• নাটকীয়ভাবে হাত নাড়ানো থেকে হাইকোর্ট দেখানো, সাজা ঘোষণার আগেও ভাবলেশহীন সঞ্জয়
    এই সময় | ২০ জানুয়ারি ২০২৫
  • দেশ কাঁপানো নৃশংস খুন ও ধর্ষণের দায়ে এখনও পর্যন্ত একমাত্র দোষী সাব্যস্ত সঞ্জয় রায়। সোমবার বেলা সাড়ে ১২টায় আরজি কর হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসককং ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় দোষী সঞ্জয় রায়ের সাজা ঘোষণা করবেন শিয়ালদহ আদালতের বিচারক। কিন্তু তার আগের রাতে সংশোধনাগারে নিরুত্তাপ সঞ্জয়। সূত্রের খবর, এক জেলকর্মীকে সে বলে, ‘...হাইকোর্ট–সুপ্রিম কোর্ট আছে তো!’ 

    তবে এই প্রথমবার নয়, গ্রেপ্তারের পর থেকেই সঞ্জয়ের শারীরিক ভাষা অনেকাংশে ‘ভাবলেশহীন’, ‘নির্লিপ্ত’, মত বিশেষজ্ঞদের। 

    সঞ্জয় এসএসকেএম হাসপাতালের পাশে ৫৫/বি শম্ভুনাথ পন্ডিত স্ট্রিটে ছোটো বাড়িতে থাকত মাকে নিয়ে। স্থানীয়দের দাবি, তার বিদ্যের দৌড় উচ্চ মাধ্যমিক। অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছিল তার স্ত্রী শান্তির। সঞ্জয়ের প্রতিবেশীদের একাংশের দাবি, একটি নয়, একাধিক বিয়ে করেছিল সঞ্জয়। তবে কোনও বিয়েই টেকেনি। সঞ্জয়ের তিন বোন। তাঁদের  দু’জন পুলিশে কর্মরত। তাঁদের মধ্যে একজন এএসআই।  ২০১৮ সালে সিভিক ভলান্টিয়ারের চাকরিতে ঢোকে সঞ্জয়। প্রতিবেশীদের দাবি, অধিকাংশ সময়ে নেশায় ডুবে থাকত সঞ্জয়। 



    ১০ অগস্ট তার গ্রেপ্তারের পর রাজ্যজুড়ে শোরগোল পড়ে গেলেও সঞ্জয়ের বিশেষ হেলদোল দেখা যায়নি বলে জানাচ্ছেন পুলিশ কর্মীদের একাংশ। এরপর বিভিন্ন সময়ে নাটকীয় মুহূর্ত তৈরি করার চেষ্টা করেছে সে। নভেম্বর মাসে শিয়ালদহ আদালতের বাইরে চিৎকার করে সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টাও করতে দেখা গিয়েছিল সঞ্জয়কে। আদালতে ঢোকার মুখে সংবাদমাধ্যম দেখেই বাঁ–হাত তুলে সেলেবদের কায়দায় বলেছিল  ‘আমি এখানে!’ সেই সময়েও সঞ্জয় ছিল ভাবলেশহীন। শনিবার শিয়ালদহ আদালতে বিচারকের সামনে সে বলে, ‘আমি নির্দোষ। আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে। আমি রুদ্রাক্ষের মালা গলায় পরতাম। এই কাজ করলে তো ধস্তাধস্তিতে ছিঁড়ে পড়ত।’ যদিও বিচারক স্পষ্ট জানান, সমস্ত দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। 

    গত শনিবার দুপুরে আরজি কর মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর আদালত থেকে বেরিয়ে পুলিশ কর্মীকে উদ্দেশ করে সঞ্জয় বলেছিল, ‘আমাকে ধাক্কা দেবে না বলে দিচ্ছি! ভালো হবে না!’ রবিবার সাজা ঘোষণার ২৪ ঘণ্টা আগেও নির্লিপ্ত সঞ্জয়। এক জেলকর্মীর বলেন,  ‘ও যে কোনও টেনশনে আছে, তা বোঝার উপায় নেই। পাল্টা আমাদের  হাইকোর্ট দেখাচ্ছে!’ বন্দিদের মাথাপিছু ছ’টি কম্বল দেওয়া হয়। রবিবার রাতে তিনটি কম্বল মেঝেতে বিছিয়ে, একটি কম্বল বালিশ হিসেবে ব্যবহার করে এবং  দু’টি কম্বল গায়ে দিয়ে রাতে ঘুমোতে যায় সঞ্জয়। সোমবার কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে আদালতে নিয়ে যাওয়া হয় সঞ্জয়কে। কালো কাচ দেওয়া গাড়িতে তাকে আদালতে নিয়ে আসা হয়।

  • Link to this news (এই সময়)