নিজস্ব প্রতিনিধি, বহরমপুর: ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের পূর্বাঞ্চলীয় শাখার ক্লাস্টার বৈঠকের আয়োজন হল বহরমপুরে। রবিবার দুপুরে শিল্পতালুকের একটি হোটেলে হাজির হয়েছিলেন পূর্বাঞ্চলীয় শাখার সাধারণ সম্পাদক সঞ্জয় দাস ও সভাপতি অভিজিৎ মণ্ডল সহ ব্যাঙ্কের বিভিন্ন ব্রাঞ্চের কর্মকর্তারা। ক্লাস্টার বৈঠকে এদিন নানা সমস্যার কথা তুলে ধরেন মালদহ ও মুর্শিদাবাদ জেলার ব্যাঙ্ককর্মীরা। কী করে সেই সমস্যা কাটিয়ে মানুষকে সর্বাধিক ভালো পরিষেবা দেওয়া যায়, এদিন সেই পথ বাতলে দেন অ্যাসোসিয়েশনের আধিকারিকরা। রাজ্য সরকার এবং কেন্দ্রীয় সরকারের একাধিক প্রকল্প বর্তমানে ব্যাঙ্কের মাধ্যমে বাস্তবায়িত হচ্ছে। কিন্তু, দিনের পর দিন কর্মী নিয়োগ না হওয়ায়, এক একজন ব্যাঙ্ক কর্মীর উপর বিপুল কাজের চাপ বাড়ছে। পরিষেবা স্বাভাবিক রাখাই এখন তাদের কাছে বাড়তি চ্যালেঞ্জ। স্থায়ী পদে কর্মী নিয়োগ না হলে আগামী দিনের সমস্যা আরও বাড়বে বলেই মত আধিকারিকদের। সপ্তাহে পাঁচদিন ব্যাঙ্কিং পরিষেবা ও স্থায়ী পদে লক্ষাধিক কর্মী নিয়োগের দাবি জানিয়ে ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের তরফে আগামী ২৪ ও ২৫ ফেব্রুয়ারি ব্যাঙ্ক ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে।
পূর্বাঞ্চলীয় শাখার সাধারণ সম্পাদক সঞ্জয়বাবু এদিন বলেন, পশ্চিমবঙ্গ সহ আটটি রাজ্যে আমরা ঘুরে ঘুরে সংগঠনের কাজ করছি। সব জায়গায় দেখছি ব্যাঙ্কিং কর্মীদের মানসিক ও শারীরিক কষ্ট বাড়ছে। দীর্ঘদিন ব্যাঙ্কে কর্মী নিয়োগ হচ্ছে না। কেন্দ্র ও রাজ্যের অনেক প্রকল্প আমাদের মাধ্যমে বাস্তবায়িত হচ্ছে। দিনের পর দিন আমাদের কাজ বাড়লেও কর্মী বাড়ছে না। মানসিকভাবে আমরা বিপর্যস্ত। এই ব্যবস্থার মধ্যে থেকেই কর্মীরা যাতে গ্রাহক পরিষেবা আরও ভালো দিতে পারে সেই জন্য আমরা এই ধরনের ক্লাস্টার বৈঠক করছি।
তিনি আরও বলেন, অনেকদিন ধরে ব্যাঙ্কে কর্মী নিয়োগ হচ্ছে না। তাই ২৪ ও ২৫ ফেব্রুয়ারি ধর্মঘট ডেকেছি। কর্মী নিয়োগ ও পাঁচদিনের সপ্তাহ চালুর দাবিতে আমাদের ধর্মঘটে দেশব্যাপী অন্যান্য ব্যাঙ্কের অ্যাসোসিয়েশনও যোগ দিতে চাইছে। দেড় লক্ষ ক্লার্ক পদ শূন্য। একই সংখ্যক অফিসারদের পদ খালি রয়েছে। যে সমস্ত শিক্ষিত বেকার আছে, তাদের ব্যাঙ্কে নিয়োগ দরকার। সব স্থায়ী পদে লোক নিতে হবে। না হলে গ্রাহকদের পরিষেবা দেওয়া কঠিন হয়ে উঠছে। গ্রাহকদের বলব, আপনারা আমাদের পাশে থাকুন।
এই জোনের কোষাধ্যক্ষ তথা বৈঠকের অন্যতম উদ্যোক্তা বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে এখন ট্রানজাকশন অনেক বেশি। তাই পাঁচদিনের ব্যাঙ্কিং সপ্তাহ চালু হলেও খুব সমস্যা হবে না। এরফলে আমাদের জাতীয় সম্পদ অনেক রক্ষা পাবে। অন্যান্য দিনে ৪০ মিনিট অতিরিক্ত সময় দিলেই, পাঁচদিন ব্যাঙ্কিং পরিষেবা দেওয়া যাবে। আমাদেরও কাজের সুবিধা হবে। গ্রামেগঞ্জে ব্যাঙ্কে গেলেই গ্রাহক ও ব্যাঙ্ককর্মীদের মধ্যে বচসা হতে দেখা যায়। এর কারণ হল অত্যধিক কাজের চাপ। গ্রাহকদের সঙ্গে ব্যাঙ্কারদের সম্পর্কের চিড় ধরছে। সেটা সমাধানের জন্য আমরা রাস্তা খুঁজছি।