সরকারি আধিকারিকের সই-সিল জাল করে মাদ্রাসায় শিক্ষক নিয়োগে প্রতারণার অভিযোগ, দায়ের এফআইআর...
আজকাল | ২২ জানুয়ারি ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: জেলা সংখ্যালঘু আধিকারিকের সই জাল করে মাদ্রাসার তিন শিক্ষককে নিয়োগের অভিযোগ। জেলা মাদ্রাসা বোর্ডের এক এসআই-সহ স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে তমলুক থানায় এফআইআর দায়ের হল। তবে এই নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি অভিযুক্ত এসআই। ঘটনা পূর্ব মেদিনীপুরের নরঘাটের।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা শাসকের দপ্তরের নামে ভুয়ো অর্ডার বের করে মাদ্রাসায় তিন শিক্ষক নিয়োগ করা হয় বলে অভিয়োগ। জেলার নরঘাটের এহেন ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। নরঘাটের এই মাদ্রাসা শিক্ষাকেন্দ্রে তিনজন শিক্ষা সম্প্রসারক ও সম্প্রসারিকা ২০১৮ সাল থেকে শিক্ষক-শিক্ষিকা হিসেবে কাজ করে আসছেন। ২০২২ সালে তাদের নিয়োগপত্র দেওয়ার জন্য ওই মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ জেলা সংখ্যালঘু দপ্তরের কাছে আবেদন জানান। এরপর গত বছর সেপ্টেম্বরের জেলা শাসকের দপ্তরের অধিন জেলা সংখ্যালঘু দপ্তরের জেলা আধিকারিকের সই করা একটি অর্ডার কপি তাদের হোয়াটসঅ্যাপে ওই দপ্তরের এক এসআই বিশ্বরূপ বিশ্বাস পাঠান বলে অভিযোগ। তারপর দীর্ঘদিন ধরে ওরিজিনাল কপি চেয়েও পাননি তারা।
সন্দেহ হতে ওই মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক তথা প্রধান সম্প্রসারিকা জেলা সংখ্যালঘু দপ্তরের জেলা আধিকারিকের সঙ্গে দেখা করতে এলে সেই সরকারি অফিসার বিপ্লব সরকারের চক্ষু চড়কগাছ। তিনি দেখেন তাঁর সই ও দপ্তরের স্ট্যাম্প জাল করা হয়েছে। তিনি পুরো ঘটনা জেলাশাসককে জানান। পরে জেলা প্রশাসনের নির্দেশে ওই ঘটনায় তমলুক থানায় এফআইআর করেছেন জেলা সংখ্যালঘু বিষয়ক অফিসার বিপ্লব সরকার।
এই মাদ্রাসা শিক্ষাকেন্দ্রে প্রায় ৭৫জন পড়ুয়া রয়েছে। শিক্ষা সম্প্রসারক ও সম্প্রসারিকা ৬ জন। গত ১৩ জানুয়ারি ওই মাদ্রাসা শিক্ষা কেন্দ্রের মুখ্য শিক্ষা সম্প্রসারক শেখ আকসার আহমেদ তমলুকে সংখ্যালঘু বিষয়ক অফিসে আসেন। তিনি জেলা আধিকারিক বিপ্লব সরকারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাঁর মাদ্রাসায় সদ্য নিযুক্ত তিনজন শিক্ষা সম্প্রসারক ও সম্প্রসারিকার অনুমোদনের আবেদন জানান। ২০২৪ সালে ২৬সেপ্টেম্বর এক নির্দেশিকার ভিত্তিতে ওই মাদ্রাসা শিক্ষা কেন্দ্রে সাবির মল্লিক, রেবতী সেনাপতি ও পম্পা সামন্ত নামে তিন জনকে নিয়োগ করা হয় বলে আফসার সাহেবের দাবি। ওই জেলা অফিসার অর্ডার কপি দেখেই হতবাক। জেলা থেকে এভাবে নিয়োগের অর্ডার হয় না। শিক্ষা সম্প্রসারক, সম্প্রসারিকা নিয়োগের অর্ডার রাজ্য থেকেই হয়। জানা গিয়েছে, জেলা সংখ্যালঘু বিষয়ক অফিসে বিশ্বরূপ বিশ্বাস নামে একজন এসআই (মাদ্রাসা) আছেন। মুখ্য শিক্ষা সম্প্রসারকের দাবি, তিনি বিশ্বরূপবাবুর কাছ থেকেই নিয়োগ সংক্রান্ত অর্ডার কপি পেয়েছেন। একই দাবি করেন এক শিক্ষকও। তবে জেলা সংখ্যালঘু দপ্তরের আধিকারিক দাবি করেছেন, তাঁর সিল ও সই জালিয়াতি করে ভুয়ো নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছে।
বিষয়টি জানাজানি হতেই জেলা প্রশাসনের নির্দেশে এসআই সহ আরও কয়েকজনের নামে তমলুক থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, জেলা সংখ্যালঘু দপ্তরের আধিকারিক যেখানে ভুয়ো নিয়োগপত্র বলে দাবি করছেন, তাহলে তাঁর সই, সিল জাল করল কে? এ নিয়ে অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে চায়নি অভিযুক্ত এসআই বিশ্বরূপ বিশ্বাস।