বহরমপুরে কিউআর স্ক্যান করে টাকা দেওয়ার ভুয়ো নোটিফিকেশন, ধৃত ২
বর্তমান | ১৯ জানুয়ারি ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, বহরমপুর: এখনকার দিনে দোকানে কেনাকাটা করে ইউপিআই পেমেন্ট করতেই বহু মানুষ পছন্দ করেন। ব্যবসায়ীরাও এতেই অভ্যস্ত। তাই ক্রেতারা নিজেদের মোবাইলের ইউপিআই অ্যাপে আসা ‘পেমেন্ট সাকসেসফুল’ নোটিফিকেশন দেখালেই তাঁরা নিশ্চিন্ত হয়ে যান। নিজেদের মোবাইলে সঙ্গে সঙ্গে টাকা ঢোকার মেসেজ না এলেও বিশেষ চিন্তা করেন না। কারণ প্রায়ই ব্যাঙ্কের সার্ভারে সমস্যা থাকলে দেরিতে মেসেজ ঢোকে। কিন্তু এই বিশ্বাসকেই হাতিয়ার করে প্রতারণার অভিযোগে দুই যুবক গ্রেপ্তার হল। শুক্রবার বিকেলে বহরমপুরে এঘটনায় পুলিস তন্ময় বর্ধন ও আয়ুষ দাস নামে দুই যুবককে গ্রেপ্তার করেছে। শনিবার তাদের বহরমপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন।পুলিস জানিয়েছে, সদ্য যৌবনে পা দেওয়া এই যুবকদের বিভিন্ন শৌখিন জিনিসের চাহিদা ছিল। কিন্তু হাতে টাকা না থাকায় এভাবে প্রতারণার ফন্দি এঁটেছিল তারা। মোবাইল ঘেঁটে টেলিগ্রামের একটি গ্রুপ থেকে তারা শিখেছে, কীভাবে এই অনলাইন পেমেন্ট সিস্টেমকে ব্যবহার করে প্রতারণা করা যায়।
কীভাবে হতো এই প্রতারণা? পুলিস সূত্রে খবর, একটি অনলাইন অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে তারা এই প্রতারণা করত। এজন্য তারা নিজেদের এলাকা ছেড়ে অন্য এলাকায় গিয়ে দোকান থেকে ইচ্ছেমতো জিনিস কেনে। তারপর ওই অনলাইন অ্যাপ্লিকেশনের সাহায্যে দোকানের কিউআর কোড স্ক্যান করে। স্ক্যান করতেই ওই অ্যাপ্লিকেশন থেকে দোকানদারের নাম সহ ‘পেমেন্ট সাকসেসফুল’ নোটিফিকেশন প্রতারকদের মোবাইলে দেখিয়ে দেয়। সেই মেসেজ তারা দোকানদারকে দেখিয়ে দেয়। যেসব দোকানে ভিড় থাকে, সেখানে গিয়ে এভাবেই এই যুবকরা প্রতারণা করত।
দুই সপ্তাহ আগে, বহরমপুরের মোহনা বাসস্ট্যান্ড লাগোয়া একটি দোকানে গিয়ে এরা প্রায় ৩৫০টাকার জিনিসপত্র কেনে। একই কায়দায় টাকা না দিয়েই চলে আসে। কিন্তু প্রতারকদের মোবাইলে ‘পেমেন্ট সাকসেসফুল’ দেখালেও তাঁর অ্যাকাউন্টে যে টাকা ঢোকেনি, সেটা ওই ব্যবসায়ী মনে রেখে দেন। ফের শুক্রবার বিকেলে ওই দুই যুবক একই দোকানে গিয়ে কেনাকাটা করে। বিল হয় প্রায় তিনহাজার টাকা। এবারও তারা ওই ব্যবসায়ীকে একই কায়দায় বোকা বানানোর চেষ্টা করে। কিন্তু ‘পেমেন্ট সাকসেকফুল’ নোটিফিকেশন দেখানোর পর বেশ কিছুক্ষণ কেটে গেলেও অ্যাকাউন্টে টাকা না ঢোকায় দোকানদার ওই যুবকদের দাঁড় করিয়ে রাখেন। একসময় তারা পালানোর চেষ্টা করলে দোকানদার ধাওয়া করে ধরে ফেলেন। খবর পেয়ে বহরমপুর থানার পুলিস গিয়ে ওই যুবকদের গ্রেপ্তার করে।
বহরমপুর থানার আইসি উদয়শঙ্কর ঘোষ বলেন, নতুন কায়দায় প্রতারণা শুরু করেছিল এই দুই যুবক। শহরের বেশ কিছু জায়গায় এরা এভাবেই প্রতারণা করেছে।
ধৃতদের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। এরা একটি নির্দিষ্ট ভুয়ো অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করত। এবিষয়ে ব্যবসায়ীদের সচেতন করা হবে।