এই সময়, হাওড়া: ডুমুরজলা স্টেডিয়াম সংলগ্ন শৈলেন মান্না সরণির খারাপ রাস্তা নিয়ে জেলাশাসককে কার্যত ধমক দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার ডুমুরজলা হেলিপ্যাড থেকে হেলিকপ্টারে মুর্শিদাবাদ উড়ে যাওয়ার সময় জেলাশাসক দীপাপ্রিয়া পি–কে মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন করেন, ‘দেড় মাস আগে বলা সত্ত্বেও কেন শৈলেন মান্না সরণির দু’ধারে তাঁর নামে সাইনবোর্ড লাগানো হয়নি? তা হলে মানুষ এই রাস্তা সম্পর্কে জানবেন কী করে?’
এখানেই শেষ নয়। মুখ্যমন্ত্রী জানতে চান, এত বার বলা সত্ত্বেও কেন রাস্তা পরিষ্কার এবং মেরামতির কাজ হয়নি? উল্লেখ্য, বড়দিনের আগেই মুখ্যমন্ত্রী ড্রেনেজ ক্যানাল রোডের নাম পরিবর্তন করে শৈলেন মান্না সরণি রাখেন। এর পর তিনি জেলাশাসককে নির্দেশ দিয়েছিলেন, ওই রাস্তার দু’ধারে সৌন্দর্যায়নের পাশাপাশি শৈলেন মান্নার নামে সাইনবোর্ড লাগানো হোক। এ দিন হেলিপ্যাডে আসার পথে তিনি রাস্তার দু’ধারে সাইনবোর্ড দেখতে না পেয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন।
মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন রাজ্যের মুখ্য সচিব মনোজ পন্থ এবং হাওড়া সিটি পুলিশের কমিশনার প্রবীণ কুমার ত্রিপাঠী। জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপার, দু’জনেই দ্রুত কাজ শেষ করা হবে বলে মুখ্যমন্ত্রীকে আশ্বাস দেন। মুখ্যমন্ত্রীর এই ধমকের পরেই দেখা যায়, ঘণ্টাখানেকের মধ্যে ডুমুরজলা স্টেডিয়ামের উল্টো দিকে শৈলেন মান্না সরণির পাশে যে আবর্জনা পড়েছিল, পুরসভার সাফাইকর্মীরা তা পরিষ্কার করার কাজ শুরু করে দিয়েছেন।
মুখ্যমন্ত্রী হেলিপ্যাড ছাড়ার কিছুক্ষণ পরেই ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন হাওড়া পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান সুজয় চক্রবর্তী ও পুরসভার পার্ক ও সৌন্দর্যায়ন বিভাগের কর্মীরা। পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারদের নিয়ে তিনি স্টেডিয়ামের উল্টোদিকের রাস্তা এবং তার আশপাশের অংশ পরিদর্শন করেন। মুখ্যমন্ত্রী যে রাস্তা দিয়ে হেলিপ্যাডে প্রবেশ করেন, তার ঠিক উল্টোদিকে একটি মজে যাওয়া জলা আবর্জনায় ভরে ছিল। ওই এলাকাটি চিহ্নিত করে সেখানে চিলড্রেন্স পার্ক, সবুজ ঘাস এবং ওয়াটার ফাউন্টেন তৈরি করার পরিকল্পনা হয়। তার পাশে যে অংশে শৈলেন মান্না সরণি নামকরণের ফলক লাগানো হয়েছিল, একটি ইলেকট্রিক্যাল গ্লো সাইনবোর্ড তৈরির কাজও শুরু হয়ে যায়। কর্মীরা জানান, রাতেই বোর্ড লাগিয়ে দেওয়া হবে।
তবে এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, শৈলেন মান্না সরণির পুরো রাস্তাটাই খারাপ। মুখ্যমন্ত্রী যে অংশ দিয়ে হেলিপ্যাডে ঢোকেন, তার আশপাশে রাস্তার ফুটপাথ ভাঙা, ড্রেন খোলা। ফলে পথচলতি মানুষের সেই খোলা ড্রেনে পড়ে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। পুরসভা এখন শুধুমাত্র মুখ্যমন্ত্রীর যাতায়াতের অংশের কাজ শুরু করেছে। কিন্তু গোটা রাস্তার দিকেই নজর দেওয়া দরকার।
সুজয় বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরেই এলাকার সৌন্দর্যায়ন ও প্রয়োজনীয় মেরামতির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। এ দিন রুটিন ভিজ়িট করা হয়। পুরসভার পক্ষ থেকে যেমন সাফাই ও সৌন্দর্যায়ন করা হবে, তেমনই পূর্ত বিভাগ রাস্তা তৈরি, নামাঙ্কিত বোর্ড লাগানোর কাজগুলি করবে।’