বিজেপি ‘এক নিশান, এক বিধান ও এক প্রধানের প্রবর্তক হলেও দলীয় আন্দোলনে নেতাদের মধ্যে ভিন্ন ভিন্ন নেতাদের মধ্যে ভিন্ন ভিন্ন লবি কার্যকর। এমনকি দলীয় কর্মসূচিতেও তাঁরা একমত নন। বরং একই আন্দোলনে নেতারা ঐক্যবদ্ধ না থেকে পৃথক পৃথক পথে চলেন। সম্প্রতি স্বাস্থ্য ভবন অভিযান ঘিরে বিজেপির রাজ্য নেতাদের বিভিন্ন কার্যকলাপ সেই বিতর্ককেই উস্কে দিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক মহলে জল্পনা তুঙ্গে। তাঁদের কথায়, দল এক কিন্তু লবি ভিন্ন ভিন্ন। রাজ্যের শীর্ষ পদে বসেও বঙ্গ বিজেপির নেতারা একে অপরকে এড়িয়ে চলছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা গিয়েছে, সম্প্রতি স্যালাইন বিতর্ক নিয়ে গেরুয়া শিবিরের স্বাস্থ্য ভবন অভিযান ও অবস্থান-বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘিরে একাধিক প্রশ্ন চিহ্ন দেখা দিয়েছে। এই অভিযানে বর্তমান রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের সঙ্গে প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ একই মঞ্চে ছিলেন। কিন্তু সেই অভিযানে ছিলেন না বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। যা নিয়ে দলের অন্দরে ব্যাপক চর্চা শুরু হয়েছে। বঙ্গ বিজেপির অন্তর্দ্বন্দ্ব নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। অথচ ঐদিন শুভেন্দু অধিকারীর অন্য কোনও গুরুত্বপূর্ণ কাজ ছিল না। অনেকের ধারনা, দলীয় অন্তর্দ্বন্দ্বের কারণে এই কর্মসূচি এড়িয়ে গিয়েছেন নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক তথা বিধানসভার বিরোধী দলনেতা।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রসূতি ও এক সদ্যোজাতের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। যা নিয়ে রাজ্যজুড়ে ব্যাপক রাজনৈতিক বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ করা হয়েছে, রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তর কর্তৃক নিষিদ্ধ স্যালাইনের ব্যবহারের জেরেই এই মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। প্রতিবাদ ও আন্দোলনে সামিল হয় রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সোমবার স্বাস্থ্যভবন অভিযানের ডাক দেয় সুকান্তের নেতৃত্বাধীন গেরুয়া শিবির। আন্দোলনে তাঁদের মূল দাবি ছিল স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগ।
এদিন সুকান্তের নেতৃত্বে স্বাস্থ্য ভবন ঘেরাওয়ের পরিকল্পনা করা হয়। কিন্তু পুলিশ সেই কর্মসূচির অনুমতি দেয়নি। রবিবার রাতেই বিজেপি কর্মীরা বাধার সম্মুখীন হন। তাঁদের মঞ্চ বাঁধতে দেয়নি পুলিশ। অবশেষে স্বাস্থ্য ভবনের সামনে অস্থায়ী মঞ্চ করে কর্মসূচি চালানো হয়। তবে সেই জমায়েত সফল হয়নি। খুব সামান্য সংখ্যক কর্মী সমর্থক এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন।