সিবিআইয়ের চার্জশিটে সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে ১১ প্রমাণ, তদন্তকারীদের ‘অকাট্য’ যুক্তি কী কী?
প্রতিদিন | ১৯ জানুয়ারি ২০২৫
অর্ণব আইচ: ১৬২ দিনে মিলল বিচার। সিবিআইয়ের চার্জশিট এবং সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে দোষী সাব্যস্ত হল সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়। তবু শনিবারও কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে বারবার নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করেছে সঞ্জয়। যদিও তথ্যপ্রমাণ সবই তার বিরুদ্ধে। চার্জশিটে ১১ দফা প্রমাণ হাজির করেছে সিবিআই। যার উপর ভিত্তি করে এই রায়দান।
এদিন শিয়ালদহ আদালতের বিচার অনির্বাণ দাস বলেন, ” সিবিআই আইনজীবীরা যা তথ্য প্রমাণ নিয়ে এসেছেন তাতে আপনার অপরাধ প্রমাণিত আপনাকে দোষী সাব্যস্ত করা হল।” সিবিআই চার্জশিটে ১১ দফা প্রমাণ দাখিল করেছিল। কী কী তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে দোষী প্রমাণিত হল সঞ্জয় রায়?
১. সিসিটিভি ফুটেজ: আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চারতলায় সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছিল, ৯ আগস্ট ভোরে চারতলায় গিয়েছিল সঞ্জয়। সেটাই তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুনের মূল ঘটনাস্থল।
২. টাওয়ার লোকেশন: সঞ্জয়ের মোবাইল টাওয়ার খতিয়ে দেখে বোঝা যায় ৮ তারিখ অর্থাৎ ঘটনার দিন রাতে হাসপাতালেই ছিল সঞ্জয়।
৪. রক্তের দাগ: পুলিশ বারাক থেকে উদ্ধার হওয়া সঞ্জয়ের প্যান্ট ও জুতোয় তরুণী চিকিৎসকের রক্তের দাগ মেলে।
৫. চুলের নমুনা: ‘অভয়া’র পোশাক ও ঘটনাস্থল থেকে ছোট ছোট চুল উদ্ধার হয়। যার সঙ্গে সঞ্জয়ের চুলের নমুনা মিলে গিয়েছে।
৬. ব্লটুথ ইয়ারফোন: ঘটনাস্থল থেকে একটি ব্লটুথ ইয়ারফোন উদ্ধার হয়। যা সঞ্জয়ের ফোনের সঙ্গে যুক্ত ছিল। সিসিটিভি ফুটেজও দেখা গিয়েছে, ওই রাতে সঞ্জয় যখন হাসপাতালে ঢোকে তখন তার গলায় ওই ইয়ারফোনটি ঝুলছিল।
৭. সঞ্জয়ের শরীরে ক্ষতচিহ্ন: ১০ আগস্ট গ্রেপ্তারির পর মেডিক্যাল পরীক্ষায় দেখা যায় অভিযুক্তর দেহে তৈরি হওয়া ক্ষত ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা আগে তৈরি হওয়া। অর্থাৎ ৮ বা ৯ আগস্ট তৈরি হয়েছিল।
৮. প্রতিরোধেই ক্ষতচিহ্ন: তরুণী চিকিৎসকের প্রতিরোধেই তৈরি হয়েছিল ক্ষতচিহ্ন।
৯. মেডিক্যাল পরীক্ষা: সঞ্জয় সঙ্গমে সক্ষম, এমনই প্রমাণ মিলেছে।
১০. অন্তর্বাসের সেলাই: ‘অন্তর্বাসে’র সেলাই যেভাবে ছিঁড়ে গিয়েছে তা থেকে স্পষ্ট তা জোর করে খোলা হয়েছে।
১১. কুর্তির ছেঁড়া অংশ: কোমরের দুপাশের অংশ ছেঁড়া। যা টানাহেঁচড়ার ফলেই ছিঁড়েছিল।
এই সমস্ত প্রমাণের উপর ভিত্তি করেই দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে সঞ্জয়কে। যদিও সঞ্জয়ের মহিলা আইনজীবী কবিতা সরকার দাবি করেন, “আমার মক্কেলের বিরুদ্ধে সরাসরি কোনও প্রমাণ মেলেনি। সবটাই পারিপার্শ্বিক প্রমাণ। যা দিয়ে কাউকে দোষী সাব্যস্ত করা কঠিন।” সোমবার সাজা ঘোষণা করবে শিয়ালদহ আদালত।