• জমিতে জল সরবরাহের জন্য সেচ-কর   নেওয়া বন্ধ হতেই দপ্তরের আর্থিক সাশ্রয়
    বর্তমান | ২২ জানুয়ারি ২০২৫
  • কৌশিক ঘোষ, কলকাতা: বড় বাঁধ বা জলাধার থেকে ছাড়া জল সেচখালের মাধ্যমে চাষের জমিতে সরবরাহের জন্য যে কর নেওয়া হতো, বছর দু’য়েক আগে তা নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে রাজ্য সরকার। এই সিদ্ধান্তের ফলে সরকারের আয় কিছুটা হলেও কমবে বলে মনে করা হচ্ছিল। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, এর ফলে বরং সরকারের আর্থিক সাশ্রয়ের সুযোগ তৈরি হয়েছে। কর নেওয়ার কাজে যুক্ত কর্মী ও আধিকারিকদের বেতন দিতে যে টাকা খরচ হতো, আয় হতো সেই তুলনায় কম। সেচদপ্তরে কর আদায়ের জন্য মোট ৯টি রাজস্ব ডিভিশন রয়েছে। যখন কর নেওয়া হতো, সেই সময় প্রতি ডিভিশনে কর্মী ও আধিকারিক মিলিয়ে ২০০ থেকে ২৫০ জন কাজ করতেন। তাঁদের বেতন দিতে ডিভিশন পিছু মাসে প্রায় আড়াই কোটি টাকা খরচ হতো। সেখানে কর আদায় হতো ২০ লক্ষ টাকারও কম। কর আদায় বন্ধ হওয়ার ফলে এই ডিভিশনগুলিতে কর্মী ও আধিকারিকদের প্রয়োজন আর বিশেষ নেই। তাই অবসর নেওয়ার পর সেই জায়গায় কাউকে নিয়োগ করার প্রয়োজন পড়ছে না। কর্মরত কর্মী ও আধিকারিকদের অন্যত্র কাজে লাগানোর বিষয়টি পর্যালোচনার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী আগামী দিনে দপ্তর ব্যবস্থা নেবে বলে সরকারি সূত্রে  জানা গিয়েছে। বিভাগীয় মন্ত্রী মানস ভুঁইঞা জানিয়েছেন, সরকারি সিদ্ধান্তে সেচ-কর নেওয়া বন্ধ হয়েছে। এখন রাজ্যের কোথাও তাঁর দপ্তর সেচ-কর নেয় না। এতে কৃষকদের সুবিধা হয়েছে। কর তুলে নেওয়ার ফলে প্রশাসনিক সুবিধা হয়েছে বলে মনে করেন রাজ্য সরকারি কর্মী সংগঠনের প্রবীণ নেতা মনোজ চক্রবর্তী। তাঁর দাবি, বাম সরকারের সময়ে কর নেওয়ার নিয়ম থাকলেও তা ঠিকমতো আদায় হতো না। 


    প্রসঙ্গত, কংসাবতী, ময়ূরাক্ষী, তিস্তা সহ বিভিন্ন নদীর বাঁধ থেকে সেচের জল সরবরাহ করা হয়। ডিভিসির বাঁধগুলি থেকে ছাড়া জল খালের মাধ্যমে বর্ধমান, হাওড়া, হুগলি, বাঁকুড়া প্রভৃতি জেলায় চাষের জমিতে পাঠানো হয়। সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, সেচের জলের জন্য ডিভিসিকে কোনও টাকা দিতে হয় না। বামফ্রন্ট সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে সেচের করের হারেও কোনও পরিবর্তন করেনি। প্রতি একরে মরশুম অনুযায়ী ১৫ থেকে ৫০ টাকা হারে কর নেওয়া হতো। রবি ও বোরো মরশুমে মূলত সেচখালের মাধ্যমে জমিতে জল সরবরাহ করা হয়। তবে বৃষ্টি কম হলে খরিফ মরশুমেও সেচের জলের প্রয়োজন হয়। 
  • Link to this news (বর্তমান)