• মানকর হাসপাতালের জরাজীর্ণ আবাসনে নিরাপত্তার অভাব
    বর্তমান | ২০ জানুয়ারি ২০২৫
  • সংবাদদাতা, মানকর: পূর্ব বর্ধমানের মানকর গ্রামীণ হাসপাতালের আবাসন জরাজীর্ণ দশায় রয়েছে। বেশিরভাগ ঘরেই পলেস্তারা খসে পড়ছে। দেওয়াল আগাছায় ভরেছে। ভেঙে পড়ছে ছাদ। চারপাশ জঙ্গলে ঢেকেছে। পরিস্থিতি এমনই যে, স্বাস্থ্যকেন্দ্রের আবাসনটি ভুতবাংলোর চেহারা নিয়েছে। শুক্রবার এই আবাসনেই এক মহিলা স্বাস্থ্যকর্মী ছুরিকাহত হন। তারপর থেকেই আবাসনের বাকি বাসিন্দারা নিরাপত্তার অভাব ও আবাসনের বেহাল অবস্থা নিয়ে সরব হয়েছেন।


    এলাকার বাসিন্দারাও জানিয়েছেন, স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পাঁচিল লাগোয়া জায়গায় সমাজবিরোধীদের দেখা যাচ্ছে। সেখানে প্রায়ই মদ-গাঁজার আসর বসছে। এনিয়ে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। হাসপাতাল সুপার অনিরুদ্ধ ইসলাম ফোন না ধরায় এবিষয়ে তাঁর বক্তব্য জানা যায়নি। পূর্ব বর্ধমানের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জয়রাম হেমব্রম বলেন, বিষয়টি শুনেছি। নিরাপত্তা সহ বাকি সমস্যা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।


    বুদবুদ ছাড়াও গলসি-১ ব্লকের নানা এলাকা ও আউশগ্রাম-২ ব্লকের ভাতকুণ্ডা, প্রেমগঞ্জ সহ বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষ এই হাসপাতালের উপরে নির্ভরশীল। প্রতিদিন বর্হিবিভাগে প্রায় ৫০০রোগী আসেন। ইনডোরে ৩০টি শয্যা রয়েছে। সেখানেও সবসময়ই রোগী ভর্তি থাকেন। হাসপাতাল লাগোয়া আবাসনে নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা থাকেন। তাঁদের অভিযোগ, আবাসনের বেহাল দশার কথা একাধিকবার কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। এই হাসপাতালে ছ’জন চিকিৎসক, ১১জন নার্স ও ছ’জন স্বাস্থ্যকর্মী ডিউটি করেন। কিন্তু হাসপাতালের সাতটি আবাসনে মাত্র চারটি পরিবার থাকে। আবাসনের অনেক জায়গায় ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ছে। কোথাও কোথাও কার্নিশ, দরজা, জানলা ভেঙে গিয়েছে। বৃষ্টি হলে দেওয়াল চুঁইয়ে জল পড়ে। ঘরে জল ঢুকে যায়। কোথাও দেওয়ালের ফাটল থেকে আগাছা জন্মেছে। শুক্রবার বিকেলে আবাসনে এক মহিলা স্বাস্থ্যকর্মী ছুরিকাহত হন। তাঁর অভিযোগ, দু’জন বারান্দার গ্রিল টপকে ঢুকেছিল। তাদের মধ্যে একজন তাঁকে ছুরির কোপ মারে। আবাসিকদের অভিযোগ, হাসপাতালের পূর্ব প্রান্তের পাঁচিলের উচ্চতা একেবারে কম। ফলে যে কেউ পাঁচিল টপকে ঢুকে পড়তে পারে। পাঁচিল লাগোয়া তেঁতুলগাছের তলায় নিয়মিত মদের আসর বসে। বিষয়টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনকে জানিয়েও লাভ হয়নি।


    স্বাস্থ্যকর্মী কৈলাস মণ্ডল বলেন, আবাসনটি বসবাসের যোগ্য নয়। আগেও চুরির ঘটনা ঘটেছিল। তাই আবাসন ছাড়ার জন্য আবেদন করেছি। শুক্রবারের ঘটনার পর আতঙ্ক বেড়ে গিয়েছে। 


    হাসপাতালের সিস্টার-ইন-চার্জ স্বপ্না দাস বলেন, দরজায় জোরে ধাক্কা দিলেই খুলে যাবে। কিছুদিন আগে আবাসনের ছাদে চোর উঠে সব লোহার পাইপ খুলে নিয়ে গিয়েছে। এক নার্সের বাবা প্রকাশচন্দ্র কেউট বলেন, আবাসন সংস্কারের জন্য বহুবার হাসপাতাল সুপারকে অনুরোধ করা হয়েছে। মেয়েকে এখানে রাখার ইচ্ছা নেই। তবে যতদিন অন্য ব্যবস্থা না হয়, ওকে এখানেই থাকতে হবে। মানকর হাসপাতাল। -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)