প্রকাশ্যে মুরগির মাংস বিক্রি বন্ধ হচ্ছে? যা জানা জরুরি
আজ তক | ২০ জানুয়ারি ২০২৫
Kolkata chicken slaughter ban: কলকাতায় শীঘ্রই বন্ধ হতে পারে প্রকাশ্যে মুরগির মাংস কেটে বিক্রি। 'চিকেন স্লটারহাউজ' বা মুরগির কসাইখানা তৈরির পরিকল্পনা করছে কলকাতা পুরসভা। খোলা বাজার বা রাস্তায় মুরগি কেটে বিক্রির ফলে দৃশ্য দূষণ হয়। ছড়াতে পারে রোগও। সে কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত।
শুক্রবার, বিজেপি কাউন্সিলর মীনা দেবী পুরোহিত পুরসভার মাসিক বৈঠকে এই প্রস্তাব দেন। তিনি বলেন, 'কলকাতার বহু বাজার এলাকায় প্রকাশ্যে মাংস বিক্রি হতে দেখা যায়। অস্বাস্থ্যকরভাবে প্রকাশ্যে মাংস বিক্রির ফলে মাছি আসছে। এলাকায় দুর্গন্ধও ছড়াচ্ছে।'
ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ সমস্যার কথা স্বীকার করে নেন। এরপরেই তিনি জানান, সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশের লখনউ সফরে তিনি দেখে এসেছেন যে, সেখানে মুরগির কসাইখানা রয়েছে। তেমনটা কলকাতাতেও করার পরিকল্পনা করা যেতে পারে বলে জানান তিনি। অতীন ঘোষ বলেন, 'এমন কিছু সংস্থার কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। তাদের এই ধরনের কসাইখানা তৈরির অভিজ্ঞতা রয়েছে।'
কিন্তু মুরগির দোকানের সঙ্গে যে বহু মানুষের জীবিকা জড়িয়ে? সে কথাও উল্লেখ করেন ডেপুটি মেয়র। তিনি বলেন, 'মানুষ জীবিকার তাগিদে এটা করে। কিন্তু কোনও নিয়ম-কানুন ছাড়াই যেখানে-সেখানে এমনভাবে মাংস বিক্রি করতে দেওয়া যাবে না।'
এর আগে কলকাতা পুরসভা পাঁঠার মাংসের দোকানের জন্য এই ধরনের একটি নিয়ম জারি করেছিল। তাতে নির্দেশ দেওয়া হয়, কলকাতা পুরসভা এলাকার সমস্ত মাটনের দোকানে কাঁচ লাগাতে হবে। সেটা না করলে দোকান বন্ধ করে দেওয়া হবে। এরপর দোকানগুলি কাঁচের স্লাইডিং জানলা বসায়।
এদিন সেকথাও উল্লেখ করেন ডেপুটি মেয়র। অতীন ঘোষ জানান, আরও একবার মাংসের দোকানগুলির উপর নজরদারি অভিযান চালানো হবে।
কিন্তু প্রকাশ্যে মাংস বিক্রিতে সমস্যা কী?
১. খোলা রাস্তায়, দোকানে মুরগির মাংস কাটলে দৃশ্য দূষণ হয়। মুরগির আওয়াজ, রক্ত যে বেশ দৃষ্টিকটু, তা বলাই যায়।
২. মুরগির দোকানে সাধারণত পালক, উচ্ছিষ্ট অংশ একপাশে ডাঁই করে রাখা থাকে। সেগুলি সামনের রাস্তাঘাটেও ছড়িয়ে পড়ে। এর ফলে পরিবেশ দূষণ হয়।
৩. মাছির উৎপাত, কৃমির প্রকোপ হতে পারে এই ধরনের দোকান থেকে।
৪. ধর্মীয় কারণে বা যাঁরা আমিষ খান না, তাঁরা এভাবে প্রকাশ্যে মাংস দেখে বিব্রত বোধ করতে পারেন।
তাহলে কি মুরগির মাংসের দোকান উঠে যাবে?
একেবারেই নয়। তবে দোকানে মুরগি কাটা বন্ধ হতে পারে। যদি মুরগির কসাইখানা তৈরি হয়, সেক্ষেত্রে সেখানেই সরাসরি মুরগি পাঠাবে পোল্ট্রি ফার্ম। এরপর সেখানে জবাই ও মুরগি কেটে পিস করা হবে। এরপর কসাইখানা থেকে পাইকারি রেটে মাংস কিনে আনতে হবে দোকানদারদের। তারপর সেটা স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে দোকানে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। এভাবে আগে থেকে কাটা মাংস বিক্রি করা হবে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, জাপান, ইংল্যান্ড ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশেই এই ধরনের নিয়ম আছে। সেখানে স্বাস্থ্য নিয়ে বেশ কড়াকড়ি। ফলে সেখানে যে কোনও ধরনের মাংসই প্রকাশ্যে কাটা নিষিদ্ধ। বড় কসাইখানাতে মাংস কেটে সেগুলি দোকানে সাপ্লাই দেওয়া হয়। ফলে এবার সেই ধরনের নীতিই আসতে পারে কলকাতায়।