এই সময়, শিলিগুড়ি: বিয়ের জন্য চাপ দেওয়ায় প্রেমিকার ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ছবি ভাইরাল করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল এক যুবকের বিরুদ্ধে। সেই অপমানে গায়ে আগুন দিয়ে আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করলেন তরুণী। বর্তমানে ৮০ শতাংশ দগ্ধ অবস্থায় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন তিনি। গোটা বিষয়টি জানিয়ে শিলিগুড়ির প্রধাননগর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন তরুণীর বাবা। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে প্রধাননগর থানার পুলিশ। ইতিমধ্যে অভিযুক্ত রাজেশ রায়ের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে।
শিলিগুড়ির ডেপুটি পুলিশ কমিশনার বিশ্বচাঁদ ঠাকুরের বক্তব্য, ‘অভিযোগ হওয়ার পরে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে।’
শিলিগুড়ির চম্পাসারির বাসিন্দা ওই তরুণীর সঙ্গে রাজেশ রায়ের দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তরুণীর বয়ান অনুযায়ী, বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে রাজেশ একাধিকবার তাঁর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক তৈরি করে। এরপর বিয়ের কথা বললেই পিছিয়ে যেতে থাকেন। এমনকী, একবার প্রাণনাশের হুমকিও দেন বলে অভিযোগ। এরপরেও ওই তরুণী বিয়ের কথা বলায় অভিযুক্ত প্রেমিকার একটি দুর্বল মুহূর্তের ছবি ইনস্টাগ্রামে ভাইরাল করে দেন বলে পুলিশ জানতে পেরেছে।
ওই ছবি দেখিয়ে তরুণীকে বার বার ব্ল্যাকমেল করতে থাকেন অভিযুক্ত। বিয়ের জন্য আর চাপ দিলে ছবি ফেসবুক এবং অন্যান্য সামাজিক মাধ্যমেও ছড়িয়ে দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। শেষ পর্যন্ত কোনও পথ না পেয়ে গত ১৬ তারিখ নিজের বাড়িতে স্টোভ থেকে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেন ওই তরুণী। সে সময়ে বাড়িতে কেউ ছিলেন না। তাঁর চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন।
স্থানীয়রাই আগুন নিভিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে নিয়ে যায়। তবে শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় হাসপাতাল থেকে তাঁকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে রেফার করা হয়। তখন থেকেই তরুণীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে।
এরপর তরুণীর বাবা শিলিগুড়ির প্রধাননগর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে মেডিক্যালে গিয়ে তরুণীর বয়ান রেকর্ড করেছেন ঘটনার তদন্তকারী আধিকারিক। বাবার বক্তব্য,‘আমার মেয়ের সঙ্গে দীর্ঘদিনের সম্পর্ক ছিল ওই যুবকের। বাড়িতেও সবাই জানত। যাওয়া আসাও ছিল। মেয়ের জীবন শেষ করে বিয়ে করতে চাইছিল না। চাপ দিতেই ওর আজেবাজে ছবি ভাইরাল করে দেয়। আমরা অভিযুক্তের কড়া শাস্তি দাবি করছি।’