শনিবার ঘড়ির কাঁটায় তখন মেরেকেটে রাত ৮টা ২০। সদ্য ভাত খেয়ে মশারি টাঙাচ্ছিলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার মৈপীঠের দেবীপুরে বাসিন্দা জানকি গিরি। হঠাৎ বাথরুম থেকে আওয়াজ শুনে মাটির বাড়িতে লাগানো টিনের দরজাটা আলতো করে খুলেছিলেন। তারপরেই চোখ কপালে। তিনি দেখেন, মনের আনন্দে বাড়ির মাটির মেঝেতে আঁচড় মারছে দক্ষিণরায়। ততক্ষণে জানকির আত্মরাম খাঁচাছাড়া। চিৎকার করে কাউকে ডাকার জন্য গলার স্বরও বার হচ্ছিল না। কোনওমতে চিৎকার করেন। সেই সময়েই লাফ মেরে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায় বাঘটি। এই ঘটনায় আতঙ্কে গোটা মৈপীঠ। এলাকাবাসীর কথায়, ‘আগে তো গ্রাম লাগোয়া জঙ্গলে বাঘ ঢুকছিল। এ বার তো সটান বাড়ি ঘরে ঢুকে পড়ছে। এই আতঙ্ক নিয়ে কী বাঁচা যায়!’ খবর পেয়ে গ্রামে যান বন দপ্তরের কর্মীরা।
গত এক মাস ধরে একাধিকবার বাঘ এসেছে মৈপীঠের লোকালয়ের কাছে। গত রবিবারই গঙ্গারঘাট এলাকা থেকে একটি বাঘকে খাঁচাবন্দি করে গভীর জঙ্গলে ছেড়ে আসা হয়েছিল। এরপরে নগেনাবাদে অন্য একটি বাঘের পায়ের ছাপ দেখা যায়। শনিবার সকালেই পায়ের ছাপ পরীক্ষা করেছিল বন দপ্তর। পরে অবশ্য বন দপ্তরের তরফে জানানো হয়, বাঘটি জঙ্গলে ফিরে গিয়েছে। শনিবার রাতে ফের একটি বাঘ ঢুকে পড়ল দেবীপুরে অরুণ গিরির বাড়িতে।
ঘটনায় রীতিমতো আতঙ্গে দেবীপুর-সহ গোটা গ্রাম। অরুণের স্ত্রী জানকি বলেন, ‘আমার মাটির ঘর। এখনও বাঘের আঁচড়ের দাগ দেখতে পাবেন। কিছুটা মাটিও পড়ে রয়েছে। আমি চিৎকার করতেই বাঘটা লাফ মেরে রাস্তায় চলে গেল।’ গোটা ঘটনায় আতঙ্কে পরিবার। এলাকাবাসীর দাবি, বারবার গ্রামে বাঘ চলে আসছে। এ ভাবে ভয় নিয়ে বাঁচা সম্ভব!
শনিবার রাতে খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ওই বাড়িতে যান বন দপ্তরের কর্মীরা। বাঘটি কোন দিকে গিয়েছে, সেই বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।