• শিলিগুড়ি প্ল্যানেট মলের অবৈধ নির্মাণ ভেঙে ফেলার নোটিস পুরনিগমের
    এই সময় | ১৯ জানুয়ারি ২০২৫
  • এই সময়, শিলিগুড়ি: শিলিগুড়ির সেবক রোডের প্ল্যানেট মল নিয়ে এবার আরও কড়া পদক্ষেপ নিল শিলিগুড়ি পুরনিগম। প্ল্যানেট মলে সার্ভে করে ১৮টি বার, পাব, রেস্তোরাঁ, পার্লার, এবং জামাকাপড়ের দোকানের মালিকদের অবৈধ নির্মাণ ভাঙার নোটিস ধরালো পুরনিগম।

    আগামী ৩১ জানুয়ারির মধ্যে সমস্ত অবৈধ নির্মাণ ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নয়তো ১ ফেব্রুয়ারি পুরকর্মীরা নির্মাণ ভেঙে দেবেন বলে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। মেয়র গৌতম দেবের নির্দেশে পুর কমিশনার গত ১৫ তারিখ এই নির্দেশিকা জারি করেছেন। অবৈধ নির্মাণকারীদের নোটিস দেওয়ার পাশাপাশি বিল্ডিংয়ের দেয়ালেও নোটিস সাঁটিয়ে দেওয়া হয়েছে। শিলিগুড়ি মেয়র বলেন, ‘অবৈধ নির্মাণ ভাঙতে আমরা বদ্ধপরিকর। যেই হোক না কেন, অবৈধ নির্মাণ তৈরি করলে আমরা তা ভেঙে দেবো।’

    শিলিগুড়ির সেবক রোডের প্ল্যানেট মল নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই সমস্যা চলছে। অভিযোগ, ওই মলে কোনও ব্যবসায়ীর কাছেই ফায়ার লাইসেন্স নেই। অগ্নি নির্বাপণের পর্যাপ্ত ব্যবস্থাও নেই। বিষয়টি নিয়ে পুরনিগমের কাছে অভিযোগ এলে পদক্ষেপ করা হয়েছিল। বিষয়টি নিয়ে গৌতম দমকলমন্ত্রী সুজিত ঘোষের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। এরপরই তড়িঘড়ি দমকলের পক্ষ থেকে ওই শপিং মলের ব্যবসায়ীদের ডেকে কাগজপত্র ঠিক করানো হয়।

    তবে শুধু অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থাই নয়, ওই শপিং মলে থাকা ৯০ শতাংশ দোকানই বিল্ডিং আইন না মেনে নির্মাণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ। এই অভিযোগ আসার পর গত অগস্ট মাস থেকে তদন্ত শুরু করে শিলিগুড়ি পুরনিগম। তদন্তে দেখা যায়, বিল্ডিং প্ল্যান অনুযায়ী পাঁচটি লিফট তৈরির কথা থাকলে সাতটি লিফট বসানো হয়েছে।

    এর বাইরে প্রত্যেকটি রেস্তোরাঁ, বার, পাব, জামাকাপড়ের দোকানের ভিতরে একাধিক অবৈধ নির্মাণ করা হয়েছে। যে দু’টি বাড়তি লিফট বসানো হয়েছে, তার মধ্যে একটি লিফট ওই মলে থাকা নামী গার্মেন্টস শপের ভিতরে বসেছে। একাধিক জায়গায় বিল্ডিং প্ল্যানের বাইরে গিয়ে ঘর তৈরি হয়েছে। কোথাও কোথাও আবার নিজেদের সুবিধার্থে জন্য পুরো বিল্ডিং প্ল্যানকেই বুড়ো আঙুল দেখানো হয়েছে। নিগমের বিল্ডিং সেলের আধিকারিকরা সরেজমিনে বিষয়টি খতিয়ে দেখে মেয়রকে রিপোর্ট দেন। এরপরই তাঁর নির্দেশে তিনটি নোটিস দেওয়া হয় মলের ব্যবসায়ীদের।

    বেআইনি নির্মাণকারীদের কাগজপত্র–সহ ডেকে পাঠানো হয়। কিন্ত ওই নির্মাণের স্বপক্ষে কেউ কোনও বৈধ কাগজ দেখাতে পারেননি। এরপরই গৌতম কমিশনারকে পদক্ষেপ করা নির্দেশ দেন। সেইমতো ১৫ তারিখ পুরনিগমের বিল্ডিংসেলের পক্ষ থেকে নোটিস ইস্যু করা হয়। মেমো নং ৪৭৪ এসএমসি/এন/বিল্ডিং/২০২৪-২০২৫ অনুযায়ী ৩১ জানুয়ারির মধ্যে নিজের খরচায় সব অবৈধ নির্মাণ ভেঙে ফেলতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ব্যবসায়ীদের। পাশাপাশি ওই শপিং মলের বিল্ডিংয়ের ছাদে বৃষ্টির জল (রেইন ওয়াটার হার্ভেস্টিং) মজুত রাখার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।

    এ বিষয়ে শিলিগুড়ি পুরনিগমের বিরোধী দলনেতা অমিত জৈন বলেন, ‘অবৈধ নির্মাণের ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নিচ্ছে পুরনিগম এটা ভালো কথা। কিন্তু মুখ চিনে নয়, সকল অবৈধ নির্মাণকারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।’

  • Link to this news (এই সময়)