• আগুনের উৎসস্থল কোথায়, অলিগলি দিয়ে দমকলকে পথ দেখালেন স্থানীয়রা
    বর্তমান | ২১ জানুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: সোমবার পার্ক সার্কাসে রেললাইন লাগোয়া বস্তিতে একটি কারখানায় আগুন লাগে। মুহূর্তের মধ্যে সেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের কারখানায়। পিচবোর্ড, প্লাস্টিক এবং কেক সহ মোট তিনটি কারখানা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয় লাগোয়া ঘরগুলি।


     ঘিঞ্জি এলাকায় কারখানা থাকায় স্বাভাবিকভাবেই এদিন আগুন নেভাতে গিয়ে কালঘাম ছোটে দমকল কর্মীদের। স্থানীয়দের সাহায্যে অলিগলি দিয়ে জলের পাইপ নিয়ে গিয়ে আগুন নেভাতে হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনা ফের প্রশ্ন তুলে দিয়েছে, কীভাবে এমন ঘন বসতিপূর্ণ এলাকায় অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা ছাড়াই কারখানা চলছে? খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, ঘরে ঘরে এমন কুটির শিল্প রয়েছে। এমন ছোট ছোট জায়গায় ব্যবসা চালালে সেখানে আগুন নেভানোর ক্ষেত্রে কী কী ব্যবস্থা নিতে হবে, সে বিষয়ে ওই এলাকার কারখানার কর্মী ও বাসিন্দাদের সচেতন করা দরকার।


    এদিন পার্ক সার্কাসের তিলজলা রোডে আগুন লাগার ঘটনাটি ঘটে। অগ্নিকাণ্ডের জেরে রেল চলাচলও বিঘ্নিত হয়। অগ্নিকাণ্ডের উৎসস্থলে পৌঁছতে বেগ পেতে হয় দমকল কর্মীদের। স্থানীয়দের সাহায্যে একটির সঙ্গে আরেকটি পাইপ যোগ করে জল নিয়ে যেতে হয় আগুনের উৎসস্থলে। এ প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, ভিতরে অনেকগুলি ফ্যাক্টরি ছিল বলে আগুন নেভাতে সময় লেগেছে। দমকল কর্মীরা খুব ভালো কাজ করেছেন। বিশেষ করে স্থানীয় বাসিন্দারা যথেষ্ট সাহায্য করেছেন দমকলকে। যেহেতু কারখানাটি একদম ভিতরের দিকে, তাই আগুনের উৎসস্থল কোথায়, সেখানে কীভাবে জল নিয়ে যাওয়া যাবে, সবটাই স্থানীয় লোকজন গাইড করেছেন দমকল কর্মীদের।


    এখানে এর আগেও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছিল। যে কারখানায় আগুন লেগেছে, সেখানে কোনও অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা ছিল না বলে জানা গিয়েছে। এ প্রসঙ্গে ফিরহাদ হাকিম বলেন, ফায়ার ফাইটিং সিস্টেম ছিল কি না, তা তদন্ত সাপেক্ষ। দমকল সেটা দেখবে। তবে, এখানে গরিব মানুষের বসবাস। আর্থ-সামাজিক দিক থেকে পিছিয়ে পড়া শ্রেণি থাকে। এখানে কুটির শিল্পের মতো ছোট ছোট কারখানা রয়েছে। যেগুলি মানুষ মূলত ঘরে বা ঘরের পাশে করতে পারে। গায়ের জোরে তাঁদের তুলে দেওয়া উচিত নয়। এর সঙ্গে গরিব মানুষের উপার্জন জড়িত। 


    আগামী দিনে এই ধরনের ঘটনা কীভাবে এড়ানো যায়, সেটা দেখা দরকার। তাঁদের জন্য ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প দপ্তরের তরফ থেকে যদি সচেতনতা শিবির করা যায়, তা দেখতে হবে। যাতে আগুন না লাগে কিংবা আগুন লাগলে কীভাবে প্রতিরোধ করা যায়, সেই বিষয়ে তাঁদের প্রশিক্ষণ দেওয়া যেতে পারে।
  • Link to this news (বর্তমান)