেকে। তখন পুলিশকর্মীরা কিছুটা জোর করে তাকে নামাতে গেলে সঞ্জয় পুলিশকর্মীদের সঙ্গে ধ্বস্তাধস্তি শুরু করে। যখন তাকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, তখনও সে বলতে থাকে, ‘‘আমায় ফাঁসানো হচ্ছে।’’
  • Link to this news (প্রতিদিন)