আরজি কর ধর্ষণ কাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত সঞ্জয় রায়কে আমৃ়ত্যু কারাবাসের সাজা শুনিয়েছে শিয়ালদা আদালত। এই রায় দিয়েছেন বিচারক অনির্বাণ দাস। নির্যাতিতার পরিবার, আইনজীবীদের তরফে আদালতের কাছে আবেদন করা হয়েছিল, যেন সর্বোচ্চ সাজা অর্থাৎ ফাঁসির সাজা দেওয়া হয় সঞ্জয়কে। তবে এই অপরাধকে বিরলের মধ্যে বিরলতম বলে মনে করেননি বিচারক। তাই তিনি আমৃত্যু সাজার নিদান দেন।
বিচারক যখন এই রায় ঘোষণা করেন তখন কাঠগড়ায় দাঁড়িয়েছিল সঞ্জয়। সূত্রের খবর, রায় শোনার পর ভেঙে পড়ে সে। কাঁদো কাঁদো মুখ হয়ে যায়। যদিও তার চোখে জল দেখা যায়নি। তারপর সঞ্জয়কে এজলাস থেকে বের করা হয়। তখন বিড়বিড় করে তাকে বলতে শোনা যায়, 'বদনাম হয়ে গেলাম...।'
প্রসঙ্গত, গত শনিবার সঞ্জয় রায়কে আরজি কর মামলায় দোষী সাব্যস্ত করেন বিচারক অনির্বাণ দাস। তিনি সেদিনই সঞ্জয়কে জানিয়ে দিয়েছিলেন, সাজা তাকে পেতে হবে। সোমবার অর্থাৎ আজ রায় ঘোষণার দিন ছিল। সেই মতো সকাল থেকে কড়া নিরাপত্তার বলয়ে ঘিরে ফেলা হয় শিয়ালদা আদালত চত্বর। আদালত কক্ষে নিয়ে আসা হয় সঞ্জয়কে।
এদিন সঞ্জয় রায়কে বলার সুযোগ দেন বিচারক। সঞ্জয় জানায়, সে দোষী নয়। তাকে ফাঁসানো হয়েছে। সে রুদ্রাক্ষের মালা পরে। যদি সে কোনও অন্যায় করত তাহলে সেই মালা ছিঁড়ে যেত। তাকে আইপিএস-রা ফাঁসিয়েছে। একাধিক কাগজে সই করিয়ে নিয়েছে। তবে বিচারপতি এদিনও সাফ করে দেন সঞ্জয়ের সাজা হবে।
সিবিআইয়ের আইনজীবীর তরফে আদালতে জানানো হয়, সঞ্জয় একজন সিভিক ভলান্টিয়ার হিসেবে কাজ করত। তার কাজ মানুষকে রক্ষা করা। অথচ সেটা না করে সে ধর্ষণ ও খুনের মতো অপরাধ করেছে। তাই তার ফাঁসির সাজা হওয়া উচিত। কারণ, এটা বিরলের মধ্যে বিরলতম অপরাধ। পাল্টা সঞ্জয়ের আইনজীবী জানান, বিরলের মধ্যে বিরলতম হলেই যে ফাঁসির সাজা দিতে হবে এমনটা নয়। এরপর বিচারপতি সেই পয়েন্টগুলোকে লিখিত আকারে দিতে বলেন।
এরপর সাজা ঘোষণা করেন বিচারক অনির্বাণ দাস। ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৬৪ (ধর্ষণ), ৬৬ (ধর্ষণের পর মৃত্যু) এবং ১০৩ (১) (খুন) ধারায় দোষী সাব্যস্ত করেন সঞ্জয়কে। এর মধ্য়ে ৬৬ ধারায় - আমৃত্যু কারাবাসের সাজা দেওয়া হয়। বিচারক আরও জানান, তিনি এই অপরাধকে বিরলের মধ্যে বিরলতম মনে করছেন না। তাই সর্বোচ্চ সাজা দিচ্ছেন না।