• অনলাইন আধার যাচাই করেই বিয়ের রেজিস্ট্রি, বিদেশে বসেও আবেদন, উদ্যোগী রাজ্য
    বর্তমান | ২১ জানুয়ারি ২০২৫
  • বাপ্পাদিত্য রায়চৌধুরী, কলকাতা: বিয়ের রেজিস্ট্রিতে বায়োমেট্রিক ব্যবস্থা চালু হয়েছে আগেই। আঙুলের ছাপ দিয়ে বিয়ের পিঁড়িতে বসছেন বর-কনে। আঙুলের ছাপ নেওয়া হচ্ছে সাক্ষীদেরও। এবার বিয়ের ক্ষেত্রে আরও একধাপ এগচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। আধার যাচাই হতে চলেছে বাধ্যতামূলক। অনলাইন আধার যাচাই করেই হবে বিয়ের রেজিস্ট্রি। অর্থাৎ, বায়োমেট্রিক ব্যবস্থায় আঙুলের ছাপ নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে চিহ্নিত করবে আধার কর্তৃপক্ষ। এতে মূলত তিনটি বড় সুবিধা মিলবে বলে দাবি সরকারি আধিকারিকদের। প্রথমত, কোনওভাবেই পরিচয় ভাঁড়িয়ে বিয়ে করতে পারবেন না কেউ। দ্বিতীয়ত, একবার বিয়ের পর, আইনিভাবে বিচ্ছেদ না হলে কোনওভাবেই দ্বিতীয়বার ছাঁদনাতলায় দাঁড়ানো যাবে না। আর তৃতীয়ত, যে কোনও জায়গা থেকেই বায়োমেট্রিকের মাধ্যমে বিয়ের রেজিস্ট্রির নোটিস দিতে পারবেন পাত্র-পাত্রী। এমনকী বিদেশে বসেও করা যাবে সেই আবেদন। এখন যেখানে ম্যারেজ রেজিস্ট্রারের কাছে পৌঁছে উভয়পক্ষকে সইসাবুদ করতে হয়, সেই ঝঞ্ঝাট থেকে মুক্তি মিলবে। আগামী অর্থবর্ষ, অর্থাৎ ২০২৫-২৬ সালের গোড়া থেকে নয়া নিয়ম চালু করার পথে এগতে চাইছে আইন দপ্তর। তার জন্য তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রকের ছাড়পত্র মিলেছে। আধার সংক্রান্ত বিষয়গুলি ওই মন্ত্রকের আওতায় পড়ে।


    আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, বহু পাত্র-পাত্রী আছেন, যাঁরা কর্মসূত্রে বাইরে থাকেন। তাঁদের বিয়ের নোটিসে সই করতে কাজ সামলে, ছুটি নিতে হয়। পাড়ি দিতে হয় অনেকটা পথ। বর্তমানে এটা একটা বড় সমস্যা। নয়া পরিষেবা চালু হল, বেশি দূরত্বে থাকা পাত্রপাত্রীদের শুধু বিয়ের নোটিসে সই করার জন্য এক জায়গায় আসার দরকার হবে না। রেজিস্ট্রি বা আইনি বিয়েতে উপস্থিত থাকলেই হবে।   


    আবার বিগত বছরগুলিতে পাত্র বা পাত্রীর ভুয়ো স্বাক্ষরের উপর ভিত্তি করে বিয়ের রেজিস্ট্রি হয়ে যাওয়ার মতো বহু ঘটনা সামনে এসেছে। এসব সমস্যা এড়াতেই বায়োমেট্রিক ব্যবস্থা চালু হয়েছে রাজ্যে। বর্তমানে রাজ্যজুড়ে হাজার খানেক ম্যারেজ রেজিস্ট্রারের কাছে রয়েছে বায়োমেট্রিক মেশিন। বিয়ের আবেদনের সময় ওই যন্ত্রে আঙুলের ছাপ নিয়ে নিচ্ছেন ম্যারেজ অফিসাররা। সরকারের তথ্যভাণ্ডারে হবু দম্পতির বায়োমেট্রিক সংক্রান্ত তথ্য বা ‘ডেটা’ জমা হচ্ছে। ফলে অনেকটাই রুখে দেওয়া গিয়েছে অবৈধ বিয়ের ‘কারবার’। এরপরও কেন আধার যাচাই করার দরকার পড়ছে? আইন দপ্তরের এক আধিকারিকের কথায়, বায়োমেট্রিকের মাধ্যমে আধার যাচাই করা হলে, কোথাও কোনও ফাঁকফোঁকর থাকবে না। অর্থাৎ বিয়ে চ্যালেঞ্জ করারই প্রয়োজন নেই। দ্বিতীয়বার অবৈধভাবে বিয়েতে আর আধার ব্যবহার করা যাবে না। স্পেশাল ম্যারেজ অ্যাক্ট অনুযায়ী, বিয়ের রেজিস্ট্রির ৩০ দিন আগে আবেদন করতে হয়। হিন্দু ম্যারেজ অ্যাক্টে তা করা যায় সাত দিন আগে। এবার পাত্র বা পাত্রীর কাছে বায়োমেট্রিক ভিডাইস থাকলে, এই আবেদন রেজিস্ট্রারের কাছে না গিয়েও করা যাবে। গোটা প্রক্রিয়াটি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে প্রশাসনিক কাজ চলছে। তা শেষ হলেই চালু হবে নয়া নিয়ম।
  • Link to this news (বর্তমান)