• করিডর সহ পরিকাঠামো নির্মাণে ‘কর্ণাটক মডেল’, হাতির হানায় মৃত্যু ঠেকাতে উন্মুক্ত শৌচ বিরোধী প্রচারে রাজ্য সরকার
    বর্তমান | ১৯ জানুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: উন্মুক্ত শৌচ মুক্ত হয়েছে বাংলা। বাড়ি বাড়ি শৌচাগার নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে বাংলার প্রশংসা করতে বাধ্য হয়েছে মোদি সরকারও। কিন্তু বাড়িতে শৌচাগার থাকা সত্ত্বেও উন্মুক্ত স্থানে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেওয়ার পুরনো অভ্যাস ছাড়তে নারাজ অনেকে। তাঁরা এখনও খোলা জায়গাতেই শৌচকর্ম করে চলেছেন সকাল-বিকেল। মূলত বনাঞ্চল ও সংলগ্ন এলাকাগুলিতে এই সমস্যা তুলনায় বেশি। স্রেফ এই কারণে হাতির হানায় মৃত্যু হচ্ছে অনেকের। সম্প্রতি হাতির হানায় মৃত্যুর একাধিক ঘটনা পর্যালোচনার পরে এমনই মনে করছে প্রশাসনিক মহল। তাই সংশ্লিষ্ট জেলাগুলিকে উন্মুক্ত জায়গায় শৌচকর্ম বিরোধী অভিযান জোরদার করতে বলা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। 


    কেন্দ্রের স্বচ্ছ ভারত মিশন এবং এ রাজ্যে নির্মল বাংলা মিশন-এর অন্যতম লক্ষ্যই হল উন্মুক্ত জায়গায় মলত্যাগ ও সেই কারণে তৈরি হওয়া যাবতীয় সমস্যায় ইতি টানা। সেই লক্ষ্যে দেশের অনেক রাজ্যের থেকে এগিয়ে বাংলা। কিন্তু তারপরও উন্মুক্ত জায়গায় প্রাতঃকৃত্য করতে গিয়ে হাতির হানার মুখে পড়ার ঘটনা ঘটছে। এই পরিস্থিতিতে জীবনহানি রুখতে সচেতনতা বৃদ্ধিই একমাত্র উপায় বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। তাই যেসব এলাকায় এই ধরনের ঘটনা বেশি ধরা পড়েছে, সেখানে প্রচার জোরালো করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 


    সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি হাতির তাণ্ডব ঠেকাতে পরিকাঠামো উন্নয়নের ক্ষেত্রেও রাজ্য সরকার বিশেষ উদ্যোগ নিচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে কর্ণাটক এবং কেরল অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। মূলত কর্ণাটক মডেল মাথায় রেখে এরাজ্যে হাতির হানা সংক্রান্ত সমস্যায় রাশ টানতে মরিয়া নবান্ন। উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে সাতটি এলিফ্যান্ট করিডর তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। এক-একটি ৪০০ মিটার চওড়া হবে এবং দৈর্ঘ্য হবে সাত থেকে আট কিলোমিটার। সেখানে হাতিদের আকৃষ্ট করার জন্য বিশেষ ঘাস বসানো হবে। পানীয় জলের জন্য পুকুরও কেটে দেওয়া হবে এই করিডরের মধ্যে। মূল লক্ষ্য হল, কোনও প্রয়োজনে হাতির দল যেন গ্রামে না ঢুকে পড়ে এবং তারা যেন ওই করিডর দিয়ে যাতায়াত করতেই পছন্দ করে। এর জন্য আগামী পাঁচ বছরে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা খরচ হবে বলে জানা গিয়েছে। পরবর্তী পর্যায়ে হাতিকে রেডিও কলার পরানো এবং দক্ষিণবঙ্গে এআই ক্যামেরার সাহায্যে হাতির দলের গতিবিধির উপর নজরদারির পরিকল্পনা রয়েছে। উল্লেখ্য, ২০২৩-২৪ সালে রাজ্যজুড়ে হাতির আক্রমণে ১০৩ জন মারা গিয়েছেন। আর ২০২৪-এর নভেম্বরের শেষ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৫৩ জনের। তাই দ্রুত এই সমস্যায় ইতি টানতে তৎপর হয়েছে প্রশাসন। 
  • Link to this news (বর্তমান)