নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা ও রায়গঞ্জ: বাংলাদেশে পালানোর আগেই গোয়ালপোখরের পাঞ্জিপাড়ায় পুলিসের সঙ্গে এনকাউন্টারে মৃত্যু হয় সাজ্জাকের। তার বাংলাদেশি সঙ্গী আব্দুল হুসেন ওরফে আবালকে করণদিঘির রসখোয়া থেকে গ্রেপ্তার করেছে রায়গঞ্জের পুলিস। তার মাথার দাম ছিল দু’লক্ষ টাকা। পুলিসের সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে সাজ্জাকের মৃত্যুর পর আব্দুল বাংলাদেশে পালানোর জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছিল। ওপারে যাওয়ার জন্য এক ধুরের সঙ্গে যোগাযোগ করতেই তাকে ট্র্যাক করে ফেলে পুলিস। এরপরই পুলিসের টিম সেখানে গিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে।
বুধবার ইসলামপুর আদালত থেকে রায়গঞ্জ জেলে আনার সময় গোয়ালপোখর থানার পাঞ্জিপাড়ায় দুই পুলিস কর্মীকে গুলি করে পালায় গ্যাংস্টার সাজ্জাক আলম। সাজ্জাককে আদালতে আগ্নেয়াস্ত্র সরবরাহ করেছিল তার বাংলাদেশি সঙ্গী আব্দুল। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলে থাকার সময় দু’জনের পরিচয়। আব্দুল জামিন পাওয়ার পর তাকে পুশ ব্যাক করে বাংলাদেশের ঠাকুরনগরের বেলিয়াডাঙ্গিতে পাঠানো হয়। মাস দুই আগে সে ফের করণদিঘিতে ফিরে আসে। জেলে গিয়ে দেখা করে সাজ্জাকের সঙ্গে। তখনই পরিকল্পনা করে কীভাবে সাজ্জাককে জেল থেকে বের করে আনা হবে। গ্যাংস্টার ছাড়া পাওয়ার পর অস্ত্র ও মাদক ব্যবসার পরিকল্পনা ছিল তাদের। পাশাপাশি সুপারি নিয়ে খুনেরও ছক কষেছিল তারা। সাজ্জাককে আদালতে হাজির করানোর তারিখ জেনে নিয়ে আব্দুল আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হাজির হয়ে যায় ইসলামপুর আদালতে। এই অস্ত্র সে তার শাগরেদ হজরতের মাধ্যমে পাঠায় সাজ্জাকের কাছে।
হজরতকে জেরা করে পুলিস জানতে পারে, সাজ্জাক পালানোর পর গোয়ালপোখর ছাড়ে আব্দুলও। পরে সীমান্ত লাগোয়া এলাকায় দেখা করে সাজ্জাকের সঙ্গে। সেখানকার একটি বাড়িতে দু’জনে আশ্রয় নিয়েছিল। সাজ্জাক কিচকটোলায় পুলিসের ঘেরাটোপে পড়ার ঘণ্টা চারেক আগেও তার সঙ্গে ছিল আব্দুল। কোনও কারণে সাজ্জাকের এই বাংলাদেশি সঙ্গী ডেরা বদলায়। যে কারণে তাকে পাওয়া যায়নি। পুলিস সূত্রে খবর, গ্যাংস্টার সাজ্জাক এনকাউন্টারে মারা যাওয়ার পর আব্দুল মরিয়া হয়ে ওঠে বাংলাদেশে পালানোর জন্য। কিন্তু তার ছবি বিভিন্ন জায়গায় পুলিস ছড়িয়ে দেওয়ায় সীমান্ত পারাপারের ঝুঁকি নেয়নি সে। এই অবস্থায় সীমান্ত পার করানোর জন্য এক ধুরের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করে। তার নতুন নম্বর সোর্স মারফত পৌঁছে যায় পুলিসের কাছে। টাওয়ার লোকেশন ধরে জানা যায়, আব্দুলের অবস্থান করণদিঘির রসখোয়ায়। খবর পেয়েই সেখানে পৌঁছে যায় পুলিসের টিম এবং গ্রেপ্তার করে তাকে। কোথা থেকে সে অস্ত্র পেয়েছিল, তা জেরা করে জানার চেষ্টা চলছে।