• এত্তা জঞ্জাল! সাইকেলে চেপে সরেজমিনে সিপি
    এই সময় | ১৯ জানুয়ারি ২০২৫
  • এই সময়, ব্যারাকপুর: ছি ছি, এত্তা জঞ্জাল! বিটি রোড হোক বা সোদপুর–মধ্যমগ্রাম রোড। শহরতলির যে কোনও ব্যস্ত, গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার ধারে জঞ্জালের পাহাড় নতুন কোনও ছবি নয়। টিটাগড় টাটা গেট, সোদপুর রাজা রোড, সুখচর গির্জা মোড় অথবা ঘোলা কদমতলা, উত্তর ব্যারাকপুর পুরসভার সামনের রাস্তা–সহ ঘোষপাড়া রোডের কয়েকটি জায়গায় এই চিত্র এখন প্রায় নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। সাধারণ মানুষ নন, খোদ পুরসভার কর্মীরা বাড়ি বাড়ি থেকে সংগৃহীত ময়লা দিনের পর দিন এই সব জায়গায় ফেলছেন। ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ।

    স্থানীয় বাসিন্দারা তো বটেই। সমস্যার শিকার সাধারণ পথচলতি মানুষজনও। তাতে অবশ্য স্থানীয় পুর প্রশাসনের কোনও হেলদোল নেই। সাধারণ মানুষের অভিযোগ পেয়ে শনিবার পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে সম্প্রতি গাড়ি ছেড়ে সাইকেল নিয়ে বেরোন ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার অলোক রাজোরিয়া। ব্যারাকপুর চিড়িয়ামোড় থেকে সোদপুর পর্যন্ত সাইকেল চালিয়ে আসেন তিনি।

    ব্যস্ত বিটি রোডের ঠিক কোথায়, কোথায় জঞ্জালের কারণে সমস্যা হচ্ছে, তা নিজের চোখেই দেখেন পুলিশ কমিশনার। শুধু তাই নয়, কিছু জায়গায় যে ভাবে জঞ্জাল ফেলে রাখা হয়েছে, তা নিয়ে অসন্তোষও প্রকাশ করেন তিনি। নির্দেশ দিয়েছেন, বিটি রোডের ধারে কোথাও ময়লা ফেলা যাবে না। থানা এবং ট্র্যাফিক বিভাগকে তিনি নির্দেশ দিয়েছেন, যদি পুরসভার কোনও গাড়ি ময়লা ফেলতে আসে, সেই গাড়ি বাজেয়াপ্ত করা হবে। পুলিশি নির্দেশিকার বিষয়ে পুরসভাকেও অবগত করা হয়েছে।

    জঞ্জাল সমস্যা সব থেকে বেশি পানিহাটিতে। রাস্তায় যত্রতত্র পড়ে আবর্জনা। পুরসভার কোনও ভ্রূক্ষেপ নেই। পরিস্থিতি এমনই যে, স্কুলের সামনেও ডাঁই করে রাখা হচ্ছে আবর্জনা। আগরপাড়া উসুমপুর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭৫ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানের আলোচনাতেও ওঠে জঞ্জাল–সমস্যা। ১০ জানুয়ারি থেকে সপ্তাহভর চলেছে নানা অনুষ্ঠান, যা শেষ হয়েছে শনিবার। স্কুলের গেটের বাইরে ময়লা পড়ে থাকায় বাধ্য হয়ে স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা পোস্টার লাগায়, ‘বিদ্যালয়ের সামনে আবর্জনা ফেলার এত সুন্দর ব্যবস্থাপনার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা।’

    কিন্তু তাতেও ফল মেলেনি। একই দশা সোদপুর সুশীল কৃষ্ণ শিক্ষায়তন, দেশবন্ধু স্কুলের সামনেও। দুর্গন্ধের জন্য কখনও দরজা জানালা বন্ধ করে ক্লাস করাতে হয় শিক্ষকদের। তাঁদের প্রশ্ন, কোনও নেতার বাড়ির সামনে তো ময়লা পড়ে থাকে না। তা হলে স্কুলের সামনে কেন এই পরিস্থিতি? কেনই বা রাস্তার দখল নেবে জঞ্জাল? তবে পুলিশ কমিশনারের নির্দেশে নড়েচড়ে বসেছে পুরসভাগুলি। পানিহাটির পুরপ্রধান মলয় রায় বলেন, ‘এটা ঠিক যে, এখানে জঞ্জাল সমস্যা রয়েছে। পুলিশ কমিশনারের নির্দেশ ইতিমধ্যেই আমরা অনেকটা বাস্তবায়িত করেছি।’ বাকি পুরসভাগুলির কর্তৃপক্ষও একই সাফাই দিয়েছেন। কিন্তু কবে রাস্তা হবে সম্পূর্ণ জঞ্জালমুক্ত, সেই প্রশ্নের উত্তরটা অজানাই থাকছে!

  • Link to this news (এই সময়)