• কোচবিহার রাজবাড়ির লাইট অ্যান্ড সাউন্ড সত্যিই কি চালু হবে? জল্পনা
    এই সময় | ২০ জানুয়ারি ২০২৫
  • প্রবীর কুণ্ডু, কোচবিহার

    কোচবিহার রাজবাড়ির দেওয়ালে ‘লাইট অ্যান্ড সাউন্ড’–এর মাধ্যমে রাজ আমলের ইতিহাস তুলে ধরার ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন। কবে হবে, আদৌ হবে কিনা, তাই নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা। শহরের বাসিন্দাদের বক্তব্য, না আঁচালে বিশ্বাস নেই। হঠাৎ কেন এই সন্দেহ? আসলে বর্তমান জেলাশাসক অরবিন্দকুমার মিনার ঘোষণার এক দশক আগেই এর সলতে পাকানোর কাজ শুরু হয়েছিল।

    কখনও কেন্দ্র, কখনও বা রাজ্যের মন্ত্রীরা এ ব্যাপারে প্রতিশ্রুতি দিয়ে গিয়েছেন। তার পরে তোর্সা নদী দিয়ে অনেক জল বয়ে গেলেও কাজের কাজ কিছু হয়নি। রাজ্যে সরকার একাধিকবার রাজপ্রাসাদে লাইট অ্যান্ড সাউন্ড চালু করতে চাইলেও কেন্দ্র থেকে নাকি সবুজ সঙ্কেত মেলেনি।

    ২০১১–এর পর উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী থাকাকালীন গৌতম দেব বেশ কয়েক‍বার কোচবিহারে এসে রাজবাড়িতে ‘লাইট অ্যান্ড সাউন্ড’ত চালুর আশ্বাস দিয়েছিলেন। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দপ্তরের টাকায় প্রকল্প রূপায়ণের আশ্বাসও দেন। পরবর্তীতে ওই দপ্তরের মন্ত্রী হন রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। তিনিও একই স্বপ্ন দেখান কোচবিহারের মানুষকে। বার বার স্বপ্নভঙ্গের পরে তাই নতুন করে বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে বলে জানিয়েছেন শহরের বাসিন্দা রাজকুমার ঘোষ। কেন করা যায়নি লাইট অ্যান্ড সাউন্ড?

    বর্তমানে কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যানের বক্তব্য, ‘আমি যখন মন্ত্রী ছিলাম, তখন বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গেও এ ব্যাপারে কথা বলেছিলাম। তারা তথ্যচিত্রের একটি প্রাথমিক নমুনাও দেখিয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় সরকার অনুমোদন না দেওয়ায় প্রকল্পটি আটকে যায়।’

    এ বার কি তবে শিঁকে ছিঁড়বে? বছর দশেক পরে কোচবিহারের ইতিহাস ফুটে উঠবে রাজপ্রাসাদের লাল ইটের দেওয়ালে? রাজ‍বাড়ির যে কোনও উন্নয়নমূলক প্রকল্পের কাজে দায়িত্বে থাকা ইন্ডিয়া ট্যুরিজ়ম ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনের সঙ্গে জেলাশাসকের এ বিষয়ে ভার্চুয়াল বৈঠকও হয়েছে।

    সূত্রের খবর, ফেব্রুয়ারির গোড়ায় প্রজেক্টটি নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ করতে রাজপ্রাসাদে আসবেন কর্পোরেশনের সদস্যরা। তবে প্রশ্ন উঠছে, এত বছরের পড়ে থাকা উদ্যোগ হঠাৎ করে কী ভাবে বাস্তবায়িত হবে?

    জানা গিয়েছে, বছর তিনেক আগে কেন্দ্রীয় পর্যটন ও সংস্কৃতি মন্ত্রী প্রহ্লাদ সিং প্যাটেল একটি অনুষ্ঠানে কোচবিহারে এসে রাজবাড়িতে ‘লাইট অ্যান্ড সাউন্ড’ চালুর ব্যাপারে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এর পরেই নড়েচড়ে বসে আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া। এর কয়েক মাসের মধ্যে পূর্ত দপ্তরের ইঞ্জিনিয়াররা সমীক্ষার কাজ শুরু করেন।

    অবশেষে এই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ফের আশা জেগেছে। কোচবিহারের ইতিহাস গবেষক ও লেখক দেবব্রত চাকীর কথায়, ‘দীর্ঘদিন ধরেই রাজবাড়িতে লাইট অ্যান্ড সাউন্ড চালু নিয়ে প্রতিশ্রুতি শোনা যাচ্ছে। আমরাও চাই, প্রকল্পটি চালু হোক।’ কোচবিহারের সাংসদ জগদীশ বর্মা বসুনিয়া বলেন, ‘পর্যটকদের পাশাপাশি কোচবিহারের নতুন প্রজন্মও রাজ আমলের ইতিহাস জানতে পার‍বে। সেই সঙ্গে পর্যটকদেরও ভিড় বাড়বে।’

  • Link to this news (এই সময়)