• রাজস্ব বৃদ্ধির লক্ষ্যে  ভূমিদপ্তরের নজরে  মাটি বিক্রির টাকা
    বর্তমান | ২০ জানুয়ারি ২০২৫
  • শ্যামলেন্দু গোস্বামী, বারাসত: প্রতি বছর উত্তর ২৪ পরগনা জেলা থেকে মোটা টাকা রাজস্ব জমা পড়ে রাজ্যের কোষাগারে। এবারও জেলায় রাজস্ব আদায় হয়েছে প্রায় ৩৯ কোটি টাকা। সেই টাকা জমে পড়ছে অর্থদপ্তরে। এর মধ্যে একদিকে যেমন আছে সরকারি লিজের টাকা, তেমনই আছে মাটি কাটা ও ইটভাটা থেকে আসা টাকা। আগামী অর্থবর্ষে আরও বেশি রাজস্ব আদায় করতে বদ্ধপরিকর ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দপ্তর। তাদের নজরে মাটি। সেই মতো তৎপরতা শুরু হয়েছে। তৈরি হচ্ছে বিশেষ টিমও। 


    রাজস্ব আদায়ের ‘খনি’ বলেই পরিচিত উত্তর ২৪ পরগনা। একদিকে রয়েছে মেছো ভেরি, অন্যদিকে হাজার হাজার হেক্টর সরকারি জমি। শুধু তাই নয়, সরকারি জমির লিজ থেকেও ভালো পরিমাণ রাজস্ব আদায় হয়। সেই মতো প্রতি বছর জেলাকে রাজস্ব আদায়ের জন্য ‘টার্গেট’ দেওয়া হয়। এবার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৯ কোটি টাকা। যা গতবারের তুলনায় অনেকটাই বেশি। সেই মতো ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দপ্তর কাজ শুরু করে। সরকারি জমি বিভিন্ন খাতে ভাড়া দিয়েছে দপ্তর। এই খাতে আয় হয়েছে ১৭ কোটি টাকা। তাছাড়া, মিউটেশন সহ বিভিন্ন খাতে ফি বাবদ আদায় হয়েছে ৬ কোটি। এছাড়াও ইটভাটাগুলি থেকে রাজস্ব বাবদ মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করেছে জেলা প্রশাসন। প্রায় ছ’কোটিরও বেশি টাকা আদায় হয়েছে এই খাতে। জেলার বিস্তীর্ণ অংশজুড়ে রয়েছে মাছের ভেরি। হাজার হাজার একর চাষের জমিকে ভেড়িতে পরিণত করা হয়। সেই ভেড়ি তৈরি করতে কাটা হয় মাটি। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, রাজস্ব কেটে নেওয়ার পর সেই মাটি বিক্রি করা যায়। হাড়োয়া, শাসন, দত্তপুকুর, মিনাখাঁ, সন্দেশখালি, বসিরহাট সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় এই কাজ চলে। তা থেকে দু’ কোটিরও বেশি টাকা রাজস্ব বাবদ আদায় করেছে জেলা প্রশাসন। বাকি টাকা এসেছে অন্যান্য খাত থেকে। তবে, এই মাটি কাটা থেকে আরও বেশি রাজস্ব আদায় হতে পারে বলে মনে করছে জেলার ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দপ্তরের অফিসারদের একাংশ। সাধারণ মানুষের বক্তব্য, যেভাবে জেলার বিস্তীর্ণ এলাকায় মাটি কাটা হয়, তাতে সঠিকভাবে রাজস্ব আদায় হলে কয়েক কোটি টাকা মাটি থেকেই উঠে আসত। লাভবান হতো রাজ্য সরকার। সেক্ষেত্রে মাটি মাফিয়াদের দাপাদাপিও কমবে। বাম আমল থেকেই এটা চলে আসছে।


    দপ্তরের একটি সূত্র থেকে জানা গিয়েছে, এ নিয়ে ব্লকভিত্তিক একটি করে স্পেশাল টিম গঠন করা হচ্ছে। এই কাজে নজরদারি চালাবেন ব্লকের ভূমি দপ্তরের আধিকারিকরা। সেই মতো প্রতিদিন রিপোর্ট আসবে জেলার কাছে। এদিকে, একাধিক এফআইআর করা হয়েছে বেআইনিভাবে মাটি কাটার জন্য। ফলে, আগামী দিনে রাজস্ব আরও বেশি আদায় হবে।
  • Link to this news (বর্তমান)