বহু প্রতীক্ষিত ‘ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান’ প্রকল্পের শিলান্যাস হতে চলেছে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসেই। ২০২৮ সালের মার্চের মধ্যেই এর কাজ শেষ করা হবে। মঙ্গলবার (২২ জানুয়ারি) মনিটরিং কমিটির প্রথম বৈঠক শেষে এমনটাই জানালেন ঘাটালের সাংসদ দেব ওরফে দীপক অধিকারী। এর জন্য দলমত নির্বিশেষে সকলের সাহায্য প্রার্থনা করলেন সাংসদ দেব।
দেব বলেন, ‘শুধু টাকা বরাদ্দ হলেই ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান সম্পূর্ণ করা যাবে না। এর জন্য সকলের সাহায্য প্রয়োজন। সে আমার দলের সাপোর্টার হোক বা অন্য দলের। আমি জানি প্রতিটি ঘাটালবাসী এই মাস্টার প্ল্যান চাইছেন। তাই আমাকে ভালোবাসুন বা না বাসুন, আপনাদের সহযোগিতা লাগবে। যেখানে আমাদের জমি প্রয়োজন, সেখানে আপনাদেরকে এগিয়ে আসতে হবে। আমরা আগামীকাল থেকেই মাঠে নেমে পড়ব। আপনাদের বাড়িতে বাড়িতে যাব। আপনাদের কথা যেমন আমরা শুনব, সেই রকম আপনাদেরকেও বোঝাতে হবে এই ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের বিষয়ে।’
মঙ্গলবার ঘাটালের মহকুমা শাসকের কার্যালয়ে মাস্টার প্ল্যান নিয়ে মনিটরিং কমিটির প্রথম বৈঠক হয়। সাংসদ দেব ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জলসম্পদ অনুসন্ধান ও উন্নয়ন এবং সেচ দপ্তরের মন্ত্রী মানস রঞ্জন ভূঁইয়া, সেচ দপ্তরের প্রধান সচিব মণীশ জৈন, জেলাশাসক খুরশিদ আলী কাদেরী, পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার, বিধায়ক অজিত মাইতি, জেলাপরিষদের সভাধিপতি প্রতিভা মাইতি-সহ অন্যান্য প্রশাসনিক আধিকারিকরা।
প্রশাসনিক বৈঠক শেষে সেচ মন্ত্রী মানস রঞ্জন ভূঁইয়া জানান, ‘মুখ্যমন্ত্রীর নজরদারিতে ফেব্রুয়ারি মাস থেকেই শুরু হতে চলেছে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের কাজ। খুব শীঘ্রই মুখ্যমন্ত্রীকে আবেদন জানানো হবে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের কাজ শুরুর শুভ সূচনা করার জন্য।’ শুধু পশ্চিম মেদিনীপুর নয়, পূর্ব মেদিনীপুরের দুটি ব্লক-সহ মোট সাতটি ব্লক ও দুটি পৌর এলাকা নিয়ে ফেব্রুয়ারি মাসেই ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের কাজ শুরু করা হবে বলেও জানান তিনি।
মাস্টার প্ল্যানের জন্য জমিদাতাদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিয়ে তবেই কাজ শুরু করা হবে বলে জানান ঘাটালের সাংসদ দেব। তিনি বলেন, ‘রেগুলেটরগুলো সরকারি জায়গাতেই নির্মিত হবে। তবে পাম্পিং স্টেশনের জন্য কিছু জমি লাগবে। এ ছাড়াও নদীগুলি সংযুক্ত করা, নদীর পাড়ে ৫ মিটার উঁচু কংক্রিটের গার্ডওয়াল দেওয়া, অনেক কিছু পরিকল্পনা করা হয়েছে। এগুলি সার্থক করার জন্য আপনাদের সকলের সাহায্য প্রয়োজন।’
সেচ দপ্তরের প্রধান সচিব মণীশ জৈন বলেন, ‘সমস্ত পরিকল্পনাই প্রস্তুত করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী যে ভাবে বলবেন সে ভাবেই কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে।’
অন্য দিকে, ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানকে স্বাগত জানিয়েও নিজেদের আশঙ্কার কথা ব্যক্ত করেছেন শিলাবতী নদীর তীরের ব্যবসায়ীরা। তাঁদের একজন বলেছেন, ‘ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান রূপায়িত হবে, এর থেকে আনন্দের আর কি আছে। তবে আমাদের কথাটাও যেন একটু ভাবা হয়। আমরা যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে শিলাবতী নদীর তীরে ব্যবসা করছি, হঠাৎ করে আমাদের যেন তুলে না দেওয়া হয়। সব কিছু রক্ষা করে বা বিকল্প ব্যবস্থা করে যেন মাস্টার প্ল্যান করা হয়। যেমনটা আমাদের দিদি, মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন।’