সংবাদদাতা, সিউড়ি: বীরভূমে রমরমিয়ে দশটিরও বেশি বেআইনি পেট্রল পাম্প চলছে বলে অভিযোগ। জেলার পেট্রল পাম্প ডিলাররা পুলিসের কাছে অভিযোগ জানানো সত্ত্বেও সবকটি বেআইনি পাম্প বন্ধ করা হয়নি। তবে ডিলার অ্যাসোসিয়েশনের দাবি, তাদের চাপে এখনও পর্যন্ত গোটা তিরিশেক পাম্প বন্ধ করা হয়েছে। বাকি থেকে গিয়েছে গোটা দশেক।
মূলত ঝাড়খণ্ড থেকে কম দামে তেল কিনে এনে এই বেআইনি ছোট পাম্পগুলি বিক্রি করে বলেই অভিযোগ। পাশাপাশি অবৈজ্ঞানিক ভাবে পাম্পগুলিতে তেল মজুত রাখা হয়। জেলার রাজনগর ব্লকের রাজনগর, চন্দ্রপুর, ইলামবাজারের গোল্টিয়া সহ আরও বেশকিছু এলাকায় এই বেআইনি পেট্রল পাম্পগুলি চলছে বলে অভিযোগ ডিলারদের। এই নিয়ে প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে ধর্মঘটে নামারও প্রস্তুতি নিচ্ছে তারা। জেলার পুলিস সুপার আমনদীপকে এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, কোথাও কোনও অবৈধ পেট্রল পাম্প থাকলে আমরা কড়া ব্যবস্থা নেব। কেউ অভিযোগ করলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
উল্লেখ্য, মাস দুয়েক আগে বীরভূমের পাড়ুই থানার বাতিকার বাস স্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকায় একটি বেআইনি পেট্রল পাম্পে বিস্ফোরণ হয়। পুলিস জানিয়েছে, কয়েক বছর আগেই এই ছোট পেট্রল পাম্পটি (মিনি পাম্প) তৈরি হয়েছিল। বিস্ফোরণে পাম্পের মালিক শেখ বদরুলের ছেলে শেখ রাজু ও তেলের গাড়ির চালক শেখ সোহেল আহত হয়। অবৈধ সেই পাম্পটি বন্ধ করেছে পুলিস। এই ঘটনার পরই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন ও ডিলার অ্যাসোসিয়েশন। সংগঠনের দাবি ছিল, এই জেলায় প্রায় ৪০টিরও বেশি বেআইনি পেট্রল পাম্প বিভিন্ন জায়গায় চলছে। সংগঠনের চাপে তিরিশটি পাম্প বন্ধ হলেও দশটির বেশি পাম্প এখনও বিভিন্ন জায়গায় চলছে বলে অভিযোগ। জানা গিয়েছে, এই পাম্পগুলির বেশিরভাগ ইলামবাজার ব্লকের গোলটিয়া ও রাজনগর এলাকায়। প্রতিবেশী রাজ্য থেকে কম দামে তেল কিনে এনে এই রাজ্যে তুলনায় কম দামে তা বিক্রি করা হয় বলে অভিযোগ। এই কারবারের সঙ্গে একটি বড় মাফিয়া চক্র জড়িয়ে রয়েছে বলেও জানা গিয়েছে। প্রশাসনের মদতেই ছোট ছোট গাড়িতে করে তেল আনা হচ্ছে এবং মিনি পেট্রল পাম্পে বিক্রি করা হচ্ছে। এই কাজে বেআইনি অর্থ বিনিয়োগ চক্রও জড়িয়ে রয়েছে বলে অভিযোগ।
পেট্রল পাম্প ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের বীরভূম জেলার সম্পাদক গৌরব টিব্রিওয়ালা বলেন, আমরা প্রশাসনকে আগেও জানিয়েছি। এখনও প্রায় দশটির বেশি অবৈধ পেট্রল পাম্প চলছে। রাজনগর এলাকায় কিছু আছে এবং বাকিগুলি ইলামবাজারের গোলটিয়া এলাকায় বলে আমরা খবর পেয়েছি। এগুলি বন্ধ করার জন্য জেলা প্রশাসনের কাছে আর্জি জানাচ্ছি। মূলত ঝাড়খণ্ড থেকে কম দামে পেট্রল কিনে এনে এইসব বেআইনি পাম্পগুলোতে মজুত করা হচ্ছে। ফলে আমাদের বৈধ পাম্পগুলি মার খাচ্ছে। তাই আমরা চাই, প্রশাসন এই বেআইনি পাম্পগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিক।