• বালি পাচার রুখতে অজয়, ময়ূরাক্ষীতে উড়ছে ড্রোন, আচমকা অভিযানের নির্দেশ জেলাশাসকের
    বর্তমান | ২১ জানুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, সিউড়ি: বালি পাচার রুখতে এবার প্রযুক্তির সাহায্য নিল জেলা প্রশাসন। অবৈধভাবে বলি তোলা ও মজুতের বিষয়ে তথ্য জানতে বীরভূমে ড্রোন ওড়ানো হচ্ছে। সেইসঙ্গে জেলাজুড়ে সারপ্রাইজ রেড বা আচমকা অভিযান শুরু হয়েছে। খোদ জেলাশাসক বিধান রায় রাতে অভিযান চালাচ্ছেন। রবিবার ছুটির রাতেও তিনি সেকমপুর এলাকায় অভিযানে শামিল হয়েছিলেন। হাতেনাতে তার সুফলও মিলতে শুরু করেছে। এতে অবৈধভাবে নদী থেকে বালি তোলার কাজে কিছুটা হলেও রাশ টানা সম্ভব হয়েছে। বালি পাচারেও ভাটা পড়েছে। যদিও জেলা প্রশাসন বালি তোলা ও পাচার পুরোপুরি বন্ধ করতে চাইছে। সেক্ষেত্রে নদী থেকে অবৈধভাবে বালি তোলা ও পাচার রুখতে নিত্যনতুন পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। 


    বালি পাচার ইস্যুতে সম্প্রতি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্ন থেকে কড়া বার্তা দেন। তারপরই জেলা প্রশাসন ও পুলিস কড়া পদক্ষেপ নেয়। একদিকে জেলা পুলিসের তরফেও সারপ্রাইজ নাকা চেকিং চালু করা হয়েছে। দিনের বিভিন্ন সময় জেলাজুড়ে নাকা চলছে। এছাড়াও জেলা প্রশাসনের তরফে একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তবে নদনদী থেকে অবৈধভাবে বালি তোলায় নজরদারি আরও জোরদার করতে ড্রোনের সাহায্য নেওয়া হয়েছে। জেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া অজয় ও ময়ূরাক্ষী নদ ও নদীর উপর ড্রোন ওড়ানো হচ্ছে। নদীবক্ষের পাশাপাশি সংলগ্ন ঝোপঝাড়গুলিতেও ড্রোনের মাধ্যমে নজর রাখা হচ্ছে। আশপাশে কোথাও অবৈধভাবে বালি মজুত করে রাখা হচ্ছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সেইসঙ্গে বৈধ ঘাটগুলিতেও ড্রোনের সাহায্যে নজর রাখা হচ্ছে। পুলিসের সহযোগিতা নেওয়া হচ্ছে। 


    এক আধিকারিক জানান, সিউড়ি, সাঁইথিয়া ও মহম্মদবাজার এলাকায় প্রায় দিনই ড্রোন ওড়ানো হচ্ছে। হেঁটে নদনদীর আশপাশে সব এলাকায় পৌঁছনো সম্ভব হয় না। কিন্তু ড্রোনের সাহায্যে দূর থেকে সহজেই নজরদারি চালানো সম্ভব হয়। উপর থেকে স্পষ্ট বোঝা যায়, কোথায়, কীভাবে বালি তোলা হচ্ছে। এভাবে নজরদারিতে অবৈধ কারবারিরা অভিযানের গতিবিধি বুঝে উঠতে পারে না। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে পরবর্তীতে পরিকল্পনা করে বালি পাচার রুখে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে। এছাড়াও সরাসরি ঘাটেও অভিযান চালানো হচ্ছে। এখন শুধু দিনেরবেলা ড্রোনের সাহায্যে নজরদারি চালানো হচ্ছে। আগামী দিনে উন্নত প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে রাতেও নজরদারি চালানোর ভাবনা রয়েছে।


    সিউড়ির মহকুমা শাসক সুপ্রতীক সিনহা বলেন, বৈধ ও অবৈধ ঘাটগুলিতে নজর রাখা হচ্ছে। ড্রোনের সাহায্যে দূর থেকেই নজরদারি চালানো সম্ভব হচ্ছে। তারপর সময় বুঝে অভিযান চালানো হচ্ছে। বিভিন্ন সময় অভিযান চালিয়ে অবৈধভাবে বালি তোলার কাজে ব্যবহার করা যন্ত্রাংশও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে অভিযোগও দায়ের করা হয়েছে। এছাড়াও অনেক ক্ষেত্রে জরিমানাও করা হয়েছে। -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)