রোগীর অবস্থা সরাসরি চিকিৎসকের কাছ থেকে জানতে পারবেন পরিজন, ফের বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যালে চালু সাক্ষাৎ পর্ব
বর্তমান | ২১ জানুয়ারি ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঁকুড়া: ফের বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে শুরু হতে চলেছে চিকিৎসকদের সঙ্গে রোগীর পরিজনদের সাক্ষাৎ পর্ব। আগে বাঁকুড়া মেডিক্যালে ওই ধরনের সাক্ষাতের ব্যবস্থা করা হতো। কিন্তু, পরে তা বন্ধ হয়ে যায়। তারফলে আইসিইউ, ভেন্টিলেশন সহ অন্যান্য ‘ক্রিটিক্যাল কেয়ার’ বিভাগে ভর্তি রোগীর সম্পর্কে পরিজনরা তেমন কিছু জানতে পারতেন না। এবার থেকে সরাসরি চিকিৎসকের মুখ থেকে তাঁরা রোগীর শারীরিক অবস্থা ও সর্বশেষ পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে পারবেন। তারফলে সকলের সুবিধা হবে বলে মনে করা হচ্ছে। রোগীর আত্মীয়দের স্বস্তি পাওয়ার পাশাপাশি কর্তৃপক্ষের উপর থেকে চাপ কিছুটা কমবে বলেও আধিকারিকরা মনে করছেন। কারণ অনেক সময় রোগীর মৃত্যুর পূর্বে সঙ্কটজনক অবস্থার কথা না জানানোর অভিযোগ তুলে আত্মীয়রা বিক্ষোভ দেখান। রোগীর পরিজনদের তরফ থেকে চিকিৎসার গাফিলতির অভিযোগও তোলা হয়। চিকিৎসকের সঙ্গে দৈনিক কথাবার্তা হলে ওই ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি বহুক্ষেত্রে এড়ানো যাবে বলে ওয়াকিবহাল মহলের অভিমত।
বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের এমএসভিপি অর্পণকুমার গোস্বামী বলেন, আপাতত হাসপাতালের তিনটি জায়গায় আমরা রোগীর আত্মীয়দের সঙ্গে চিকিৎসকের সাক্ষাতের ব্যবস্থা করতে চলেছি। গাইনি, মেডিসিন ও আইসোলেশন ওয়ার্ড সংলগ্ন কোনও জায়গায় তা করা হবে। দুপুর ১টা থেকে ২টো পর্যন্ত ওই সাক্ষাৎকার পর্ব চলবে বলে প্রাথমিকভাবে ঠিক হয়েছে। তবে সময়সূচি পরিবর্তিত হতে পারে। আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকেই সাক্ষাৎ পর্ব শুরুর চেষ্টা চলছে। সম্প্রতি মেডিক্যাল কলেজ কাউন্সিলের বৈঠক হয়। সেখানে এব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। বিষয়টি দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য সকলেই একমত হয়েছেন।
উল্লেখ্য, বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে হাজারেরও বেশি বেড রয়েছে। তারমধ্যে শতাধিক বেড সঙ্কটজনক রোগীদের জন্য বরাদ্দ থাকে। ওইসব বেড ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটগুলিতে মূলত থাকে। দুর্ঘটনাগ্রস্ত বা জটিল কোনও শারিরীক সমস্যা নিয়ে মেডিক্যালে আসা রোগীকে ওইসব বিভাগে রেখে চিকিৎসা করা হয়। সাধারণ বেডে চিকিৎসাধীন রোগীর ক্ষেত্রে পরিবার পরিজনদের যে কোনও একজন তাঁর সঙ্গে থাকতে পারেন। পুরুষ ও মহিলা ওয়ার্ড ভেদে অবশ্য এক্ষেত্রে পৃথক নিয়ম ও বেশকিছু বিধিনিষেধ রয়েছে।
তবে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটগুলিতে ভর্তি রোগীদের সঙ্গে বেডে অন্য কেউ থাকতে পারে না। সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া আটকাতে ও চিকিৎসা সংক্রান্ত কারণে ওইসব বিভাগের ভিতরে চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্য কর্মীদের বাইরে কাউকে প্রবেশের অনুমতি সচরাচর দেওয়া হয় না। ফলে সেখানে ভর্তি রোগীদের সম্পর্কে আত্মীয় পরিজনরা রোগীর পরিস্থিতি জানতে পারেন না। তাঁদের দুশ্চিন্তায় থাকতে হয়। এবার থেকে তাঁরা দিনে অন্তত একবার নিকটজনের শারীরিক অবস্থার খুঁটিনাটি জানতে পারবেন। জরুরি বিভাগের পাশাপাশি সাধারণ ওয়ার্ডগুলিতে ভর্তি রোগীদের পরিবারের লোকজনও চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে আশ্বস্ত হতে পারবেন।