‘সঞ্জয় একা দোষী নয়’, বলছেন বোন, সাজা শুনেও ‘নির্লিপ্ত’ মা
প্রতিদিন | ২০ জানুয়ারি ২০২৫
নিরুফা খাতুন: আর জি কর তরুণী চিকিৎসক ধর্ষণ-খুন মামলায় গত শনিবারই সঞ্জয়কে দোষী সাব্যস্ত করে শিয়ালদহ আদালত। সোমবার সাজা ঘোষণা। তার ফাঁসি হবে নাকি যাবজ্জীবন, তা নিয়ে সকাল থেকেই উৎকণ্ঠায় ছিলেন সঞ্জয়ের পরিবারের লোকজন। প্রতি মুহূর্তে নজর রেখেছিলেন টেলিভিশনের পর্দায়। সওয়াল জবাব শেষে বিচারক অনির্বাণ দাস সঞ্জয়ের আমৃত্যু কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন। মৃত্যুদণ্ড না হওয়ায় যেন কিছুটা স্বস্তিতে সঞ্জয়ের বোন। নির্লিপ্ত তার মা।
শিয়ালদহ আদালতের ২১০ নম্বর কক্ষে এদিন রায় পড়েন শোনান বিচারক অনির্বাণ দাস। আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগও পায় সঞ্জয় রায়। প্রথম থেকে একাধিকবার নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করে। রুদ্রাক্ষ তত্ত্বও আরও একবার খাঁড়া করার চেষ্টা করে সঞ্জয়। একসময় স্বপক্ষে সওয়াল করতে গিয়ে সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে একের পর এক বোমা ফাটাতে থাকে। দাবি করে, তাকে হেফাজতে নেওয়ার সময় মেডিক্যাল টেস্ট করানো হয়নি। জোর করে কাগজপত্রে সই করানো হচ্ছে বলেও দাবি করে। সিবিআই এবং নির্যাতিতার আইনজীবীরা ফাঁসির পক্ষে জোরাল সওয়াল করেন। তবে তার পালটা বিরোধিতা করেন সঞ্জয়ের আইনজীবী। মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে সঞ্জয়ের বিকল্প শাস্তির আর্জি জানান। প্রথমার্ধে ৩৪ মিনিট শুনানি হয়। তারপর কিছুক্ষণের জন্য সওয়াল জবাব স্থগিত রাখা হয়। এরপর দুপুর ২টো ৪৫ মিনিট নাগাদ ফের আদালত কক্ষে পৌঁছন বিচারক। সঞ্জয়কে আমৃত্যু কারাদণ্ডের সাজা শোনান।
এদিন আদালতে উপস্থিত ছিলেন না সঞ্জয়ের পরিবারের কেউই। গ্রেপ্তারির পর থেকে প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে সঞ্জয়ের সঙ্গে একবারও দেখা করেননি তাঁরা। মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ নেই বলে আদালতে দাঁড়িয়ে নিজেই খোদ দাবি করে সঞ্জয়। তবে তা সত্ত্বেও দুপুর সাড়ে বারোটা থেকে টেলিভিশনের পর্দায় নজর ছিল সঞ্জয়ের বোনের। এর আগে সঞ্জয়ের দিদি দাবি করেছিলেন মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হলেও উচ্চ আদালতে যাবেন না। নির্যাতিতার পরিবারের কাছে ক্ষমাও চেয়ে নেন। তবে সোমবার দাদার মৃত্যুদণ্ড না হওয়ায় যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন সঞ্জয়ের বোন। রায় ঘোষণার পর তিনি বলেন,, “আদালত যা মনে করেছে সে অনুযায়ী রায় দিয়েছে। আমরা এখনও বিশ্বাস করি সঞ্জয় একা দোষী নয়। অধ্যায় শেষ হল না। এখনও সময় আছে। সকলের উচিত সবাই মিলে আসল সত্য খুঁজে বের করা।” চাইলে এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে যেতে পারে সঞ্জয়। তবে তার বোন উচ্চ আদালতে যাওয়ার বিষয়ে কিছু জানাননি।