• ফাঁসি নয়, যাবজ্জীবন কারাদণ্ড সঞ্জয়ের
    প্রতিদিন | ২০ জানুয়ারি ২০২৫
  • অর্ণব আইচ: আর জি কর তরুণী চিকিৎসক ধর্ষণ-খুন মামলায় (RG Kar Case) দোষী সঞ্জয় রায়কে আমৃত্যু জেলের সাজা আদালতের। ঘটনার ১৬৪ দিনের মাথায় দোষীর সাজা ঘোষণা করলেন শিয়ালদহ আদালতের বিচারক অনির্বাণ দাস। গত শনিবার, সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৬৪ (ধর্ষণ), ৬৬ (ধর্ষণের জন্য মৃত্যু), ১০৩ (১) (খুন) ধারায় দোষী সাব্যস্ত করা হয় তাকে।

    সাজা ঘোষণার আগে এদিন কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে নিজেকে বারবার নির্দোষ বলে দাবি করে সঞ্জয়। ফের রুদ্রাক্ষ তত্ত্ব খাঁড়া করার চেষ্টা করে সে। কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে কেঁদেও ফেলে সঞ্জয়। প্রথমার্ধে ৩২ মিনিট শুনানির পর আদালত কক্ষ ফাঁকা করে দিতে বলেন বিচারক অনির্বাণ দাস। দুপুর ২.৪৫ মিনিট নাগাদ সাজা ঘোষণা করা হবে বলে জানান তিনি। 

    প্রসঙ্গত, গত বছরের ৯ আগস্ট, হাসপাতালের সেমিনার হল থেকে তরুণী চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার করা হয়। অভিযোগ, ধর্ষণ করে খুন করা হয় তাঁকে। তদন্তে নামে কলকাতা পুলিশ। ১০ আগস্ট এই ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে গ্রেপ্তার করা হয়। গত ১২ আগস্ট নির্যাতিতার বাড়িতে যান মুখ্যমন্ত্রী। শোকস্তব্ধ পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। গত ১৩ আগস্ট CBI তদন্তের নির্দেশ দেয় আদালত।

    গত ১৪ আগস্ট রাতদখল করেন মহিলারা। ওই রাতেই আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে চলে ব্যাপক ভাঙচুর। গত ১৮ আগস্ট এই ঘটনায় সুপ্রিম কোর্টে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের হয়। গত ২ এবং ৩ সেপ্টেম্বর জুনিয়র চিকিৎসকরা লালবাজার অভিযান করেন। ১০ সেপ্টেম্বর স্বাস্থ্যভবনের সামনে জুনিয়র চিকিৎসকরা অবস্থান আন্দোলন শুরু করেন। ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর নবান্নে জুনিয়র ডাক্তারদের বৈঠকের ডাক দেন। তবে দুদিনই বৈঠক ভেস্তে যায়।

    ১৪ সেপ্টেম্বর দুপুরে স্বাস্থ্যভবনে চিকিৎসকদের অবস্থান মঞ্চে আচমকা পৌঁছন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত ১৬ সেপ্টেম্বর সিপি বিনীত গোয়েলকে সরানো হয়। গত ২০ সেপ্টেম্বর স্বাস্থ্যভবনের সামনে জুনিয়র ডাক্তাররা অবস্থান প্রত্যাহার করেন। আর জি কর আন্দোলনের মাঝে গত ২৭ সেপ্টেম্বর সাগর দত্ত হাসপাতালে চিকিৎসক ও নার্সদের উপর হামলা করা হয়। মারধরের প্রতিবাদে কর্মবিরতি শুরু হয়। স্বাস্থ্যসচিবের পদত্যাগ, নিরাপত্তা-সহ একাধিক দাবিতে গত ৫ অক্টোবর ধর্মতলায় অনশন আন্দোলন শুরু করেন জুনিয়র ডাক্তাররা।

    গত ৭ অক্টোবর মূল অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়ের নাম উল্লেখ করে সিবিআই চার্জশিট পেশ করে আদালতে। গত ১৯ অক্টোবর মুখ্যসচিবের মাধ্যমে অনশনকারীদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত ২১ অক্টোবর মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে জুনিয়র ডাক্তারদের ফের বৈঠক হয়। অনশনকারীরা তার লাইভ সম্প্রচার দেখেন। বৈঠকের পর ওইদিনই অনশন প্রত্যাহার করেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। গত ৪ নভেম্বর সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়ের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করা হয়। ১১ নভেম্বর শিয়ালদহ আদালতে শুরু হয় বিচার প্রক্রিয়া। ১৮ জানুয়ারি সঞ্জয় রায়কে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত। সোমবার হল সাজা ঘোষণা।
  • Link to this news (প্রতিদিন)