• '৩ মামলায় রাজ্য পুলিস পারলেও, আরজি করে ফাঁসির সাজা দেওয়াতে পারল না ব্যর্থ সিবিআই!'
    ২৪ ঘন্টা | ২০ জানুয়ারি ২০২৫
  • প্রবীর চক্রবর্তী: সব মহলের দাবি ছিল ফাঁসির সাজার! তবে নৃশংস, বর্বরোচিত হলেও আরজি কর-কাণ্ডে মৃত্যুদণ্ড নয়, দোষী সঞ্জয় রায়ের যাবজ্জীবন সাজা ঘোষণা করেন বিচারক অনির্বাণ দাস। সেই সঙ্গে ১৭ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ। সিবিআই-এর তরফে এই ঘটনাকে বিরলের মধ্যে বিরলতম বলে দাবি করা হলেও, আদালতে এদিন একথা ওঠে যে এটি বিরলতম নয়। সিবিআইয়ের দেওয়া তথ্য প্রমাণের উপর ভিত্তি করেই এদিন সাজা ঘোষণা করলেন বিচারক অনির্বাণ দাস। 

    বিচারক অনির্বাণ দাসের পর্যবেক্ষণে, 'নির্যাতিতা সরকারি হাসপাতালে ৩৬ ঘণ্টা ধরে ডিউটিতে ছিলেন শুধু মানুষের সেবা করার জন্য। অত্যন্ত মেধাবী ছাত্রী ছিলেন। তাঁর মৃত্যু শুধু পরিবারের নয়, গোটা সমাজের ক্ষতি। এই ঘটনা সমাজকে নাড়িয়ে দিয়েছে।' তবে সিবিআই-এর ফাঁসির সাজার দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সঞ্জয় রায়ের আইনজীবী তাকে সংশোধনের সুযোগ দিয়ে অন্য কোনও সাজার আবেদন জানান। এদিকে সাজা ঘোষণার পরই বিভিন্ন মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। সিবিআই-এর উদ্দেশে তোপ দেগেছেন কুণাল ঘোষ, দেবাংশু ভট্টাচার্য। তাঁদের সবারই বক্তব্য গুরুতর পাপে লঘু সাজা হয়ে গেল! এজন্য সিবিআই-ই দায়ি। সিবিআই-এর ব্যর্থতা।

    কুণাল ঘোষ বলেন, "বিচারকের সিদ্ধান্তের ওপরে কিছু বলা যায় না। মুখ্যমন্ত্রী, আমরা, গোটা বাংলা ফাঁসির দাবি করেছে। সঞ্জয়ের দোষ প্রমাণিত হয়েছে। এখন আইন অনুযায়ী দোষীকে কী শাস্তি দেওয়া হবে বিচারকের সিদ্ধান্ত। এই পৈশাচিক ঘটনায় ফাঁসি চেয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এই ধরণের অপরাধীদের সমাজে বেঁচে থাকার অধিকার নেই। জয়নগর, গুড়াপ সহ অন্যান্য ঘটনায় ফাঁসির সাজা হয়েছে। এক্ষেত্রেও ফাঁসি চেয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। আরজি করের ক্ষেত্রে দেখলাম বিচারক ফাঁসি দিলেন না। তার ফাসির সাজা দেননি বিচারক। সিবিআই হায়ার কোর্টে যাবে কি না, এটা তাদের বিষয়। আমরা দৃষ্টান্তমূলক সাজা চাই। ফাঁসির সাজার জন্য অপেক্ষা করছিলেন সবাই। কিন্তু সর্বোচ্চ সাজা দিলেন না বিচারপতি। সর্বোচ্চ সাজা সবার দাবি ছিল। ধর্ষণ ও খুনে কী কী সাজা দেওয়া হবে, তার একটা গাইডলাইন রয়েছে। আইনে আছে।"

    কুণাল ঘোষ আরও বলেন, "বিচারক ১৭ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের কথা বলেছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন এই আইন অনুযায়ী ক্ষতিপূরণের কথা বলেছিলেন, তখন ডাক্তারদের একাংশ ও তৃণমূল বিরোধীরা কুৎসা করেছে। মিথ্যা আক্রমণ করেছে। রাজ্য সরকার বা কলকাতা পুলিস কাউকে বাঁচানোর চেষ্টা করেনি। এই রায়ের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই। বিচার প্রক্রিয়া কোর্টের এক্তিয়ার।"

    ওদিকে দেবাংশু সোশ্যাল মিডিয়ায় সাজা ঘোষণার পর কটাক্ষের সুরে তোপ দাগেন, "সিবিআই ফাঁসি দেওয়াতে পারল না সঞ্জয়কে। ছিঃ! উলটোদিকে রাজ্যে অন্য তিনটি ধর্ষণ ও খুনের মামলায় রাজ্য পুলিস অপরাধীদের জন্য আদালত থেকে ফাঁসির সাজা আদায় করে আনতে পেরেছে। কিন্তু এরকম একটা ভয়ংকর সেনসিটিভ মামলাতেও ফাঁসির মতো অনিবার্য সাজা দেওয়াতে পারল না সিবিআই। আবারও প্রমাণ হল সিবিআই ব্যর্থ, ব্যর্থ, ব্যর্থ..."

  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)