চাই সঠিক ক্ষতিপূরণ, কৃষকদের দাবিতে বনগাঁ সীমান্তে কাঁটাতারের জন্য জমি অধিগ্রহণে জট
প্রতিদিন | ১৯ জানুয়ারি ২০২৫
জ্যোতি চক্রবর্তী, বনগা: বাংলাদেশের অশান্ত পরিস্থিতির মধ্যে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের অরক্ষিত অংশে কাঁটাতার দিতে উদ্যোগী হয়েছে প্রশাসন। এজন্য জমি অধিগ্রহণের কাজ চলছে। এবার এই জমি অধিগ্রহণের কাজেই বেনিয়মের অভিযোগ তুলল গ্রামবাসীদের একাংশ। ঘটনাটি বনগাঁ ব্লকের কালিয়ানি সীমান্ত এলাকার। দেশের স্বার্থে জমি দিতে রাজি থাকলেও উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ না পেলে ঘরবাড়ি ছাড়বেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন একাধিক কৃষক।
প্রশাসন জানিয়েছে, গত ডিসেম্বর সম্ভাব্য জমি অধিগ্রহণের জন্য জমির মালিকদের নোটিস করা হয়। নোটিসে বলা হয়, সরকার নির্ধারিত দামে জমি কেনা হবে। এখানেই আপত্তি গ্রামবাসীদের একাংশের। তাঁদের বক্তব্য, জলাজমি বা ভাঙাজমি এবং বসতবাড়ির জন্য আলাদা দাম নির্ধারণ করা হয়নি। সীমান্তের বাসিন্দা বিশ্বজিৎ সরকার বলেন, “দেশের নিরাপত্তার স্বার্থে আমরা জমি দিতে রাজি। কিন্তু আমাদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। অনেক কষ্টে বাড়ি তৈরি করেছি। বাড়ির জন্য আলাদা টাকা দিচ্ছে না। জমির জন্য যে টাকা দিচ্ছে তাতে অন্য কোথাও গিয়ে জায়গা, বাড়ি কিনতে পারব না।”
কৃষক বুদ্ধদেব মণ্ডল বলেন, “কোনও বাস্তুজমি, ডাঙাজমি, জলাজমির কত দাম দেওয়া হচ্ছে, তা আমরা জানতে পারছি না। অশান্ত বাংলাদেশের পরিস্থিতিতে কাঁটাতার না থাকায় আতঙ্কে আছি। কিন্তু সঠিক মূল্য না পেলে যেতেও পারছি না। প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাদের বিষয়টি দেখা হোক।” প্রশাসনের বক্তব্য, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তাদের নির্দেশমতো পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে। তবে গ্রামবাসীদের মধ্যে অনেকেই ইতিমধ্যে জমি দিয়ে দিয়েছে। সমস্যা তৈরি হয়েছে জনা ২০ জমির মালিককে নিয়ে। বনগাঁ পঞ্চায়েত সমিতির উত্তর কর্মাধ্যক্ষ প্রসেনজিৎ ঘোষ বলেন, “ওখানে অনেকেই জমি দিয়ে দিয়েছেন, টাকাও পেয়ে গিয়েছেন। যারা আপত্তি তুলছেন, সবার সঙ্গে কথা বলে সমস্যা মেটানো হচ্ছে। তাঁদের সরকার নির্ধারিত দামের থেকেও দেড় গুণ বেশি দাম দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।”
পঞ্চায়েত সমিতি সূত্রে জানা গিয়েছে, বিএসএফের কাঁটাতারের জন্য ছয়ঘরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের কালিয়ানি এলাকায় রাজ্য সরকার জমি কিনছে। সমীক্ষা ডিমার্কেশন ইতিমধ্যে হয়ে গিয়েছে। মোট ১১ একর জমির মধ্যে ৬ একর জমির মালিক এনওসি দিয়েছেন। ৫ একর জমির মালিক ইতিমধ্যে টাকাও পেয়ে গিয়েছেন। কিছু ব্যক্তি আছেন যাদের ওই জমির উপর ঘরবাড়ি রয়েছে। তাঁদের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে। পরে সার্ভে করে ঘরবাড়ির জন্য টাকা ধার্য হবে।