• পরিস্থিতি অনুযায়ী পথ! ইয়েচুরি-লাইনেই কারাট
    এই সময় | ১৯ জানুয়ারি ২০২৫
  • সিপিএমের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক, প্রয়াত সীতারাম ইয়েচুরির রাজনৈতিক লাইনে বড় কোনও পরিবর্তন করলেন না প্রকাশ কারাট। প্রতিটি রাজ্যের রাজনৈতিক সমীকরণ অনুযায়ীই নির্বাচনী জোট গঠনের দরজা খোলা রাখল সিপিএম।

    নিউ টাউনে শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে আসন্ন মাদুরাই পার্টি কংগ্রেসের খসড়া রাজনৈতিক প্রস্তাব পেশ করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে এই খসড়া গৃহীত হলে তা পার্টি কংগ্রেসের আগে প্রকাশ করা হবে। এই খসড়া রাজনৈতিক প্রস্তাবে অতীতে সীতারাম যে রাজনৈতিক লাইনে হেঁটেছেন, সেই রাজনৈতিক ভাবনারই প্রতিফলন রয়েছে। বিজেপিকে পরাজিত করতে কংগ্রেসের হাত ধরা হবে— এটা সরাসরি বলা না–হলেও কোনও রাজ্যের পরিস্থিতি অনুযায়ী নির্বাচনী সমঝোতা করার দরজা খোলা রাখা হয়েছে। সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে থাকাকালীন ইয়েচুরি প্রয়াত হওয়ায় কারাটই এখন পলিটব্যুরোর কো–অর্ডিনেটর রয়েছেন।

    সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির এক সদস্যের পর্যবেক্ষণ, ‘গত পার্টি কংগ্রেসে গৃহীত রাজনৈতিক লাইনের মৌলিক কোনও পরিবর্তন হয়নি। কোনও রাজ্যে নির্বাচনী সমীকরণ কী হবে, তা সেই রাজ্যের পরিস্থিতি অনুযায়ী ঠিক করার কৌশলই বহাল রাখা হয়েছে।’ এই কৌশলের অর্থ, কংগ্রেস হাইকম্যান্ড চাইলে ২০২৬ সালে রাজ্যে ফের বাম–কংগ্রেস জোট হতে পারে। ‘ইন্ডিয়া’ ব্লকে সিপিএম ও কংগ্রেস পাশাপাশি রয়েছে।

    ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গ, রাজস্থান, তামিলনাড়ু, বিহার–সহ একাধিক রাজ্যে কংগ্রেসের সঙ্গে সিপিএমের নির্বাচনী সমঝোতা হয়েছে। কয়েক মাস আগে মহারাষ্ট্রের ভোটেও কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন মহাবিকাশ আগাড়ি জোটে থেকেছে সিপিএম। ভোটের ফলাফলে আগাড়ির বিপর্যয় হলেও সিপিএম তার একটি আসন ধরে রাখতে পেরেছে। সিপিএমের কেরালা–লবি সেই রাজ্যের সমীকরণ অনুযায়ী তীব্র কংগ্রেস বিরোধী অবস্থান গ্রহণ করলেও সিপিএমের খসড়া রাজনৈতিক প্রস্তাবে সেই তীব্র কংগ্রেস বিরোধিতার আভাস নেই।

    মাদুরাই পার্টি কংগ্রেসের পরেই বঙ্গ–সিপিএম ব্রিগেড সমাবেশ করতে চলেছে। আলিমুদ্দিন স্ট্রিট আগামী ২০ এপ্রিলের ব্রিগেডকে সামনে রেখে এই অংশের জনতার মধ্যে টানা প্রচার করতে চাইছে। এই প্রথম বামেদের ব্রিগেড কৃষক সভা, সিটু, খেতমজুর সংগঠন ও বস্তি ফেডারেশনের ব্যানারে হতে চলেছে। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট দলের যুব–ছাত্র সংগঠনের ব্যানারে ব্রিগেড সমাবেশ করেছিল। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম সেই ব্রিগেডের অন্যতম বক্তা হিসেবে থাকলেও মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়, সৃজন ভট্টাচার্যরা ছিলেন ব্রিগেডের মূল বক্তা। আগামী ২০ এপ্রিলের ব্রিগেডে সিপিএমের শ্রমিক, কৃষক, খেতমজুর সংগঠনের নেতৃত্বই মূল বক্তা হতে চলেছেন।

    সিপিএমের প্রাদেশিক কৃষক সভার সভাপতি অমল হালদার শনিবার বলেন, ‘ব্রিগেডের আগে রাজ্যের প্রতিটি বুথে আমরা মিছিল করব। সম্মেলন হবে। কৃষকদের বাড়ি বাড়ি যাওয়ার চেষ্টা করা হবে। এপ্রিলের কাঠফাটা রোদের মধ্যে লক্ষ লক্ষ মানুষ ব্রিগেডে আসবে।’ সিটুর রাজ্য সম্পাদক অনাদি সাহুর কথায়, ‘কেন্দ্রের বিজেপি সরকার পশ্চিমবঙ্গে বড় কোনও সরকারি বিনিয়োগের ব্যবস্থা করেনি। রাজ্য সরকারও কোনও বড় শিল্প গড়তে পারেনি। এই বিষয়গুলি নিয়ে ফেব্রুয়ারি–মার্চ মাসজুড়ে টানা মিটিং–মিছিল হবে।’

  • Link to this news (এই সময়)