বাবুল হক, মালদহ: সোমবার বিকালে মালদহে নেমেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পৌঁছে গেলেন মৃত কাউন্সিলর দুলাল সরকারের বাড়ি। চৈতালী সরকারের সঙ্গে বেশ কিছু সময় কথা বললেন। এদিন বিকেলে চারটের কিছু আগে মুখ্যমন্ত্রীর কনভয় ওই বাড়ির সামনে এসে থামে। মুখ্যমন্ত্রী নেমে বাড়ির ভিতর ঢুকে যান। রাজনৈতিকভাবে এই ঘটনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এমনই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
বিকেল সাড়ে চারটের পর মুখ্যমন্ত্রী মৃত কাউন্সিলরের বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসেন। তিনি বলেন, “বাবলার অসম্পূর্ণ কাজ চৈতালী করবেন। বাবলা আমার চিরকালের পরিচিত। ও আমাদের একজন নিরলস কর্মী ছিলেন। এলাকায় মানুষের কাছেও পপুলার ছিলেন।” মুখ্যমন্ত্রী এদিন আরও বলেন, “মালদহের রাজনীতিটা আমি ঠিক বুঝি না। এমপি ইলেকশনও আপনারা দেখলেন, দুটো সিটেই আমরা হারলাম। ইংলিশবাজারে এমএলএ ইলেকশনেও হেরেছি। কিন্তু কাউন্সিলর ইলেকশন জিতে যাই। রহস্যটা কী?”
এছাড়াও মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমি চৈতালীর সঙ্গে ডিটেলস আলোচনা করলাম। আপনারা দেখতে পারলেন আমার সঙ্গে কেউ আসেনি। আমি একা এসেছি। আমার সঙ্গে এসপি, আইবি এসেছেন।” যে যতই বড় হোক না কেন, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাও জোরালোভাবে বলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
২ জানুয়ারি মালদহের ইংরেজবাজার পুরসভার তৃণমূল কাউন্সিলর দুলাল ওরফে বাবলা সরকার খুন হন। সেদিন সকালে নিজের কারখানায় যাচ্ছিলেন কাউন্সিলর। চার দুষ্কৃতী কাউন্সিলরকে ধাওয়া করে একাধিকবার গুলি চালায়। সেই খুনের পরেই মালদহের রাজনীতিতে জোর চাঞ্চল্য ছড়িয়েছিল। ঘটনার কথা জানতে পেরে অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। জেলা পুলিশ সুপারকে ‘অপদার্থ’ বলে কটাক্ষ করেছিলেন। তারপর ঘটনার তদন্তে একাধিক তথ্য উঠে আসে।
তৃণমূল নেতা খুনে পরবর্তীকালে গ্রেপ্তার হন জেলার তৃণমূলেরই অপর দুই নেতা নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারি ও স্বপন শর্মা। তাঁরা ঘটনার অন্যতম চক্রী বলে তদন্তে উঠে এসেছে। এখনও অবধি ওই ঘটনায় মোট ৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। দিন কয়েক আগে বিহারের পূর্ণিয়া থেকে গ্রেপ্তার হয়েছেন শার্প শুটার মহম্মদ আসরার। খুনের ঘটনার পর থেকেই দুলাল সরকারের স্ত্রী চৈতালী সরকার একাধিক মন্তব্য করেছিলেন। তিনি ঘটনার পিছনে চক্রান্তের কথাও বলেছিলেন। এদিন সেই চৈতালী সরকারের সঙ্গেই দেখা করলেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিন চৈতালী সরকার বলেন, “আমার যা বলার আমি দিদিকে বলেছি। মুখ্যমন্ত্রী ধৈর্য ধরে শুনেছেন। আমি এদিনের অপেক্ষায় ছিলাম। দিদিকে অনেক ধন্যবাদ, আমার কথা শোনার জন্য। আমার পাশে দাঁড়িয়েছেন।”