ফের ফালাকাটা শহর ‘ভ্রমণে’ হাতির দল, ট্রেন পরিষেবা বন্ধ রেখে ফেরানো হল জঙ্গলে
বর্তমান | ১৯ জানুয়ারি ২০২৫
সংবাদদাতা, ফালাকাটা: শুক্রবার ঘড়ির কাঁটায় তখন রাত একটা বেজে গিয়েছে। ন’দিন পর ফের ফালাকাটা শহর ‘ভ্রমণে’ হাতির দল। এক নম্বর ওয়ার্ড দিয়ে যাত্রা শুরু। সেখান দু’নম্বর হয়ে সটান তিন নম্বর ওয়ার্ডে হাজির বুনোরা। কুয়াশা ভরা রাতে তখন হাতির দাপাদাপি। হাতির সামনে পড়ে মৃত্যু একটি গোরুর। এতকিছুর পরও টের পাননি শহরবাসী। কাকভোরে হাতির আতঙ্কে ঘুম ভাঙে তিনটি ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের। যদিও ততক্ষণে ‘শহর ত্যাগ’ করে গ্রামের উদ্দেশে বেরিয়ে পড়ছে হস্তিদ্বয়। সেখান থেকে প্রথমে কোচবিহার জেলার মাথাভাঙা, পরে জলপাইগুড়ি জেলার ধূপগুড়ি হয়ে ফের ফালাকাটার গ্রামে ফিরে এসে ডেরা বাধে। পরে বিকেলে ফালাকাটা স্টেশন থেকে ধূপগুড়ি স্টেশন অবধি ১৫ মিনিট ট্রেন পরিষেবা বন্ধ রেখে হাতিকে জঙ্গলমুখো করা হয়।
শুক্রবার গভীর রাতে হাতি দুটি কুঞ্জনগর জঙ্গল থেকে বেরিয়ে হয়ে ফালাকাটা ব্লকের কাদম্বনি চা বাগান হয়ে শহরে প্রবেশ করে। খবর পেয়ে বনদপ্তর ও পুলিস টহল শুরু করে। এদিন সন্ধ্যায় হাতি ফিরে গেলে স্থানীয়রা জানান, ভোরে আলো ফুটতেই হাতি দুটি শহর ছেড়ে ব্লকের বালাসুন্দর এলাকায় চলে যায়। সেখানে আলু, টমেটো, মটরশুটি, লাউ সহ একাধিক ফসল তছনছ করে মাথাভাঙা-২ ব্লকের ফুলবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের সরকারের ডাঙা, দারলক্ষ্মীপুর এলাকায় গিয়ে একটি টোটো উল্টে দেয়। পরে ধূপগুড়ি ব্লকের উত্ত ডাবরিবাড়ি হয়ে ফের ফালাকাটা ব্লকের বালাসুন্দরে ফিরে আসে। আসার পথে হাতির হানায় দুটি গোরু মারা যায়।
কুয়াশার মধ্য তিন জেলার তিন ব্লকের বিভিন্ন জায়গায় হাতির আনাগোনার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তে আতঙ্ক ছড়ায়। তবে বনদপ্তর চেষ্টায় একটি হাতিকে সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ কুঞ্জনগর জঙ্গলে ফেরানো সম্ভব হয়। আরএকটি ক্ষীরেরকোটের হীরেন বর্মনের গাছ বাগানে ঢুকে পড়ে। সেই হাতিকে দিনভর ঘেরাটোপে রাখে জলদাপাড়া, মাদারিহাট, দলগাঁও রেঞ্জের বনকর্মীরা। বিকেল ৪টা থেকে হাতিটিকে জঙ্গলে ফেরাতে সচেষ্ট হয় বনদপ্তর। হাতি ফেরাতে ফালাকাটা থেকে ধূপগুড়ি স্টেশন পর্যন্ত বিকেল ৫টা থেকে ৫টা১৭ মিনিট পর্যন্ত বন্ধ রাখা হয় সমস্ত ট্রেন পরিষেবা। পরে হাতিটিকে রেল লাইন পেরিয়ে হরিনাথপুর হয়ে জঙ্গলে ফিরিয়ে স্বস্তি পান বনকর্মীরা।