‘ভিসেরা রিপোর্ট এখনও আসেনি, কী করে…’ রায়দানের পর বিস্ফোরক সঞ্জয়ের আইনজীবী
প্রতিদিন | ১৯ জানুয়ারি ২০২৫
রমেন দাস: আর জি কর কাণ্ডে সঞ্জয় রায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ার দিনই ভিসেরা রিপোর্ট নিয়ে বিস্ফোরক দাবি করলেন তার আইনজীবী কবিতা সরকার। বললেন, “এখনও ভিসেরা রিপোর্ট আমাদের সামনে আসেনি। রিপোর্ট পজিটিভ হলে প্রমাণিত হবে চিকিৎসক আগেই খুন হয়েছিলেন। আমার মক্কেল নির্দোষ।” একইসঙ্গে তাঁর মক্কেলকে ফাঁসানো হয়েছে বলেও দাবি করেছেন কবিতাদেবী। কিন্তু সঞ্জয় তদন্তে সহযোগিতা না করায় রহস্য ‘ফাঁস’ করা সম্ভব হল না। আক্ষেপ লিগাল এইড সেলের আইনজীবীর।
শনিবার দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে সঞ্জয় দাবি করে, “আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে। আমার গলায় রুদ্রাক্ষের মালা আছে। রুদ্রাক্ষের মালা নিয়ে এই অপরাধ করব! আমি যদি এই অপরাধ করতাম তাহলে রুদ্রাক্ষের মালা ছিঁড়ে পড়ে যেত। স্যার আপনি বুঝতে পারছেন নিশ্চয়ই যে আমাকে পুরো ফাঁসানো হচ্ছে।” একই যুক্তি শোনা গিয়েছে কবিতাদেবীর গলাতেও। তাঁরও দাবি, “ও যদি এটা করত তাহলে তো ঘটনাস্থলে রুদ্রাক্ষ ছড়ানো ছিটানো পাওয়া যেত।” মহিলা আইনজীবী আরও দাবি করেন, “আমার মক্কেলের বিরুদ্ধে সরাসরি কোনও প্রমাণ মেলেনি। সবটাই পারিপার্শ্বিক প্রমাণ। যা দিয়ে কাউকে দোষী সাব্যস্ত করা কঠিন।”
ভিসেরা রিপোর্ট নিয়েও বিস্ফোরক দাবি করেছেন কবিতাদেবী। বলছেন, “এখনও ভিসেরা রিপোর্ট আসেনি। সেটা পজিটিভ এলে দেখতে হবে যে চারজন চিকিৎসক মেয়েটির সঙ্গে ছিল, তাঁরা ওঁকে কী খাইয়েছিল? কারণ, রিপোর্ট পজিটিভ এলে প্রমাণ হবে, মেয়েটির মৃত্যু আগেই হয়েছিল। আমার মক্কেল দোষী নয়।” তবে কীভাবে নিপল সোয়াব সঞ্জয়ের সঙ্গে মিলে গেল, তা নিয়ে খোলসা করে কিছু বলতে পারেননি আইনজীবী।
এদিন রায়দানের আগে আদালতের লকআপে সঞ্জয়ের সঙ্গে দেখা করেছিলেন তাঁর আইনজীবী। সেখানে সঞ্জয় দাবি করে, “আমি তো গরিব। পয়সা নেই। আমার এত প্রতিপত্তি নেই। একটা ফোন কল করে আমাকে ফাঁসিয়ে দেওয়া হল।” এই দাবির পর স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন ওঠে, কে ফোন করেছিল সঞ্জয়কে? কে ফাঁসালো তাকে? কবিতা সরকারের দাবি, “কলকাতা পুলিশের ওয়েলফেয়ার সেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত অনুপ দত্ত ফোন করে ডেকেছিল সঞ্জয়কে। ঘটনার দিনই, সে ফার্স্ট টাইম থার্ড ফ্লোরে গেছিল। সিসিটিভি ফুটেজে তার হাবভাব দেখে সে বোঝা গিয়েছে।” একইসঙ্গে লিগাল সেলেরও কিছু গাফিলতি রয়েছে বলে আক্ষেপ করেছেন কবিতা সরকার। বলেছেন, “আমরা কোনও ডিফেন্স সাক্ষ্য আনিনি। আরও অনেক কাজ পুঙ্খানুপুঙ্খ করতে পারিনি। উচ্চ আদালতে গেলে সেগুলো করা যেতে পারে।” কিন্তু সঞ্জয় আইনজীবীর সঙ্গে সহযোগিতা করছে না বলেই জানিয়েছেন কবিতা সরকার। বারবার নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করলেও কারও নাম প্রকাশ করছে না সঞ্জয়।