এই সময়, বর্ধমান: চিকিৎসকের নির্দেশ না মেনে প্রসূতিকে ‘ভেজাল’ ওষুধ দেওয়ার অভিযোগ উঠল বর্ধমানের একটি নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে। শবনম সাহানি নামে ওই প্রসূতির পরিবারের অভিযোগ, ঘটনার প্রতিবাদ করলে টাকা নিয়ে বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয় নার্সিংহোমের তরফে। বাবুরবাগ ইন্দ্রপ্রস্থ এলাকার ওই নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে রবিবার বর্ধমান থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন প্রসূতির স্বামী মহম্মদ সহিদুল ইসলাম। ডিএসপি সুব্রত চক্রবর্তী বলেন, ‘অভিযোগের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু হয়েছে। তথ্যপ্রমাণ খতিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
অভিযোগপত্রে জানানো হয়েছে, দেওয়ানদিঘি থানা এলাকার কলিগ্রামের বাসিন্দা শবনমকে গত ১৬ জানুয়ারি ওই নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়। ও দিন রাতেই এক কন্যাসন্তান প্রসব করেন তিনি। তার দু’দিনের মাথায় ১৮ তারিখ আচমকা গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন শবনম। নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ তাঁকে আইসিইউ–তে স্থানান্তরিত করেন। তাঁর পরিবারের অভিযোগ, শবনমের চিকিৎসক অভয়চন্দ্র নাগের দেওয়া প্রেসক্রিপশন পরীক্ষা করে দেখা যায়, সেই প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী কোনও ওষুধ দেওয়া হয়নি তাঁকে। ভেজাল ওষুধ দেওয়া হয়েছে।
সহিদুল বলেন, ‘ভেজাল ওষুধের জন্যই আমার স্ত্রী গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে। বিষয়টি হাতেনাতে ধরে ফেলার পর, ওঁরা (নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ) আমাদের টাকা নিয়ে মিটমাট করে নেওয়ার কথা বলেন। রাজি না হওয়ায় আমাদের বের করে দেওয়া হয়। এর পর আর কোনও ঝুঁকি না নিয়ে স্ত্রী ও সদ্যোজাত কন্যাকে নিয়ে অন্য একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করি। প্রায় ৬০ হাজার টাকার বিল দেয় ওই নার্সিংহোম। সবটাই মিটিয়ে দিয়েছি। এখন স্ত্রী ও কন্যা দু’জনেই সুস্থ রয়েছে।’
সহিদুলের বাবা মহম্মদ শরিফ মিঞার বক্তব্য, ‘ওই নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে সিএমওএইচ, পুলিশ, জেলা পরিষদের স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ থেকে রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর সর্বত্র প্রমাণ সমেত অভিযোগ জানিয়েছি। প্রয়োজনে এ বার আদালতে যাব। এর শেষ দেখে ছাড়ব।’ জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জয়রাম হেমব্রম বলেন, ‘আমরা সমস্ত রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছি। খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এ দিকে, সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে ওই নার্সিংহোমের ম্যানেজার সোহরাব হোসেন বলেন, ‘এখানে সিসিটিভি ক্যামেরা রয়েছে। ওঁদের ধাক্কা দিয়ে বের করা বা টাকা নেওয়ার কথা বলা হয়ে থাকলে সেটা সেখানেই ধরা পড়বে। ওষুধের ব্যাপারে কিছু বলতে পারব না। সেটা ডাক্তার বা নার্সরা বলতে পারবেন।’