বিল বকেয়া, ইন্টারনেট-টেলিফোন বন্ধ দক্ষিণ দিনাজপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে
বর্তমান | ২১ জানুয়ারি ২০২৫
সংবাদদাতা, পতিরাম: পরিকাঠামোহীন, অভিভাবকহীন দক্ষিণ দিনাজপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য কাজে যোগ না দেওয়ায় আগেই বন্ধ হয়েছে অতিথি অধ্যাপক থেকে শুরু করে কর্মীদের বেতন। এবার বিল না মেটানোয় থেমে গেল ইন্টারনেট, টেলিফোন পরিষেবা। শুধু তাই নয়, অর্থের অভাবে সঠিক সময়ে চুক্তি রিনিউ না করায় ওয়েবসাইটের পরিষেবাও বন্ধ হয়েছে। সামনেই পরীক্ষা, তার আগে শুরু হবে অনলাইন ফর্ম ফিলাপ। ওয়েবসাইট বন্ধ থাকায় এবারে চিন্তায় পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। অন্যদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক বিষয় নিয়ে এবার মুখ্যমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীর কাছে চিঠি দিলেন বালুরঘাটের বিজেপি বিধায়ক অশোক লাহিড়ী। তিনি সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের দাবি করেছেন। সেই সঙ্গে তিনি আক্ষেপ করেছেন জেলার শিক্ষা ব্যবস্থার এমন বেহাল দশা নিয়ে।
সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়ে অশোক বলেন, ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে মুখ্যমন্ত্রী জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা করেছিলেন। পরবর্তীতে ২ কোটি ৭১ লক্ষ টাকা ব্যয় করে বালুরঘাটের মাহিনগর এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাচীর নির্মাণ হয়েছে। পূর্ত দপ্তর থেকে ২ কোটি ২৭ লক্ষ টাকার প্রকল্প অনুমোদন করা হয়। তারপরও ন্যূনতম পরিষেবা নেই। ৭ বছর আগে যে আগ্রহের সঙ্গে এই বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা হয়েছিল, অন্যান্য পরিষেবাও চালু করা হোক। মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে শিক্ষামন্ত্রীকে প্রতিলিপি পাঠিয়েছি।
তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র ও দক্ষিণ দিনাজপুরের নেতা অম্বরিশ সরকার বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যা নিয়ে আমরা আগেই জেলাশাসকের দ্বারস্থ হয়েছি। বিষয়টি সর্বোচ্চ নেত্রীকেও জানিয়েছি। খুব তাড়াতাড়ি এই সমস্যাগুলি নিয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। আমাদের বিধায়ক সেসব বুঝতে পেরে ঘোলা জলে মাছ ধরার চেষ্টা করছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, উপাচার্যের পাশাপাশি রেজিস্ট্রার এবং কন্ট্রোলারের পাত্তা নেই। এক্তিয়ার অনুযায়ী বিভিন্ন কাজ সামলাচ্ছিলেন ফিনান্স অফিসার উজ্বল দাস। তিনিও চলতি মাসে অবসর নিচ্ছেন। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে আশঙ্কায় পড়ুয়ারা। ২৩ জানুয়ারি থেকে ফর্ম ফিল আপ শুরু হতে চলেছে। সেক্ষেত্রে ওয়েবসাইট বন্ধ হয়ে থাকলে সমস্যায় পড়বেন পড়ুয়ারা। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, ইন্টারনেট বন্ধ হলেও ফর্ম ফিল আপ যাতে করা যায়, তার বিকল্প ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ফিনান্স অফিসার বলেন, উপাচার্য না থাকায় কোনও বিলই মেটানো যায়নি। আশা করছি তিনি যোগ দিলে সব সমস্যা মিটে যাবে।
গত ১১ ডিসেম্বর উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক প্রণব ঘোষকে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ করেছিল উচ্চশিক্ষা দপ্তর। এক মাস পেরিয়ে গেলেও তিনি যোগ দেননি। কবে আসবেন সেই উত্তর জানা নেই কর্তৃপক্ষেরও। সবমিলিয়ে ধোঁয়াশায় ঘেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবিষ্যত্।