এই সময়, গুড়াপ ও কুলতলি: আরজি করে নিহত চিকিৎসক তরুণীর ধর্ষণ ও খুনে মূল অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়ের ফাঁসির সাজা না হওয়ায় হতাশ আরও দু’টি পরিবার। গত বছর অগস্টে আরজি করে নারকীয় ঘটনার পরে দুই প্রতিবেশীর ধর্ষণের বলি হয়ে প্রাণ দিতে হয়েছিল দুই শিশুকন্যাকে। গুড়াপ ও কুলতলির সেই দু'টি ঘটনাতেই ফাঁসির সাজা হয়েছে অভিযুক্তদের। কিন্তু দীর্ঘ আইনি যুদ্ধ ও সিবিআই তদন্তের পরও আরজি করের নির্যাতিতার হত্যাকারী ও ধর্ষকের যাবজ্জীবন সাজা মেনে নিতে পারছেন না সন্তানহারা দুই বাবা–মা।
গুড়াপের পাঁচ বছরের শিশুকন্যাকে চিপসের লোভ দেখিয়ে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনার ৫৪ দিনের মাথায় গত সপ্তাহেই ফাঁসির সাজা শুনেছে মূল আসামি অশোক সিং। সেই শিশুর বাবা এ দিন বলেন, ‘আরজি করের ঘটনায় আমরাও মোমবাতি নিয়ে প্রতিবাদ মিছিলে সামিল হয়ে ছিলাম। কিন্তু আমার সঙ্গেও যে একই ঘটনা ঘটবে সেটা স্বপ্নেও কল্পনা করিনি। সোমবার সকাল থেকে একবুক আশা নিয়ে টিভির সামনে বসেছিলাম। কিন্তু সাজা শুনে আমরা হতাশ।’
তিনি বলেন, ‘আমরা মৃত চিকিৎসকের বাবা–মাকে বলতে চাই আপনারাও সঞ্জয়কে সর্বোচ্চ সাজা দেওয়ার জন্য উচ্চ আদালতে আবেদন করুন।’ সন্তান হারানোর শোক এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেননি শিশুটির মা।
তাঁর কথায়, ‘আমার মেয়েকে যে ভাবে কষ্ট দিয়ে নির্যাতন করে খুন করেছে সেই অশোককে ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়েছে আদালত। তাতে আমার মেয়ের আত্মা শান্তি পেয়েছে। সঞ্জয়ের ফাঁসি হলে মৃত তরুণীর আত্মাও শান্তি পেত।’ ওই গ্রামের বাসিন্দারাও এ দিনের রায়ের পর হতাশ অনেকেই।
অন্যদিকে, শিয়লদহ আদালতের রায়ে অখুশি কুলতলির নির্যাতিতা ছাত্রীর বাবা। গত ৪ অক্টোবর কুলতলির কৃপাখালির চতুর্থ শ্রেণির ওই ছাত্রী জয়নগর থানার মহিষমারিতে পড়তে গিয়ে নিখোঁজ হয়ে যায়। রাতেই জয়নগর থানার পুলিশ সিসিটিভি ক্যামেরা এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে গ্রেপ্তার করে মুস্তাকিম সর্দার নামের এক যুবককে। কৃপাখালি গ্রামের জলাশয় থেকে নাবালিকার রক্তাক্ত মৃতদেহটি উদ্ধার করা হয়। সেই ঘটনায় ৬১ দিনের মাথায় বারুইপুরের আদালত মুস্তাকিম সর্দারকে ফাঁসির নির্দেশ দেয়।