এই সময়: সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মতো প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতিতে ইডির মামলায় নিম্ন আদালতে চার্জ গঠন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে। এর পরে সোমবার এই মামলায় জামিন পেলেন জেলবন্দি রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। দশ লক্ষ টাকা ব্যক্তিগত বন্ডে জামিনের নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতায় বিচারভবনে ইডির বিশেষ আদালতের বিচারক শুভেন্দু সাহা।
তবে এখনই জেল থেকে বেরোতে পারছেন না পার্থ। কারণ, নিয়োগ দুর্নীতিতে সিবিআইয়ের দায়ের মামলায় তিনি এখনও জামিন পাননি। ফলে তাঁকে আপাতত গরাদের ও পারেই থাকতে হবে। এ দিন এই মামলায় জামিন পেলেও প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে আচমকা অসুস্থ হয়ে পড়েন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী। সূত্রের খবর, শ্বাসকষ্টের সমস্যা হওয়ায় তাঁকে জরুরি ভিত্তিতে নিয়ে যাওয়া হয় এসএসকেএম হাসপাতালে।
সোমবার ইডির বিশেষ আদালতে জামিনের আবেদন করেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আইনজীবী বিপ্লব গোস্বামী। তিনি জানান, দীর্ঘ সময় ধরে তিনি জেলবন্দি। এই মামলায় তাঁর যোগ নেই। তাঁকে জামিন দেওয়া হোক। এই মামলায় পার্থর ঘনিষ্ঠ সহযোগিণী বলে পরিচিত অর্পিতা মুখোপাধ্যায়, কুন্তল ঘোষ, তাপস মণ্ডল, মানিক ভট্টাচার্য, মানিকের ছেলে সৌভিক ভট্টাচার্য-সহ অনেকে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। যদিও ইডির তরফে এই যুক্তির বিরোধিতা করা হয়। বিচারক শুভেন্দু সাহা অবশ্য দু’পক্ষের সওয়াল-জবাব শুনে দশ লক্ষ টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে পার্থর জামিন মঞ্জুর করেন।
আদালত সূত্রে খবর, জামিনে বেশ কিছু শর্ত দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, ট্রায়াল চলাকালীন পার্থ বিধায়ক ছাড়া অন্য কোনও গুরুত্বপূর্ণ সরকারি পদে থাকতে পারবেন না। আদালতের কাছে পাসপোর্ট জমা রাখতে হবে। আদালতের নির্দেশ ছাড়া কলকাতা ছেড়ে তিনি বাইরে যেতে পারবেন না।
প্রতি শুনানিতে তাঁকে হাজিরা দিতে হবে। তবে ট্রায়ালে যদি তাঁর প্রত্যক্ষ যোগ মেলে, তা হলে তাঁর জামিন খারিজ হয়ে যেতে পারে। আদালত জানিয়েছে, জামিন পাওয়ার পরে পার্থ কোনও সাক্ষীকে প্রভাবিত বা হুমকি দিতে পারবেন না। যদি তিনি হুমকি দেন বা প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করেন, তা হলে তাঁর জামিন খারিজ হয়ে যাবে।
কোনও অসামাজিক কাজে লিপ্ত হতে পারবেন না পার্থ। তদন্তকারী অফিসারের কাছে ফোন নম্বর দিয়ে রাখতে হবে তাঁকে, যাতে কোনও দরকারে তদন্তকারী অফিসার যোগাযোগ করতে পারেন। প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ২০২২-এর ২৩ জুলাই পার্থ গ্রেপ্তার হন ইডির হাতে। পরে তাঁকে সিবিআই গ্রেপ্তার করে।