• ফাঁসি নয়, কেন সঞ্জয়কে আমৃত্যু কারাদণ্ড? এহেন নৃশংস ঘটনায় কী ব্যাখ্যা বিচারকের?
    প্রতিদিন | ২০ জানুয়ারি ২০২৫
  • রমেন দাস: ফাঁসি নয়, যাবজ্জীবন। আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হওয়া সঞ্জয় রায়কে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিল শিয়ালদহ আদালত। কিন্তু কেন? সোমবার রায় ঘোষণার সময় বিচারক অনির্বাণ দাস বলেন, “দেখে মনে হয়নি, বিরলের মধ্যে বিরলতম ঘটনা।” বলে রাখা ভালো, ভারতীয় ন্যায় সংহিতার অনুযায়ী, ‘রেয়ারেস্ট অফ দ্য রেয়ার’ বাংলা তর্জমায় বিরলতম অপরাধের ক্ষেত্রে ফাঁসির সাজা দেওয়া হয়। কোন অপরাধ কতটা ভয়াবহ? সমাজে তার নেতিবাচক প্রভাব কতটা? সাক্ষ্য-প্রমাণ কতটা জোরাল? সেই সমস্ত সিদ্ধান্ত বিচারকই নেন। 

    এদিন তুমুল হট্টগোলের মধ্যে শিয়ালদহ আদালতের ২১০ নম্বর কক্ষে সাজা ঘোষণা করেন বিচারক। প্রায় ৩২ মিনিট সিবিআই, নির্যাতিতার পরিবার এবং সঞ্জয়ের আইনজীবীরা সওয়াল জবাব করেন। এজলাসে নিজের কথা তুলে ধরে সঞ্জয়। কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে কেঁদেও ফেলে। নিজেকে বারবার নির্দোষ বলে দাবি করতে থাকে। সঞ্জয়ের আইনজীবীরা নিজের মক্কেলকে সংশোধনের সুযোগ দেওয়ার আবেদন করেছিলেন। এরপর ২টো ৪৫ মিনিটে রায় ঘোষণা করেন বিচারক। সঞ্জয়ের ফাঁসি নয়, আমৃত্যু কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন তিনি। 

    তদন্তে সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে প্রত্যক্ষ প্রমাণ উদ্ধার করতে পারেনি সিবিআইয়ের তদন্তকারী আধিকারিকরা। পারিপার্শ্বিক প্রমাণের উপর ভিত্তি করেই আর জি কর মামলার রায়দান হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া ছেঁড়া ব্লুটুথ ইয়ারফোন, সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়া তার গতিবিধি, পোশাকে রক্তের দাগের মতো ১১টি পারিপার্শ্বিক প্রমাণের উপর ভিত্তি করে চার্জগঠন হয়। তার উপর ভিত্তি করে রায়দান।

    বিবাদী পক্ষের আইনজীবী কবিতা সরকার, সেঁজুতি চক্রবর্তীরা বারবার মক্কেলকে সংশোধনের সুযোগ দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করছিলেন। বলেছিলেন, সুপ্রিম কোর্টের নির্দিষ্ট গাইডলাইন আছে। এটা বিরলের মধ্যে বিরলতম কেস নয়। সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে কোনও প্রত্যক্ষ প্রমাণ নেই। যা প্রমাণ মিলেছে সবটাই ‘সারকামস্টেনশিয়াল এভিডেন্স’। ভিসেরা রিপোর্ট আসেনি। রায়দানের সময় এই সমস্ত তথ্যই আইনের দাঁড়িপাল্লায় মেপে দেখেছেন বিচারক। ভারতীয় বিচারব্যবস্থার মনে তিলমাত্র সন্দেহ থাকলে, মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় না। এক্ষেত্রেও তেমনটাই হল বলে মনে করা হচ্ছে।
  • Link to this news (প্রতিদিন)