হাতের লেখায় ফুটে উঠেছিল গ্যাসট্রিকের সমস্যা, গ্রাফোলজিস্টদের সাহায্যে বেঁচেছিল ৪০ লক্ষ টাকা
বর্তমান | ২০ জানুয়ারি ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: হাতের লেখা আসলে মনের কথা বলে। শুধু মন নয়, শরীর কেমন আছে, সেকথাও জানিয়ে দেয়। শরীরের কথা জানতে পারলে আবার অপরাধের কিনারাও হয়ে যায়। কেমন করে? বছর ছয়েক আগের ঘটনা। কাকার সই নকল করে ৪০ লক্ষ টাকার চেক লিখেছিলেন ভাইপো। খটকা লাগে ব্যাঙ্কের আধিকারিকের। কিন্তু সই হুবহু এক। খোঁজ পড়ে গ্রাফোলজিস্টদের। সই থেকে জানা যায়, কারওর গ্যাসট্রিকের সমস্যা রয়েছে কি না। ব্যাস! ওতেই বাজিমাত। কাকার সইয়ে গ্যাসট্রিকের স্ট্রোক রয়েছে, ভাইপোর হুবহু নকল করা সইয়ে তা নেই। শেষ পর্যন্ত ভাইপোর স্থান হয় শ্রীঘরে। হাতের লেখা দেখে এভাবেই নানা অসাধ্য সাধন করা যায়। সেই গল্পই শোনাচ্ছিলেন কলকাতা ইনস্টিটিউট অব গ্রাফোলজির ডিরেক্টর মোহন বসু। রবিবার দেশপ্রিয় পার্কে এই সংস্থার অষ্টাদশ বার্ষিক সভা ছিল। সেখানে গ্রাফোলজিস্টরা বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন। মোহনবাবু বলছিলেন, হাতের লেখা দেখে কেউ আত্মহত্যাপ্রবণ কি না, তাও বোঝা যায়। এভাবেই গত এক বছরে প্রায় ২০ জনকে আত্মহননের পথ থেকে সরিয়ে নিয়ে আসতে পেরেছেন তাঁরা। কিন্তু কীভাবে এই অসাধ্য সাধন হয়? মোহনবাবু বলছেন, পুরোটাই বিজ্ঞান। কেউ আত্মহত্যা প্রবণ হলে, সেই মানুষটির কলমের চাপ, স্ট্রোক, কালির গভীরতায় পরিবর্তন চলে আসে। হাতের লেখা দেখে পুলিসি তদন্তে সাফল্য এনে দিয়েছিলেন গ্রাফোলজিস্টরা। কিন্তু গোপনীয়তার স্বার্থে সেকথা খোলসা করতে চান না তাঁরা। মোহনবাবু বলছিলেন, একবার একটি নামী প্রতিষ্ঠানে হাতে লেখা হুমকি চিঠি এসেছিল। তখন হাতের লেখা বিশারদদের ডাক পড়ে। হুমকি চিঠির হাতের লেখা দেখে, লেখকের শারীরিক ও চারিত্রিক বিবরণ দিয়ে দেন গ্রাফোলজিস্ট। সেই বিবরণের ভিত্তিতে ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে পুলিস। ইদানীংকালে গ্রাফোলজিস্টদের চাহিদা বাড়ছে বলে ওই সভা থেকে জানানো হয়েছে। হাতের লেখার পরিবর্তনের মাধ্যমে কীভাবে মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করা যায়, তাও জানান তাঁরা। নিজস্ব চিত্র