বর্ধমান শহরে লাইফলাইন বাঁকা বাঁচাতে কড়া প্রশাসন, আবর্জনা ফেললেই ফাইন
বর্তমান | ২১ জানুয়ারি ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, বধর্মান: বাঁকা নিছকই একটা খাল নয়। এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে বর্ধমানের নানা ইতিহাস। এক সময় বাঁকা দিয়েই শহরে বাণিজ্য হতো। নৌকা চলত। নতুন প্রজন্ম সেকথা শুনলে হয়তো মুচকি হাসবে। বাঁকার বর্তমান অবস্থা দেখে অনেকে প্রশ্ন তুলতে পারে, এমনটা হতে পারে নাকি? এই প্রশ্ন ওঠা অস্বাভাবিকও নয়। কারণ বাঁকা এখন ছোট খালে পরিণত হয়েছে। যতদিন যাচ্ছে ততই তা মজে যাচ্ছে। প্রতিদিনই শহরের নোংরা অবর্জনা পড়ছে খালে। রাতে নিয়ম করে বহু ব্যক্তি ভ্যানে আবর্জনা নিয়ে এসে খালে ফেলে। এতদিন কেউ দেখার ছিল না। নিজেদের মতো করে যে যার ইচ্ছে মতো আবর্জনা ফেলে বাড়ি ফিরত। কিন্তু আর নয়। বাঁকা বাঁচাতে নতুন নিয়ম আনছে প্রশাসন। আপাতত খালের পাশে পোস্টার দেওয়া হবে। তাতে লেখা থাকবে, ‘বাঁকায় আবর্জনা ফেলা অপরাধ। ধরা পড়লে মোটা টাকা জরিমানা হবে’। কয়েক দিন আগে জেলাশাসক আয়েশা রানি এ বর্ধমান পুরসভার চেয়ারম্যান পরেশচন্দ্র সরকারকে এমনই পরামর্শ দিয়েছেন। জেলাশাসক বলেন, শহরবাসীকে সচেতন হতে হবে। শহরের প্রতি নূন্যতম ভালোবাসা থাকলে তারা এভাবে বাঁকায় আবর্জনা ফেলবে না। এই খাল বাঁচানোর জন্য সবার উদ্যোগ নেওয়া উচিত। শহরবাসী দায়িত্বশীল হলে প্রশাসনকে পদক্ষেপ নিতে হতো না।
পুরসভার চেয়ারম্যান পরেশচন্দ্র সরকার বলেন, কয়েক দিনের মধ্যেই পোস্টার দেওয়া হবে। পুলিসও যাতে নজরদারি চালায় তা দেখার জন্য থানাকে বলা হবে। সবাই উদ্যোগী না হলে বাঁকাকে বাঁচানো যাবে না। এভাবে আবর্জনা ফেলা উচিত নয়।
শহরের বাসিন্দারা বলেন, অনেক আগেই প্রশাসনের উদ্যোগ নেওয়া উচিত ছিল। খালের পাড় দখল হয়ে গিয়েছে। তা ভরাট করেও নির্মাণ করা হয়েছে। সেই কারণেই বর্ষার সময় বাঁকার জলে শহরের বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়। এবছরও শহরের বিস্তীর্ণ এলাকায় জল ঢুকেছিল। প্রশাসন নজর না দিলে কয়েক বছরের মধ্যে খালের অস্তিত্ব থাকবে কি না তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। নিকাশি ব্যবস্থার ক্ষেত্রে বাঁকা বর্ধমানের লাইফলাইন। সেটা ভরাট হয়ে গেলে শহরের বাসিন্দাদের খেসারত দিতে হবে। বিভিন্ন বাজারের আবর্জনা খালে ফেলা হয়। এমনকী, অনেক নার্সিংহোমের পরিত্যক্ত জিনিসও বাঁকায় ফেলা হয় বলে অভিযোগ। খালে প্লাস্টিকের স্তূপ জমা হয়ে রয়েছে। পুরসভার চেয়ারম্যান বলেন, প্রথমে কয়েকদিন আমরা আবর্জনা না ফেলার জন্য প্রচার করব। তারপরও কাজ না হলে জরিমানা করা হবে। বীরহাটার কাছে ব্রিজের উপর থেকে আবর্জনা ফেলা হয়। প্রয়োজনে সেখানে সাদা পোশাকের পুলিস থাকবে। বাঁকা আমাদের বাঁচাতেই হবে। তা নাহলে পুরো বর্ধমান শহরের বাসিন্দারা সমস্যায় পড়বে। বর্ষার সময় শহর জলমগ্ন হয়ে যাবে। -নিজস্ব চিত্র